মিলারের ব্যাটে বিপর্যয় সামলে ডাচদের হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা
দুই সংস্করণের সবশেষ দুই বিশ্বকাপেই নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৩৮ রানে, ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১৩ রানে। একই প্রতিপক্ষের বিপরীতে বিশ্বমঞ্চে টানা তৃতীয়বারের মতো হারের শঙ্কা পড়ল তারা। ১০৪ রানের মামুলি লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে স্রেফ ১২ রানে পড়ে গেল দলটির ৪ উইকেট। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সেই বিপর্যয় সামাল দিলেন ডেভিড মিলার। তার অপরাজিত হাফসেঞ্চুরিতে কষ্টার্জিত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল প্রোটিয়ারা।
শনিবার নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে 'ডি' গ্রুপের রোমাঞ্চকর লো স্কোরিং ম্যাচে ৪ উইকেটে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে তাদের বোলিং তোপে ডাচরা করতে পারে ৯ উইকেটে ১০৩ রান। এরপর নিজেরাও অসাধারণ বোলিং উপহার দিয়ে লড়াই জমিয়ে তোলে স্কট এডওয়ার্ডসের দল। তবে মিলারের কল্যাণে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৭ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছায় প্রোটিয়ারা। চলমান আসরে এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয়। একই ভেন্যুতে আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছিল এইডেন মার্করামের দল।
ম্যাচসেরা মিলার ছয়ে নেমে খেলেন ৫১ বলে ৫৯ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে আসে তিনটি চার ও চারটি ছক্কা। মন্থর পিচে চাপ সামলে পঞ্চম উইকেটে ট্রিস্টান স্টাবসকে নিয়ে ৭২ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়েন তিনি। স্টাবস কার্যকর ইনিংস খেলে আউট হন ৩৭ বলে ৩৩ রান করে। আর কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে।
এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকান পেসাররা শুরুতেই বিপাকে ফেলেন ডাচদের। মাত্র তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা ওটনিয়েল বার্টম্যান ১১ রানে পান ৪ উইকেট। দুটি করে শিকার ধরেন আনরিখ নরকিয়া ও মার্কো ইয়ানসেন। তারা নিয়মিত বিরতিতে আদায় করতে থাকেন উইকেট। ২০ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে পাওয়ার প্লে শেষ করা নেদারল্যান্ডসের পুঁজি ইনিংসের মধ্যভাগে দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৩৫ রান। এরপর ৪৬ রানে পতন হয় ষষ্ঠ উইকেটের। সেখান থেকে তাদের সংগ্রহ একশ ছাড়ায় সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট ও লোগান ফন বিকের ৪৫ বলে ৫৪ রানের জুটিতে।
একটি ছক্কা ও দুটি চারে ৪৫ বলে ৪০ রান করেন এঙ্গেলব্রেখট। ২২ বলে ২৩ রান করা ফন বিক মারেন তিনটি চার। ইনিংসের শেষ ওভারেই তিনটি উইকেট পান বার্টম্যান। এঙ্গেলব্রেখট ও ফন বিকের পাশাপাশি তিনি সাজঘরে পাঠান টিম প্রিঙ্গলকে। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ের স্বাদ মেলে বার্টম্যানের।
রান তাড়ায় নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। ইনিংসের প্রথম বলেই রান আউট হয়ে যান কুইন্টন ডি কক। নন স্ট্রাইকে থাকায় কোনো বল মোকাবিলার সুযোগ হয়নি তার। পরের ওভারে ফন বিক বোল্ড করেন রিজা হেন্ড্রিকসকে। তৃতীয় ওভারে মার্করামকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরান ভিভিয়ান কিংমা। ৩ রানে ৩ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। কিংমার পরের ওভারে হেইনরিখ ক্লাসেনও আউট হয়ে যান।
নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বনিম্ন দলীয় রানে পাওয়ার প্লে শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৬ ওভারে তাদের রান ছিল ৪ উইকেটে ১৬। এরপর দলটির হাল ধরেন মিলার ও স্টাবস। স্কোরবোর্ডে ৭৫ রান ওঠা পর্যন্ত একসঙ্গে ক্রিজে ছিলেন তারা। স্টাবসের পর ইয়ানসেনও বিদায় নেন। তবে বিপজ্জনক মিলারকে আটকাতে পারেনি ডাচরা। শেষ ১২ বলে ১৬ রানের সমীকরণ তিনি মিলিয়ে ফেলেন ৫ বলেই। বাস ডি লিডির করা ১৯তম ওভারে একটি চারের সঙ্গে হাঁকান দুটি ছক্কা। বল সীমানার ওপারে পাঠিয়েই জয় নিশ্চিত করেন মিলার।
Comments