আইপিএলের ভীষণ খরুচে নরকিয়া এখন বিশ্বকাপের সবচেয়ে কৃপণ

শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের বেকায়দায় ফেলে দুর্দান্ত বোলিংয়ে তিনি গড়লেন বিশ্ব আসরে কিপটে বোলিংয়ের নতুন কীর্তি।
ছবি: এএফপি

সবশেষ আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে আনরিক নরকিয়ার হয়েছিল বেহাল দশা। প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটাররা তার ওপর চড়াও হয়ে চালিয়েছিলেন তাণ্ডব। ভীষণ খরুচে বোলিংয়ের খেসারত দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার গতিময় পেসার তাই জায়গা হারিয়েছিলেন একাদশে। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই তিনি দেখালেন একদম ভিন্ন দৃশ্য। শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের বেকায়দায় ফেলে দুর্দান্ত বোলিংয়ে তিনি গড়লেন বিশ্ব আসরে কিপটে বোলিংয়ের নতুন কীর্তি।

গতকাল সোমবার নিউইয়র্কে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং উপহার দেন নরকিয়া। ৪ ওভারের নির্ধারিত কোটায় হাত ঘুরিয়ে ডানহাতি পেসার ৪ উইকেট নেন স্রেফ ৭ রানে। কোনো মেডেন নিতে না পারলেও তিনি লঙ্কানদের খেলান ১৮ ডট বল। এমন পারফরম্যান্সের পর নরকিয়ার ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা অনুমিতই ছিল।

পিঠের চোট থেকে সেরে উঠে ২০২৪ সালের আইপিএলে দিল্লির হয়ে মাত্র ৬ ম্যাচ খেলার সুযোগ পান ৩০ বছর বয়সী নরকিয়া। মূলত অতি খরুচে বোলিংয়ের জন্যই একাদশে নিয়মিত হতে পারেননি। ৭ উইকেট নিলেও তার ইকোনমি ছিল প্রায় আকাশছোঁয়া। প্রতি ওভারে গড়ে নরকিয়া বিলিয়ে দেন ১৩.৩৬ রান। সেই তিনিই ছন্দহীনতা দূরে ঠেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হয়ে ওঠেন আঁটসাঁট বোলিংয়ের প্রতিমূর্তি। তার প্রতি ওভার থেকে গড়ে স্রেফ ১.৭৫ রান আনতে পারেন প্রতিপক্ষের ব্যাটাররা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ৪ ওভারের কোটা পূরণ করেছেন— এমন বোলারদের মধ্যে নরকিয়ার ইকোনমিই এখন সবচেয়ে কম। আগের কীর্তি যৌথভাবে ছিল শ্রীলঙ্কার দুই ক্রিকেটার অজন্তা মেন্ডিস ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা এবং বাংলাদেশের মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দখলে। তাদের সবারই ইকোনমি ছিল ২ করে। ২০১২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হাম্বানটোটায় মেন্ডিস ৬ উইকেট শিকার করেন ৮ রানে। পরের বিশ্বকাপে ২০১৪ সালে মাহমুদউল্লাহ মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১ উইকেট পান সমান রান খরচায়। আর সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০২২ সালে জিলংয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে হাসারাঙ্গা ৮ রানের বিনিময়ে নেন ৩ উইকেট।

ম্যাচশেষে নরকিয়া কণ্ঠে শোনা যায় স্বস্তি ও তৃপ্তি, 'খুবই খুশি। গত কয়েকটি ম্যাচ থেকেই ভালো অনুভব করছিলাম। শেষমেশ একটা ভালো ম্যাচ খেললাম এবং বেশ কয়েকটি উইকেট পেলাম। ছেলেরা দারুণ (বল) করেছে প্রতিপক্ষকে অল্প রানে বেঁধে ফেলতে। অনেক দিন পর এতগুলো উইকেট পেলাম এবং দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারায় আনন্দিত।'

নরকিয়ার চূড়ায় ওঠার ম্যাচে লো-স্কোরিং দ্বৈরথে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের অসম গতির উইকেট ছিল ব্যাটারদের জন্য রীতিমতো মৃত্যুকূপ। লঙ্কানদের স্রেফ ৭৭ রানে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর জয় নিশ্চিত করতে প্রোটিয়াদেরও লেগে যায় ১৬.২ ওভার।

Comments