টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

অস্ট্রেলিয়াকে বিদায়ের কিনারে ফেলে সেমিফাইনালে ভারত 

India

রোহিত শর্মার তাণ্ডবে শুরুতেই দিশেহারা হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া, এক সময় মনে হচ্ছিলো ভারত ছাড়িয়ে যাবে আড়াইশো। শেষ পর্যন্ত তা না হলেও দুশো ছাড়ানো পুঁজি ঠিকই পেয়ে যায় তারা। রান তাড়ায় ট্রেভিস হেড, মিচেল মার্শ দিশা দেখালেও ভারতের দারুণ বোলিং-ফিল্ডিংয়ে আর পেরে উঠেনি অস্ট্রেলিয়া। বড় এই হারের পর তাই সেমিফাইনালের আগে বিদায় নেওয়ার একদম কিনারে চলে গেছে মিচেল মার্শের দল।

সোমবার সেন্ট লুসিয়ায় সুপার এইটের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২৪  রানে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। আগে ব্যাট করে রোহিতের ৪১ বলে ৯১ রানে ২০৫ রান করে ভারত। তাড়া করতে নেমে অজিরা করতে পারে ১৮১  রান।

এই হারের পর অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনালে যাওয়া এখন অসম্ভবের কাছাকাছি, নিজেদের হাতেও নেই। আফগানিস্তান বাংলাদেশকে হারালে তারা চলে যাবে সেমিতে। বাংলাদেশ যদি জেতে তাহলে আসবে রানরেটের হিসাব। বাংলাদেশ জিতলে বাদ পড়বে আফগানিস্তান। তখন হিসেবে আসবে রানরেট। বাংলাদেশ যদি আগে ব্যাট করে অন্তত ৬২ রানে আফগানদের হারায় তবে নিজেরা সেমিতে যাবে। আর অন্য কোন ব্যবধানে জিতলে অস্ট্রেলিয়াই কাটবে সেমির টিকেট। 

বিশাল লক্ষ্যে নেমে প্রথম ওভারেই অভিজ্ঞ ডেভিড ওয়ার্নারে উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক মিচাল মার্শ এসেও শুরুতে সুযোগ দিয়েছিলেন। পরে সামলে নিয়ে হেড-মার্শ মিলে গড়েন ৪৮ বলে ৮১ রানের বিস্ফোরক জুটি। তাতে ম্যাচে দারুণভাবে ফিরে আসে অজিরা। এই জুটি ভাঙে অক্ষর প্যাটেলের অবিশ্বাস্য ক্যাচে। ২৮ বলে ৩৭ করা মার্শ কুলদীপ যাদবকে স্লগ সুইপে উড়াতে গিয়েছিলেন। ডিপ স্কয়ারের উপর দিয়ে ছক্কার দিকেই যাচ্ছিল। বাজপাখির মতন ছোঁ মেরে অনেকটা লাফিয়ে সেই বল হাতে জমিয়ে ফেলেন অক্ষর।

তৃতীয় উইকেটে হেডের সঙ্গে দারুণ জড়ো জুটি পেয়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও। ২৫ বলে ৪১ রানের জুটি থামে ম্যাক্সওয়েলের বিদায়ে। তাকেও ফেরান কুলদীপ। এই বাঁহাতি রিষ্ট স্পিনারের বলে এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড ম্যাক্সওয়েল থামেন ১২ বলে ২০ করে। গ্রুপ পর্বে দারুণ খেলা মার্কাস স্টয়নিস এদিন ব্যর্থ। মাত্র ২ রান করে তিনি ক্যাচ দেন অক্ষর প্যাটেলের বলে।

হেড ছিলেন বলে আশা ছিলো অজিদের। সেই আশা মিইয়ে দেন বুমরাহ। দ্বিতীয় স্পেলে এসে শিকার ধরেন অজি ওপেনারকে। ৪৩ বলে ৭৬ করে বিদায় নেন হেড। ১৫০ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। ম্যাচ তখন প্রায় ভারতের মুঠোতেই চলে যায়। আর্শ্বদীপ এসে দ্রুতই তুলে নেন ম্যাথু ওয়েডকে। টিম ডেভিড পরে কিছুটা চেষ্টা চালালেও লাভ হয়নি, ম্যাচ জেতার আর কাছেও যেতে পারেনি অজিরা।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং পেয়ে তাণ্ডব শুরু করেন রোহিত। বিরাট কোহলি দ্বিতীয় ওভারে আউট হয়ে গেলেও সেই ঘাটতি তুড়ি মেরে উড়াতে থাকেন চার-ছক্কার জয়ে।

রিশভ পান্তকে এক পাশে রেখে পাওয়ার প্লের মধ্যেই এবার বিশ্বকাপে দ্রুততম ১৯ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন ভারত অধিনায়ক। অনায়াসে একের পর এক ছক্কা পেটাতে থাকা রোহিতকে মনে হচ্ছিলো থামানোই অসম্ভব। টি-টোয়েন্টিতে ২০০ ছক্কার রেকর্ড ছাড়িয়ে উত্তাল করে তুলেন পরিস্থিতি।

আসরের প্রথম সেঞ্চুরি ছিলো হাতের নাগালে। রোহিতের বিস্ফোরক ইনিংস অবশ্য থেমে যায় নব্বুই ছাড়িয়ে। মিচেল স্টার্কের ওভারে শুরুতে ২৯ রান নিয়েছিলেন । স্টার্কের পরের স্পেলে বোল্ড হন ৯২ রানে। ৪১ বলের উপস্থিতিতে ৭ চারের সঙ্গে মারেন ৮ ছয়।

তার বিদায়ের পর সূর্যকুমার যাদব, শিভম দুবে, হার্দিক পান্ডিয়া মিলে তরতরিয়ে বাড়াতে থাকেন রান। সূর্যকুমার ১৬ বলে ৩১ ও শিভম দুবে ২৮ করেন ২২ বলে। তিনিই ছিলেন কিছুটা মন্থর। রোহিতের ব্যাটিংয়ের সময় মনে হচ্ছিল ভারত করতে পারে আড়াইশ রান। তা হয়নি। তবে দলকে দুইশো পার করতে ১৭ বলে ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন হার্দিক।

Comments

The Daily Star  | English

$14b lost to capital flight a year during AL years

Bangladesh has lost around $14 billion a year on average to capital flight during the Awami League’s 15-year tenure, according to the draft report of the committee preparing a white paper on the economy.

10h ago