৬ বছরের শিশুকে বিক্রি, মায়ের যাবজ্জীবন

জশলিনের মা র‍্যাকেল ‘কেলি’ স্মিথের বিরুদ্ধে শিশু বিক্রি ও পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ছবি: এএফপি
জশলিনের মা র‍্যাকেল ‘কেলি’ স্মিথের বিরুদ্ধে শিশু বিক্রি ও পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ছবি: এএফপি

নিজের ছয় বছর বয়সী মেয়েকে বিক্রি ও পাচারের দায়ে দক্ষিণ আফ্রিকার এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দিয়েছে দেশটির আদালত। অস্বাভাবিক এই ঘটনা সেখানে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় দেয় আদালত।

এএফপি ও বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেপটাউন থেকে ১৩৫ কিলোমিটার উত্তরে সালদানহা বে জেলেপল্লীতে নিজের বাসার সামনে থেকে নিখোঁজ হয় জশলিন স্মিথ (৬)। শিশুটির হদিস এখনো পাওয়া যায়নি।

জশলিনের মা র‍্যাকেল 'কেলি' স্মিথের বিরুদ্ধে শিশু বিক্রি ও পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

জানা গেছে, নিজ সন্তানকে বিক্রি করে র‍্যাকেল মাত্র ২০ হাজার র‍্যান্ড (এক হাজার ১০০ মার্কিন ডলার) পেয়েছেন।

সন্তান বিক্রি করে দেওয়া মা র‍্যাকেল, তার প্রেমিক ও বন্ধুকে আদালতে দেখা যাচ্ছে। ছবি: এএফপি
সন্তান বিক্রি করে দেওয়া মা র‍্যাকেল, তার প্রেমিক ও বন্ধুকে আদালতে দেখা যাচ্ছে। ছবি: এএফপি

বিচারক নাথান এরাসমাস মানবপাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় র‍্যাকেল (৩৫) ও তার দুই সহযোগীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

পাশাপাশি, পাচারের অভিযোগে পৃথক ১০ বছর করে কারাদণ্ড পান ওই তিন অপরাধী।

র‍্যাকেলের প্রেমিক জাকেন অ্যাপোলিস ও তাদের বন্ধু স্টেভানো ভ্যান রিনের বিরুদ্ধে মানবপাচারের অভিযোগ আনা হয়।

এই মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে চলে। এ সময় সাক্ষী ও কৌঁসুলিরা এমন অভিযোগ আনেন, যা সবাইকে বিস্মিত করে।

রায় ঘোষণার পুরো সময় (এক ঘণ্টা) আদালতে ছিলেন র‍্যাকেল ও তার দুই সহযোগী। এ সময় তারা নির্বিকার ছিলেন। রায় শোনার পরও তাদের মধ্যে তেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

শিশু নিখোঁজের পর শুরুতে র‍্যাকেল অনেকের সমবেদনা কুড়িয়েছিলেন। তার মেয়েকে খুঁজে পেতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরাও উদ্যোগ নেন।

অল্প সময়ের মধ্যে জশলিনের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে তার সবুজ চোখ, নিষ্পাপ হাসি ও বাদামি চুলের বেণী দেখা যায়।

শিশু নিখোঁজের ঘটনাটি দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় পর্যায়ে তোলপাড় সৃষ্টি করে। এক মন্ত্রী শিশুটির নিরাপদে ফিরে আসার জন্য ৫৪ হাজার মার্কিন ডলার (১০ লাখ র‍্যান্ড) পুরস্কার ঘোষণা করেন।

তবে এক পর্যায়ে ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেন, র‍্যাকেল তার মেয়েকে এক গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। স্থানীয় ভাষায় এ ধরনের চিকিৎসকদের 'সাঙ্গোমা' বলে।

ওই চিকিৎসক র‍্যাকেলের মেয়ের সুন্দর চোখ ও ফর্সা চামড়া দেখে আগ্রহী হয়েছিলেন বলে এক সাক্ষী উল্লেখ করেন।

পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, শিশুটিকে খুঁজে পাওয়ার উদ্যোগ চালু থাকবে। এমনকি, দক্ষিণ আফ্রিকার সীমানা পার হয়ে গেলেও তা চলমান থাকবে।

ওয়েস্টার্ন কেপ পুলিশ কমিশনার থেম্বিসাইল পাতেকিলে স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, 'জশলিনের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা না জানা পর্যন্ত আমরা থামবো না। আমরা দিনরাত তার খোঁজ করছি।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Stop destroying nature, plant trees instead of cutting: Yunus

Protecting the environment should be a citizen-led movement, he says

1h ago