ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করল জার্মানি

জার্মান কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জার্মানি ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির লাইসেন্স অনুমোদন করা বন্ধ করেছে, কারণ, এক্ষেত্রে আইনি ও রাজনৈতিক চাপ রয়েছে৷ এমন রপ্তানির মাধ্যমে জার্মানি মানবাধিকার লঙ্ঘণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷’
জার্মান ডলফিন এআইপি সাবমেরিন অবমুক্ত করার অনুষ্ঠানে নেতানিয়াহু। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে
জার্মান ডলফিন এআইপি সাবমেরিন অবমুক্ত করার অনুষ্ঠানে নেতানিয়াহু। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে

ইসরায়েলকে আর নতুন করে কোনো অস্ত্র দিচ্ছে না জার্মানি।

আজ বৃহস্পতিবার রয়টার্সের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ডয়চে ভেলে।

জার্মানির তথ্য বিশ্লেষণ ও অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে এমন এক সূত্রের বরাত দিয়ে  এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।  সূত্রটি রয়টার্সকে একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য জানিয়েছেন ৷

জার্মান কর্মকর্তা বলেছেন, 'জার্মানি ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির লাইসেন্স অনুমোদন করা বন্ধ করেছে, কারণ, এক্ষেত্রে আইনি ও রাজনৈতিক চাপ রয়েছে৷ এমন রপ্তানির মাধ্যমে জার্মানি মানবাধিকার লঙ্ঘণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷'

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলেও মন্ত্রণালয় কোনো জবাব দেয়নি৷

তবে রয়টার্সের প্রতিবেদন প্রকাশের পর জার্মান সরকার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে৷

'ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি', জানান সরকারের মুখপাত্র স্টেফান হেবেশট্রাইট।

অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হিসেব বলছে, গতবছর ইসরায়েলে ৩২ কোটি ৬৫ লাখ ইউরোর অস্ত্র রপ্তানি অনুমোদন করেছিল জার্মানি৷ এর মধ্যে সামরিক উপকরণ ও যুদ্ধাস্ত্র রয়েছে৷ অর্থের অংকটি ২০২২ সালের তুলনায় প্রায় ১০ গুন বেশি৷

ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচিত জার্মানি। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচিত জার্মানি। ফাইল ছবি: রয়টার্স

তবে এই বছর লাইসেন্স অনুমোদন কমেছে৷ জানুয়ারি থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত মাত্র ১৪ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে পার্লামেন্টে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়৷

এর মধ্যে মারণাস্ত্রে হিসেবে বিবেচিত অস্ত্র ছিল মাত্র ৩২ হাজার ৪৪৯ ইউরো মূল্যমানের।

ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির জেরে জার্মানির বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে৷ একটি আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে এবং অন্যটি বার্লিনের আদালতে৷

দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেছে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস৷

এই দুই মামলায় নিজেদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে যেয়ে জার্মান সরকার বলেছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর ইস্যু করা কোনো লাইসেন্সের আওতায় যুদ্ধাস্ত্র রপ্তানি করা হয়নি৷ শুধুমাত্র দীর্ঘমেয়াদি যে চুক্তিগুলো আছে তার আওতায় যন্ত্রাংশ রপ্তানি করা হয়েছে৷

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৪১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি মারা গেছেন বলে হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে৷

ইউরোপজুড়ে মামলা হওয়ায় ইসরায়েলের অন্যান্য মিত্ররাও অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করেছে৷

চলতি মাসে যুক্তরাজ্য ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি সংক্রান্ত ৩৫০টি লাইসেন্সের মধ্যে ৩০টি স্থগিত করেছে৷ কারণ ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে বলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে৷

ফেব্রুয়ারি মাসে নেদারল্যান্ডসের একটি আদালত ইসরায়েলে এফ-৩৫ ফাইটার জেটের যন্ত্রাংশ রপ্তানি স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছিল৷

রয়টার্স

Comments