আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

মারদাঙ্গা ম্যাক্সওয়েলের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে ডাচদের সামনে চারশর পাহাড়

গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝড়ে যে অসহায় হয়ে পড়েছিল নেদারল্যান্ডস।

মারদাঙ্গা ম্যাক্সওয়েলের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে ডাচদের সামনে চারশর পাহাড়

গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝড়ে যে অসহায় হয়ে পড়েছিল নেদারল্যান্ডস।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দ্রুততম বিশ্বকাপ সেঞ্চুরি

টানা দুই সেঞ্চুরি পেলেন ডেভিড ওয়ার্নার। কিন্তু সব আলো কেড়ে নিয়েছেন অন্য একজন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝড়ে যে অসহায় হয়ে পড়েছিল নেদারল্যান্ডস। বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড বাগিয়ে নিয়েছেন এইডেন মার্করামের থেকে। ওয়ার্নারের সেঞ্চুরির পর ২৯০ রানে ৬ উইকেট নিয়ে নেদারল্যান্ডস যে স্বস্তির নিঃশ্বাস পেয়েছিল, তা সব ম্যাক্সওয়েলের ৪৪ বলে ১০৬ রানের ইনিংসে উড়ে গেছে। অজিরা সেই দুই সেঞ্চুরিতে পেয়ে গেছে ৩৯৯ রানের পাহাড়সম পুঁজি।

দিল্লিতে টস হেরে বোলিংয়ে নামা নেদারল্যান্ডস দুই প্রান্তেই স্পিনার দিয়ে শুরু করে। প্রথম ওভারে দুটি চার মারেন মিচেল মার্শ। তৃতীয় ওভারে ওয়ার্নার মারেন টানা চারটি চার। পরের ওভারেই পেস আনলে পড়ে যায় উইকেট। লোগান ফন বিকের বলে পুলে ক্যাচ তুলে দেন মার্শ, ১৫ বলে ৯ রানেই থেমে যায় তার ইনিংস। ওয়ার্নার-স্মিথ মিলে অজিদের এগিয়ে নিয়ে যান স্বাচ্ছন্দ্যেই। ৭ ওভারে পঞ্চাশ রান তুলে ফেলে অজিরা। ৬৬ রানে পাওয়ারপ্লে শেষ করে স্মিথ ও ওয়ার্নার দুজনেই খেলতে থাকেন আত্মবিশ্বাসের সাথে।

তবে ডাচরা সুযোগ পেয়েছিল ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে দেওয়ার। স্মিথের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটের মোক্ষম সুযোগ পেয়েছিল ডাচরা। কিন্তু ম্যাক্স ও'ডাউড মিসফিল্ড করলে সেসময়ে প্রায় অপর প্রান্তে চলে যাওয়া ওয়ার্নার ফিরে আসেন। তখনও বাঁহাতি এই ব্যাটার ৩২ রানে। ১৮তম ওভারেই এরপর যখন অজিরা শতরান পেরিয়ে যায়, ওয়ার্নারও তার ফিফটি পেয়ে যান ৪০ বলেই। পরের ওভারে স্মিথও ফিফটি পূর্ণ করে ফেলেন ৫৩ বলে।

স্মিথ-ওয়ার্নার জুটিতে বড় স্কোরের দিকে চোখ রাখে অস্ট্রেলিয়া। তবে দলকে ১৬৮ রানে রেখে স্মিথ আউট হয়ে যান ৬৮ বলে ৭১ রান করে। ৯ চার ও ১ ছয়ের সে ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে পয়েন্টে ভ্যান দ্যার মারওয়ের অসাধারণ ক্যাচে। স্মিথ ফেরার পর নতুন ব্যাটার মারনাস লাবুশেনও রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন দ্রুতগতিতে। মারওয়ে, আরিয়ান দত্তের স্পিনে দুর্দান্তভাবে বের করেছেন নিয়মিত বাউন্ডারি। ৩২তম ওভারে দুইশ পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৪২ বলে ফিফটি পাওয়ার পর বেশিক্ষণ যদিও টিকেননি লাবুশেন। ৪৭ বলে ৬২ রান করে আউট হয়ে যান মিডঅনে ক্যাচ দিয়ে।

লাবুশেনের যাওয়ার পর দ্রুত আরও দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। জস ইংলিস ১৪ রানেই ধরা খান বাউন্ডারিতে। ৯১ বলে সেঞ্চুরি পাওয়ার দুই বল পরই আউট হয়ে যান ওয়ার্নারও। ক্যামেরন গ্রিন এসে এক অঙ্কে রানআউট হয়ে গেলে ২৯০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে অজিরা। তখনও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট যদিও বাকি!

এবং ম্যাক্সওয়েল যা করলেন, ডাচদের কিছুই করার ছিল না! প্রথমে স্ট্রেইট ড্রাইভ, কাভার ড্রাইভে চার মেরেছেন। পরে শুরু করেছেন তার মারদাঙ্গা ব্যাটিং। রিভার্স সুইপ, তাও পেস বলে! একবার নয়, চারবার বাউন্ডারিতে বল পাঠিয়েছেন রিভার্স সুইপে। দুটি ছক্কা, দুটি চার। ২৭ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ফেলা ম্যাক্সওয়েল পরে দেখান পাওয়ার গেম! নেদারল্যান্ডসের বোলাররা নিরুপায় হয়ে পড়েছিলেন তার সামনে।

ওই ঝড়ের মাঝে সেঞ্চুরি এসে যায় ৪০ বলেই! ভেঙ্গে দেন চলতি বিশ্বকাপেই ৪৯ বলে এইডেন মার্করামের গড়া দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। সেঞ্চুরির পর ম্যাক্সওয়েলের তোলা ঝড় থামে গিয়ে ১০৬ রানে। ৪৪ বলের সে ইনিংসে ৯ চারের সাথে মারেন ৮টি ছয়। শেষ ওভারে ম্যাক্সওয়েল আউট হয়ে গেলে অজিদের সংগ্রহটাও আর চারশ ছাড়িয়ে যায়নি।

Comments