ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখার ৭ তরিকা

ছবি: সংগৃহীত

বলা হয়ে থাকে মানুষ ফেসবুক যতটা পছন্দ করে, তার চেয়েও বেশি সময় কাটায় এখানে। সময় পরিক্রমায় বাংলাদেশে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির জনপ্রিয়তা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ব্যক্তিগত তথ্য রাখার ঝোঁক। একইসঙ্গে বেড়েছে এই পরিসরে ধোঁকাবাজির প্রবণতাও।

কিন্তু বেশিরভাগ ব্যবহারকারীর ফেসবুক সেটিংস সম্পর্কে বেশি ধারণা নেই। ফলে নানা কৌশলে সাইবার দুর্বৃত্তরা আপনার অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। এরপর তা কাজে লাগিয়ে অ্যাকাউন্ট হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

কখনো কি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট অপরিচিত কোনো ডিভাইস থেকে লগইন হয়েছে? আপনার অজান্তেই আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে কারও কাছে বার্তা চলে যাচ্ছে? এমন হলে ধরে নিতে হবে আপনার অ্যাকাউন্ট হয়তো হ্যাক হয়েছে।

কিন্তু কীভাবে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখা যায়? দেখে নেওয়া যাক কৌশলগুলো—

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড

অ্যাকাউন্টের সুরক্ষায় শক্তিশালী এবং অনন্য পাসওয়ার্ড পছন্দ করুন। ফেসবুকের পাসওয়ার্ড অন্য কোনো ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত নয় বা এটি কারও সঙ্গে শেয়ার করাও ঠিক না। পাসওয়ার্ড হতে হবে ছোটবড় অক্ষর ও নম্বর মিলিয়ে, অন্ততপক্ষে আট সংখ্যার, যা সহজে কেউ ধারণা করতে পারে না। যেমন—M0&FIQUr2024। কিছু পাসওয়ার্ড জেনারেটর ওয়েবসাইট আছে। সেখান থেকে ইউনিক পাসওয়ার্ড বানিয়ে নিতে পারেন।  

টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন 

আপনার অ্যাকাউন্ট আরও নিরাপদ করার জন্য অ্যাকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন। বাড়তি নিরাপত্তা স্তরটি একবার সেট করে নিলে অন্য কোনো কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন থেকে অপরিচিত কেউ যদি আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে চেষ্টা করে, তাহলে প্রতিবারই আপনাকে কোড বা লগইন নিশ্চিত করতে বলবে। এতে করে আপনার অ্যাকাউন্টে বাড়তি নিরাপত্তা যুক্ত হবে। তাই টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করুন। 

সঠিক প্রক্রিয়ায় লগইন-লগআউট

ফেসবুকের লগইন তথ্য ফেসবুক ছাড়া আর কোথাও প্রবেশ করানো যাবে না। অনেক সময় স্ক্যামাররা ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেসবুক আইডির লগইন ই-মেইল বা পাসওয়ার্ড চাইতে পারে। এমন ক্ষেত্রে আগে সেই ওয়েবসাইটের ইউআরএল দেখে নিন। ফেসবুকের বাইরে আরো কোনো শব্দ সেখানে থাকলে কিংবা কোনো ধরনের সন্দেহ হলেই www.facebook.com টাইপ করে অ্যাকাউন্ট লগইন করুন। যেখানে অনেক ব্যক্তি একই কম্পিউটার ব্যবহার করেন, সেখানে অবশ্যই ফেসবুক ব্যবহার শেষে লগআউট করুন। আপনি চাইলে এখনি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সেটিংস থেকে দেখে নিতে পারেন কোথায় এবং কোন ডিভাইসে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি লগইন করা আছে এবং আপনি সেসব ডিভাইস থেকে লগ আউট করে দিতে পারেন। 

সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক নয়

আপনি যাদের জানেন না বা বিশ্বাস করেন না, তাদের কাছ থেকে আসা লিংকগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক বা সন্দেহজনক ফাইল ওপেন করবেন না। সন্দেহজনক অ্যাপ ইনস্টল করা বা ব্রাউজার এক্সটেনশন করার বিষয়ে কোনো বন্ধু বা পরিচিত সংস্থার কাছ থেকে অনুরোধ এলেও সেগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। এর মধ্যে ফেসবুক, ব্যক্তিগত মেসেজ এবং ই-মেইলে পাঠানো লিংক অন্তর্ভুক্ত। মনে রাখবেন, ফেসবুক কোনো মেইলে কখনো আপনার পাসওয়ার্ড জানতে চাইবে না। 

বন্ধু বাছাইয়ে সতর্কতা

কখনোই এমন কাউকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ না করা, যাকে আপনি চেনেন না। এক্ষেত্রে হ্যাকাররা হয়তো মিথ্যা পরিচয়ে আপনার বন্ধু হয়ে আপনার টাইমলাইনে স্প্যাম ছড়াতে পারে, আপনাকে বিব্রতকর পোস্টে ট্যাগ করতে পারে বা হ্যাকিংয়ের মেসেজ পাঠাতে পারে। তাই সতর্কতার সঙ্গে আপনার পরিচিত এবং বিশ্বস্ত মানুষদের বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ করুন।  আপনার ফেসবুক টাইম লাইনটি পোষ্ট করার জন্য অনলই মি করে রাখুন। এতে করে আপনার কোনো বন্ধুও আপনার প্রোফাইলে বা টাইম লাইনে কিছু পোষ্ট করতে পারবে না আপনার রিভিউ ছাড়া। 

ভুয়া সফটওয়্যার থেকে সাবধান

কোন অথরাইজড প্ল্যাটফরম ছাড়া কোনো অ্যাপ্লিকেশন বা এপিআই ফাইল ডাউনলোড করবেন না। হ্যাকাররা বিভিন্ন চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনাকে ভুয়া সাইটে লগইন করে বলবে। কিন্তু সেসব ফাঁদে পা দিলেই আপনার গোপনীয়তা ফাঁস হবার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। ইদানীং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট নকল করে হ্যাকাররা এসব হ্যাকিং করে থাকে। তাই আপনার সাবধানতা আপনার হাতে। কোনো সাইটে প্রবেশের আগে ভালোভাবে যাচাই করুন।   

ট্রাস্টেড কন্টাক্ট সেট করুন

আপনার অ্যাকাউন্ট এবং পেজের অ্যাকসেস হারিয়ে যেতে পারে। তাই আগেভাগে আপনার বন্ধুদের ট্রাস্টেড কন্টাক্ট হিসেবে সেট করে রাখতে পারেন। আপনি যেন নিজের অ্যাকাউন্ট ফিরে পেতে পারেন, সে জন্য তারা আপনাকে ইউআরএলের মাধ্যমে একটি রিকভারি কোড পাঠাতে পারবে। 

Author : https://bangla.thedailystar.net/author/মুশফিকুর-রহমান

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

5h ago