স্কটল্যান্ডের জালে গোল উৎসব করে ইউরো শুরু জার্মানির

ইউরোপের ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের আসরে এটাই জার্মানির সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড।
ছবি: এএফপি

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতের মুঠোয় রাখল জার্মানি। মুহুর্মুহু আক্রমণগুলোকে পূর্ণতা দিতেও ভীষণ পারদর্শিতার ছাপ রাখল তারা। তাদের দাপটের সামনে স্রেফ অসহায় দেখাল ১০ জনে পরিণত হওয়া প্রতিপক্ষকে। স্কটল্যান্ডের জালে গোল উৎসব করে ২০২৪ ইউরোতে শুভ সূচনা করল আয়োজকরা।

ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধনী ম্যাচে শুক্রবার রাতে অনবদ্য পারফরম্যান্স দেখিয়েছে জার্মানরা। মিউনিখে 'এ' গ্রুপের একপেশে লড়াইয়ে স্কটিশদের ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ইউলিয়ান নাগেলসমানের দল।

তিনবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নদের পক্ষে একবার করে জাল খুঁজে নেন পাঁচ ফুটবলার। তারা হলেন ফ্লোরিয়ান ভিরৎজ, জামাল মুসিয়ালা, কাই হাভার্টজ, নিকলাস ফুলক্রুগ ও এমরে চান। গোলমুখে জার্মানির ২০টি শটের বিপরীতে গোটা ম্যাচে একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে না পারা স্কটল্যান্ড গোল পায় ভাগ্যের ছোঁয়ায়। নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন অ্যান্টোনিও রুডিগার।

ইউরোপের ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের আসরে এটাই জার্মানির সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড। এর আগে ১৩ বার অংশ নিয়ে ৫৩ ম্যাচ খেললেও কখনও এক ম্যাচে পাঁচ গোল করতে পারেনি তারা। এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসে উদ্বোধনী ম্যাচে সবচেয়ে বড় জয়ের কীর্তিও গড়েছে দলটি।

প্রথমার্ধেই তিনবার নিশানা ভেদ করে স্কটিশদের ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে দেয় স্বাগতিকরা। আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় দশম মিনিটে বায়ার লেভারকুসেনের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ভিরৎজের লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যায় তারা। জশুয়া কিমিখের পাস ডি-বক্সের প্রান্তে পেয়ে নিচু শটে এবারের আসরের প্রথম গোলটি করেন বুন্ডেসলিগার ২০২৩-২৪ মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়।

নয় মিনিট পর হাভার্টজের কাটব্যাকে বল পেয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বায়ার্ন মিউনিখের মিডফিল্ডার জামাল মুসিয়ালা। ২৫তম মিনিটে মুসিয়ালা ফাউলের শিকার হওয়ায় শুরুতে পেনাল্টির বাঁশি বাজালেও পরে ভিএআরের সাহায্যে রেফারি দেন ফ্রি-কিক।

তবে ৪৪তম মিনিটে ঠিকই পেনাল্টি মেলে জার্মানদের। সঙ্গে বড় ধাক্কা খায় স্কটল্যান্ড। ইল্কাই গুন্দোয়ানকে ফাউল করায় রায়ান পোর্টেয়াসকে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে দেখানো হয় সরাসরি লাল কার্ড। আর সোজাসুজি নেওয়া সফল স্পট-কিকে জাল কাঁপান আর্সেনালের ফরোয়ার্ড হাভার্টজ।

দ্বিতীয়ার্ধেও চাপ বজায় রেখে একই ধাঁচে খেলতে থাকে জার্মানি। ৬৮তম মিনিটে ফের গোলের উল্লাস করে তারা। মিনিট পাঁচেক আগে বদলি নামা বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের স্ট্রাইকার ফুলক্রুগ বুলেট গতির শটে পরাস্ত করেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক অ্যাঙ্গাস গানকে। ছয় মিনিট পর তিনি ফের গোল করলেও তা বাতিল হয় অফসাইডের কারণে।

ধারার বিপরীতে হুট করেই সান্ত্বনাসূচক গোল পায় স্কটল্যান্ড। ৮৭তম মিনিটে সতীর্থের ফ্রি-কিকে স্কট ম্যাককেনার হেডের পর বল রুডিগারের মাথায় লেগে গোললাইন পেরিয়ে যায়। তবে কিছুক্ষণ পরই দুই বদলির নৈপুণ্যে ক্ষতে প্রলেপ দেয় জার্মানি। থমাস মুলারের পাসে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে জাল কাঁপান ডর্টমুন্ডের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার চান।

স্কটল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে দারুণ কিছুর বার্তা দিয়ে রাখল সবশেষ দুটি বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডের বৈতরণী পার হতে ব্যর্থ হওয়া জার্মানরা। তাদের পরের ম্যাচ আগামী বুধবার, স্টুটগার্টে হাঙ্গেরির বিপক্ষে।

Comments