চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

রিয়ালকে আবার হারিয়ে সেমিফাইনালে আর্সেনাল

ছবি: এএফপি

রিয়াল মাদ্রিদের সামনে ছিল পাহাড় ডিঙিয়ে যাওয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গতবারের চ্যাম্পিয়নরা ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো পথ খুঁজে বের করতে পারল না। তাদের সাদামাটা পারফরম্যান্সের বিপরীতে কার্যকর খেলা উপহার দিল আর্সেনাল। স্প্যানিশ পরাশক্তিদের আবার হারিয়ে তারা জায়গা করে নিল ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে।

বুধবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগে রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ২-১ গোলে জিতেছে গানাররা। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে দাপট দেখিয়ে ৫-১ গোলের অগ্রগামিতায় আসরের শেষ চারের টিকিট কেটেছে ইংলিশ ক্লাবটি। গত সপ্তাহে প্রথম লেগে নিজেদের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে ৩-০ গোলের অসাধারণ জয় পেয়েছিল মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা।

গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ম্যাচের তিনটি গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। ৬৫তম মিনিটে ইংলিশ উইঙ্গার বুকায়ো সাকার নৈপুণ্যে সফরকারীরা এগিয়ে যায়। দুই মিনিটের মধ্যে রিয়াল সমতায় ফেরে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের লক্ষ্যভেদে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড ১৫ বারের শিরোপাজয়ীদের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি স্বাগতিকদের জালে বল পাঠিয়ে উল্লাসে মাতান আর্সেনালকে।

নিজেদের ইতিহাসে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে উঠল আর্সেনাল। এর আগে ২০০৫-০৬ মৌসুমে তারা ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে বার্সেলোনার কাছে হেরে হয়েছিল রানার্সআপ। আর শেষবার তারা শেষ চারে খেলেছিল ১৬ বছর আগে, ২০০৮-০৯ মৌসুমে। সেবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে হেরে থেমেছিল তাদের যাত্রা।

তিন গোলে পিছিয়ে থাকার ধাক্কা সামলে পরের রাউন্ডে যেতে প্রত্যাবর্তনের আরেকটি রূপকথা লিখতে হতো রিয়ালকে। কিন্তু কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের পারফরম্যান্সে ছিল না সেটার জন্য প্রয়োজনীয় ধার। উল্টো প্রথমে পিছিয়ে পড়ার পর সমতায় ফিরলেও শেষমেশ আরেকটি পরাজয় লেখা হয় তাদের নামের পাশে। গোলমুখে দলটির নেওয়া ১৮টি শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, আর্সেনাল ১১টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে ছয়টি।

ঘটনাবহুল প্রথমার্ধের তৃতীয় মিনিটেই বল জালে পাঠায় রিয়াল। তবে উল্লাসের সুযোগ মেলেনি তাদের। স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে ছিলেন স্পষ্ট অফসাইডে। উল্টো ত্রয়োদশ মিনিটে দুর্দশা বাড়তে পারত লস ব্লাঙ্কোদের। কিন্তু পেনাল্টি থেকে দুর্বল শটে সাকা গোল করতে ব্যর্থ হলে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয় আর্সেনালের। বল ঠেকিয়ে রিয়ালকে ম্যাচে রাখেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। রাউল আসেনসিও ডি-বক্সে মিকেল মেরিনোকে টেনে ফেলে দেওয়ায় রেফারি দিয়েছিলেন স্পট-কিকের সিদ্ধান্ত।

ছবি: এএফপি

২৩তম মিনিটে আবার পেনাল্টির বাঁশি বেজে ওঠে। এবার রিয়ালের পক্ষে। কিন্তু তা পরে বাতিল করে দেন রেফারি। সিদ্ধান্তটি নেওয়ার জন্য প্রায় পাঁচ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। ভিএআরের সাহায্যে রেফারি সন্তুষ্ট হন যে, এমবাপেকে ফাউল করেননি ডেকলান রাইস। ফলে প্রথম লেগে আর্সেনালের জয়ের নায়ককে শুরুতে দেখানো হলুদ কার্ডও ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

বিরতির ঠিক আগে ফের কোর্তোয়াকে এগিয়ে আসতে হয়। মার্তিনেল্লির দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন তিনি। অন্যদিকে, আর্সেনালের জমাট রক্ষণভাগ ও নিজেদের তারকাদের বিবর্ণতা মিলিয়ে প্রথমার্ধে একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি রিয়াল। প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে তাদেরকে অপেক্ষা করতে হয় ৫৬তম মিনিট পর্যন্ত। যদিও ভিনিসিয়ুসের দুর্বল শট সহজেই লুফে নেন ডেভিড রায়া।

কয়েক মিনিট পর গোটা স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দেন সাকা। স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড মেরিনোর রক্ষণচেরা পাস ছুটে গিয়ে ধরেন তিনি। এরপর বুদ্ধিদীপ্ত শটে আগুয়ান কোর্তোয়ার ওপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন। তখনই যেন বিদায় ঘণ্টা বেজে যায় রিয়ালের! তবে দুই মিনিটের মধ্যে স্কোরলাইন হয়ে যায় ১-১। এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহে হয়তো মনোযোগ নড়ে যাওয়াতেই ভুল করেন ডিফেন্ডার গাব্রিয়েল। রায়ার কাছ থেকে বল পাওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ তিনি রাখেন নিজের পায়ে। ভিনিসিয়ুসের ছুটে যাওয়া খেয়াল করেননি। সেই সুযোগে বল কেড়ে ডি-বক্সে ঢুকে ফাঁকা জালে পাঠিয়ে দেন ভিনিসিয়ুস।

রিয়াল সমতায় ফেরার পর অবিশ্বাস্য কিছু ঘটার যে সম্ভাবনা জেগে ওঠে, তা মিলিয়ে যেতে সময় লাগেনি। কারণ, দলটির খেলোয়াড়দের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত তাড়না দেখা যায়নি। উল্টো ব্যর্থতার বৃত্তেই বন্দি থাকতে হয় তাদের। যোগ করা সময়ে পাল্টা আক্রমণে ফের গোল হজম করে তারা। মেরিনোর থ্রু বল ধরে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে জাল কাঁপান মার্তিনেল্লি। কিছুক্ষণ বাদে শেষ বাঁশি বেজে উঠলে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায় আর্সেনালের ডেরায়।

ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আর্সেনালের প্রতিপক্ষ ফরাসি ক্লাব পিএসজি। আরেক ইংলিশ ক্লাব অ্যাস্টন ভিলাকে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিতে ঠাঁই করে নিয়েছে প্যারিসিয়ানরা।

Comments

The Daily Star  | English
Chattogram port Imports

Reducing penalty on false declarations will encourage smuggling: experts

In the Finance Ordinance 2025–26, presented on Monday, the government proposed amending the Customs Act 2023 and revising the penalty structure for tax evasion related to intentional false declarations during import clearance, reducing the minimum fine from twice the evaded amount to an equivale

2h ago