বার্সেলোনা আবারও শীর্ষে

লা লিগায় বার্সেলোনার পুনরায় শীর্ষস্থানে ফিরে আসা যেন অনিবার্য ছিল, বিশেষ করে 'নভেম্বর ধাক্কা' কাটিয়ে ২০২৫ সালে দুর্দান্ত এক প্রত্যাবর্তনের পর। নতুন বছরে কোনো ম্যাচই হারেনি দলটি, কেবল গেতাফের বিপক্ষে একটি ড্র করেছে তারা। আগের দিন রায়ো ভায়াকানোর বিপক্ষে দুর্দান্ত এক জয়ে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করে দলটি।
সোমবার রাতে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে লা লিগার ম্যাচে রায়ো ভায়াকানোকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। প্রথমার্ধেই স্পটকিক থেকে জয়সূচক গোলটি করেন পোলিশ তারকা রবার্ট লেভানদোভস্কি।
এই জয়ে ২৪ রাউন্ড শেষে ১৬টি জয় ও ৩টি ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট ৫১। সমান ম্যাচে রিয়ালের সংগ্রহও ৫১ পয়েন্ট। তবে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৫-২ ব্যবধানের জয়ে হেড টু হেডে এগিয়ে আছে তারা। এমনকি গোল ব্যবধানেও এগিয়ে। এক পয়েন্ট কম নিয়ে দুই দলের ঘাড়েই নিঃশ্বাস ফেলছে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ।
কিন্তু মন্তজুইয়ে বার্সেলোনাকে জয় তুলে ভুগতে হয়েছে বার্সেলোনাকে। রায়ো ভায়েকানো দেখিয়ে দিয়েছে কেন তারা সেরা ছয়ে থেকে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার স্থানগুলো দখল করে আছে। হাই প্রেসিং ও শক্তিশালী রক্ষণভাগের মাধ্যমে ম্যাচটিকে বেশ কঠিন করে তারা। কেবল মাত্র ভিএআরে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করতে সক্ষম হয় বার্সা। বার্সেলোনা শেষ পর্যন্ত জয় পেলেও ম্যাচের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি।
সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে বার্সেলোনা দাপুটে ফুটবল খেলে অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ঠিক সেভাবে এদিন খেলতে পারেনি। যেন ঘরের চেয়ে বাইরের মাঠেই তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। রায়ো বেশ কিছু ছন্দময় আক্রমণ করে সুযোগ তৈরি করে, কিন্তু তাদের বাধা হয়ে দাঁড়ান ক্রমশ কর্তৃত্বশীল হয়ে ওঠা বয়েচেক শেজনি ও রক্ষণে দুর্দান্ত ইনিগো মার্তিনেজ। শেষ দিকে রায়ো তাদের গোলরক্ষক বাতায়াকেও পর্যন্ত আক্রমণে পাঠায়।
সাম্প্রতিক সময়ে লা লিগায় বিতর্কিত রেফারিংয়ের অভিযোগের সময়ে ম্যাচের স্বচ্ছতাও ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভিএআরের সিদ্ধান্তগুলো ছিল ম্যাচের জন্য নির্ধারক। ডি-বক্সে ইনিগোকে পাথে সিসের করা একটি স্পষ্ট ফাউল ধরা পড়ে, যা থেকে পেনাল্টি পায় বার্সা। এবং লাইন্সম্যান রায়োর এক গোল অফসাইডের জন্য বাতিল করেন। বিতর্ক থাকলেও সিদ্ধান্ত দুটি নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।
পেদ্রি তার অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত খেলা দিয়ে আলো ছড়ান। তবে মাঝমাঠে রক্ষণভাগের সঠিক সমর্থনের অভাব ছিল এবং বার্সেলোনা বলের দখল ভালোভাবে রাখতে পারেনি, যার ফলে প্রতিপক্ষের দ্রুত আক্রমণে তারা ভুগেছে। সবচেয়ে বড় চমক ছিল হেক্টর ফোর্টের উপস্থিতি, কুন্দের অনুপস্থিতিতে তিনি রাইট-ব্যাকে খেললেন। আক্রমণে ভালোই ছিলেন, তবে রক্ষণে আলভারো ও ইসির বিরুদ্ধে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় তাকে।
রায়োর হাই প্রেসিংয়ের কারণে বার্সেলোনা প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে সেভাবে জায়গা তৈরি করতে পারেনি, লেভানদোভস্কির একাধিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সেটি সম্ভব হয়নি। কুবারসির লম্বা, সরাসরি পাস ছিল বিপজ্জনক সুযোগ তৈরির অন্যতম উপায়। লামিন ইয়ামালকে কড়া মার্কে রেখেছিলেন চাভারিয়া, ফলে তিনি বেশি কিছু করতে পারেননি। মূল আক্রমণ আসে বালদের বামপ্রান্ত থেকে, যিনি রাফিনহার সঙ্গে মিলে বেশ কিছু সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন। রাফিনহাকে দুর্দান্ত একটি ক্রসও দেন বালদে, তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন এই ব্রাজিলিয়ান।
Comments