সুন্দরতম স্বপ্নেও কখনো এটা ভাবতে পারিনি: হোসেলু
এক মৌসুমের জন্য ধারে ১২ বছর পর রিয়াল মাদ্রিদে খেলতে আসা হোসেলু নায়কে পরিণত হলেন। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল নিশ্চিত করার মঞ্চে তিনি কেড়ে নিলেন সব আলো। জোড়া গোল করে খাদের কিনারায় থাকা দলকে নাটকীয়ভাবে পৌঁছে দিলেন কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়। ম্যাচের পর স্প্যানিশ স্ট্রাইকার বললেন, তার সবচেয়ে সুন্দর স্বপ্নও এতটা আনন্দদায়ক ছিল না।
বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বায়ার্ন মিউনিখকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলের অগ্রগামিতায় কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা পেয়েছে ফাইনালের টিকিট। প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক মানুয়েল নয়্যারের ভুল ও বদলি ফরোয়ার্ড হোসেলুর নৈপুণ্যে অসাধারণ প্রত্যাবর্তনের আরেকটি অবিশ্বাস্য গল্প লিখেছে দলটি। অথচ আলফোনসো ডেভিসের গোলে ম্যাচের ৮৮তম মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে ছিল স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
৮১তম মিনিটে ফেদেরিকো ভালভার্দের পরিবর্তে মাঠে নামা হোসেলু রিয়ালকে সমতায় ফেরাতে নেন মাত্র আট মিনিট। ভিনিসিয়ুসের সোজাসুজি দুর্বল শট ঠেকাতে গিয়ে তালগোল পাকান নয়্যার। জার্মান গোলরক্ষকের অমার্জনীয় ভুলের সুযোগে আলগা বল জালে জড়িয়ে দেন হোসেলু। তার পরের গোল আসে স্রেফ তিন মিনিট পর। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে বাঁ দিক থেকে অ্যান্টোনিও রুডিগারের গোলমুখে বাড়ানো বল টোকা দিয়ে জালে পাঠান ৩৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
ম্যাচের পর অবশ্য নিজেকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে ভাবতে রাজী হননি হোসেলু। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নানা বাঁক পেরিয়ে রিয়ালে ফিরে আসা ফুটবলার আরও একবার তুলে ধরেন ক্লাবটির অদম্য মানসিকতা, 'নায়ক বা এরকম কিছু একদমই বুঝি না, তবে আমি খুবই খুশি… আমাকে দেখে ধারণা করে নিতে পারেন। অবিশ্বাস্য ছিল এটি, অসাধারণ কিছু। এই দল কখনোই হাল ছাড়ে না। শেষ পর্যন্ত লড়াই করাটা দলের রক্তেই আছে এবং আজ আমরা সেটাই করেছি।'
যুব দলের ধাপ পেরিয়ে ২০১১ সালে রিয়ালের মূল দলের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল হোসেলুর। বদলি নেমে গোলও পেয়েছিলেন। কিন্তু ওই এক ম্যাচেই থমকে যায় রিয়ালে তার প্রথম অধ্যায়। কারণ তারকায় ঠাসা দলটিতে সেসময় ছিলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, করিম বেনজেমা ও গঞ্জালো হিগুয়াইনের মতো ফরোয়ার্ডরা। এরপর বহু বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে এই মৌসুমে এস্পানিয়ল থেকে ধারে ফের রিয়ালে ঠাঁই পান হোসেলু। নিয়মিত মাঠে নামার সুযোগ না মিললেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তিনি।
তবে বায়ার্নের বিপক্ষে চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্সে আগের সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেছেন হোসেলু। ম্যাচশেষে কোচ আনচেলত্তি ও সতীর্থ জুড বেলিংহ্যামের কাছ থেকে ভূয়সী প্রশংসা পাওয়া স্ট্রাইকার অবশ্য এমন কিছু কল্পনাতেও আনতে পারেননি, 'এই ধরনের পারফরম্যান্সের স্বপ্ন সবাই দেখে। কিন্তু আজ যা হলো, আমার সুন্দরতম স্বপ্নেও কখনো এটা ভাবতে পারিনি।'
Comments