প্যারিস অলিম্পিক

কেন এবারের অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ব্যতিক্রম

বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে আসা খেলোয়াড়েরা বিখ্যাত সিন নদীতে ৬ কিলোমিটার যাত্রা করবেন। তাদের নৌকায় চড়া শুরু হবে অস্টারলিটজ সেতু থেকে।

কোভিড-১৯ মহামারির কবলে পড়ে দর্শক শূন্য অলিম্পিক হয়েছিল শেষবার। টোকিও অলিম্পিকের পর এবার জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে সূচনা হবে প্যারিস অলিম্পিকের। আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে যাচ্ছে এবারের অলিম্পিক। গ্রীষ্মকালীন এই অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ব্যতিক্রম বলার জন্য একটা কারণই যথেষ্ট। দীর্ঘ ইতিহাসে প্রথমবার উদ্বোধনের আয়োজন রাখা হয়েছে স্টেডিয়ামের বাইরে।

'দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ' বলে খ্যাত অলিম্পিকের উদ্বোধনের ব্যবস্থা অ্যাথলেটিকস স্টেডিয়ামেই হয়ে থাকে। এবার প্যারিসের সিন নদীতে সেটি করার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় শুরু হবে অনুষ্ঠানটি। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলবে তা। এই আয়োজনের শেষটা সূর্যাস্ত হওয়ার সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়েছে। 

বিশ্বের নানান প্রান্ত থেকে আসা খেলোয়াড়েরা বিখ্যাত সিন নদীতে ৬ কিলোমিটার যাত্রা করবেন। তাদের নৌকায় চড়া শুরু হবে অস্টারলিটজ সেতু থেকে। ৭ হাজার ৫০০ জন ক্রীড়াবিদ অংশ নিবেন এই মহা আয়োজনে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস কোনো বাগড়া বাধানোর সম্ভাবনাও দেখাচ্ছে না।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অনেক কিছু গোপন রাখতে চেয়েছেন আয়োজকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের লেডি গাগা ও ফ্রান্সের আয়া নাকারুমার পারফর্ম করার গুঞ্জন রয়েছে। তবে নদীর তীর ও আইফেল টাওয়ারের আশেপাশের বিখ্যাত স্থাপনায় থেকে ৩ হাজার লোকের নৃত্য করার কথা রয়েছে। যে পরিবেশনের মাধ্যমে বৈচিত্র্য, লিঙ্গ সমতা ও ফ্রান্সের ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। 

আইফেল টাওয়ারের পাশের নদীতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্তত তিন লাখ দর্শক সমাগম হওয়ার কথা জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনও বড় আগ্রহ নিয়ে বসে আছেন। তার আশা, 'অবিশ্বাস্য একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।' 

ঐতিহ্য মেনে অলিম্পিকের জন্মভূমি গ্রিসই সবার আগে পতাকা বহন করবে। এরপর আসবে শরণার্থী অলিম্পিক দলগুলো। আর সবশেষে ফ্রান্সের ক্রীড়াবিদ হাজির হবেন। বাংলাদেশের পতাকা বহন করার দায়িত্ব পেয়েছেন আর্চার সাগর ইসলাম। 

ইউক্রেন যুদ্ধে ভূমিকার কারণে রাশিয়া ও বেলারুসকে এবারের অলিম্পিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এজন্য দুই দেশের অ্যাথলেটরা নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছেন না। ব্যক্তিগত পরিচয়ে তারা অংশ নিচ্ছেন। 

২০৬ দেশের ১০ হাজার ৫০০ জন ক্রীড়াবিদ প্যারিস অলিম্পিকের অংশ হবেন। বর্নাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার জন্য পঞ্চাশ হাজারের মতো কর্মী রাখা হয়েছে। স্টেডিয়ামের বাইরে প্রথমবারের মতো এত বড় আয়োজনের ঝুঁকি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ব্যতিক্রমী আয়োজনটি দীর্ঘদিন মনে রাখার মতো হবে, সেই আশাই করছেন আয়োজকেরা।

Comments