মুকিদুলের তোপের পর রাসেলের তাণ্ডবে জিতল কুমিল্লা

মুকিদুল ইসলামের বোলিং তোপে লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই ছিল কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্সের। কিন্তু ফরচুন বরিশালের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সে লক্ষ্যই কঠিন হয়ে গিয়েছিল তাদের। তবে ক্যারিবিয়ান তারকা আন্দ্রে রাসেলের তাণ্ডবে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে গত বারের চ্যাম্পিয়নরা। একই সঙ্গে প্রথম লড়াইয়ে হারের প্রতিশোধও নিল দলটি।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ৫ উইকেটে হারিয়ছে কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৯.১ ওভারে ১২১ রানে গুটিয়ে যায় বরিশাল। জবাবে ৯ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে ইমরুল কায়েসের দল।

এ জয়ে শীর্ষ দুইয়ে থাকার দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে গেল কুমিল্লা। ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে স্পর্শ করল কুমিল্লা। তবে রান রেটের বিচারে এগিয়ে রয়েছে সিলেট। নিজেদের শেষ ম্যাচে কুমিল্লা মুখোমুখি হবে রংপুর রাইডার্সের। আর বরিশাল খেলবে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে। ১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বরিশাল।

কুমিল্লা ও বরিশালের মধ্যে অবশ্য দারুণ একটি দ্বৈরথ রয়েছে। যার শুরু গত বিপিএলের ফাইনাল থেকে। রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ে ফরচুন বরিশালকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টরিয়ান্স। এবার দুই দলের প্রথম লড়াইয়ে সেই কুমিল্লাকে হারিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছিল বরিশাল। তবে ফিরতি লড়াইয়ে এবার ম্যাচ জিতে নিল কুমিল্লা।

তবে লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো ছিল না চ্যাম্পিয়নদের। দলীয় ১৭ রানেই মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফিরিয়ে ওপেনিং জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। এরপর লিটন দাসের সঙ্গে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে সাকিব আল হাসানের শিকার হন জাকের আলী। পারেননি অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও। মোসাদ্দেক হোসেন যথারীতি হতাশ করেন। ফলে দলীয় ৬০ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে দলটি।

তখন দলটি তাকিয়ে ছিল লিটনের ব্যাটের দিকে। দলীয় ৭৪ রানে ইবাদত এই ওপেনারকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করলে বড় চাপে পড়ে যায় কুমিল্লা। এরপর খুশদিলকে নিয়ে দলের হাল ধরেন আগের দিনই দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া রাসেল। অবিচ্ছিন্ন ৪৮ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এ দুই ব্যাটার।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। ৩৯ বলে ৫টি চারের সাহায্যে সাজান নিজের ইনিংস। ১৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন রাসেল। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন এ ক্যারিবিয়ান। ১৯ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় হার না মানা ২৩ রানের ইনিংস খেলেন খুশদিল। বরিশালের পক্ষে ১৮ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন ইবাদত হোসেন।

 এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মুকিদুলের বোলিং তোপে ধুঁকতে থাকে বরিশাল। যদিও শুরুর ধাক্কাটা দেন তানভির আহমেদ। এনামুল হক বিজয়কে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচে পরিণত করেন। আর রানআউটে কাটা পড়েন আরেক ওপেনার ফজলে রাব্বি। এরপর শুরু হয় মুকিদুলের তোপ।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর বল হাতে নিয়ে ওই ওভারেই ফেরান দারুণ ছন্দে থাকা বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে। ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প ভাঙে তার। এরপর আবার ফেরেন একাদশ ওভারে। এবার শিকার করেন বিপদে থাকা দলের হাল ধরা মাহমুদউল্লাহকে। তিনিও বোল্ড হন স্টাম্পের বাইরের বল টেনে খেলতে গিয়ে।

এরপর ১৮তম ওভারে বরিশাল শিবিরে জোড়া ধাক্কা দেন মুকিদুল। পরপর দুই বলে ফেরান করিম জানাত ও মোহাম্মদ ওয়াসিমকে। বরিশালের আশার আলো হয়ে জ্বলতে থাকা করিম জানাতকে পরিণত করেন তানভির ইসলামের অসাধারণ ক্যাচে। মোহাম্মদ ওয়াসিম মাঠ ছাড়েন অতিরিক্ত ফিল্ডার আবু হায়দারের হাতে ক্যাচ দিয়ে। আর ইনিংসের শেষ ওভারে ফিরে চতুরঙ্গ ডি সিলভাকে ফিরিয়ে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন মুকিদুল।

মাঝে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ৪৭ রানের জুটি গড়ে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা চালিয়েছিলেন করিম। দলকে পর্যাপ্ত পুঁজি এনে দিতে না পারলেও একশর কোটা পার হয় তাদের দৃঢ় তাতেই। মিরাজকে সুনীল নারিনের ক্যাচে পরিণত করে মোস্তাফিজুর রহমান এ জুটি ভাঙলে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। ২৬ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২৬ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩২ রান আসে করিমের ব্যাট থেকে। ১৭ রান করেন মিরাজ। এছাড়া আর কোনো ব্যাটারই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারনেনি। ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে বরিশালের পক্ষে ৩.১ ওভার বল করে ২৩ রানের খরচায় ৫টি উইকেট নেন মুকিদুল।

Comments

The Daily Star  | English

Mindless mayhem

The clashes between students of three colleges continued yesterday, leaving over 100 injured in the capital’s Jatrabari.

6h ago