বেনজেমার গোলে ফের লিভারপুলকে হারিয়ে শেষ আটে রিয়াল
শেষ আটে যেতে হলে ইতিহাস গড়তে হতো ইংলিশ পরাশক্তি লিভারপুলকে। তবে প্রথম লেগে তিন গোলের ব্যবধানে হারা দলটি সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতেও রইল দ্বিতীয় সেরা হয়ে। করিম বেনজেমার লক্ষ্যভেদে তাদেরকে ফের হারাল রিয়াল মাদ্রিদ। দাপুটে পারফরম্যান্সে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা পা রাখল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে।
বুধবার রাতে ঘরের মাঠে শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে ১-০ ব্যবধানে জিতেছে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে রিয়ালের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন অভিজ্ঞ ফরাসি স্ট্রাইকার বেনজেমা। তাকে বলের যোগান দেন তরুণ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
দুই দলের আগের দেখায় লিভারপুলকে তাদের মাঠ অ্যানফিল্ডেই ৫-২ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল লস ব্লাঙ্কোরা। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৬-২ গোলের অগ্রগামিতায় স্প্যানিশ জায়ান্টরা পেয়েছে পরের পর্বের টিকিট।
প্রথম লেগেই মূলত দ্বৈরথের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। দ্বিতীয় লেগে ঘটেনি নাটকীয় কিছু। লিভারপুলকে গত মাসে বিধ্বস্ত করায় মূল ভূমিকা রেখেছিলেন বেনজেমা ও ভিনিসিয়ুস। দুজনই করেছিলেন দুটি করে গোল ও একটি করে অ্যাসিস্ট। এই ম্যাচেও তারা নজর কেড়ে স্বাগতিকদের পাইয়ে দেন জয়।
বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করে রিয়াল। গোলমুখে তাদের নেওয়া ১৭টি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল আটটি। বিপরীতে, লিভারপুলের নয়টি শটের মধ্যে পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।
সপ্তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি পায় লিভারপুল। তবে দারউইন নুনেজ নিতে পারেন কেবল দুর্বল একটি শট। সেটা অনায়াসে ঠেকিয়ে রিয়ালের জাল অক্ষত রাখেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। সাত মিনিট পর অন্যপ্রান্তে তৈরি হয় গোলের সম্ভাবনা। তবে অ্যান্টোনিও রুডিগারের হেডে ভিনিসিয়ুসের প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেন গোলরক্ষক অ্যালিসন।
২০তম মিনিটে প্রায় এগিয়েই গিয়েছিল রিয়াল। ডি-বক্সের বাইরে থেকে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা নেন জোরালো শট। তা অ্যালিসনের হাত ছুঁয়ে ক্রসবারে বাধা পেয়ে ফিরে আসে। দুই মিনিট পর লুকা মদ্রিচের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৩৪ ও ৩৬তম মিনিটে লিভারপুলকে গোলবঞ্চিত করেন কোর্তোয়া। প্রথমে দূরের পোস্টে মারা নুনেজের বাঁকানো শট সেভ করেন তিনি। এরপর দুরূহ কোণ থেকে কোডি গাকপোর কাছের পোস্টে নেওয়া জোরালো শটও আটকান।
বিরতির পর লিভারপুলকে চেপে ধরে আক্রমণে ধার বাড়ায় রিয়াল। তবে ফের তাদের সামনে বাধার নিরেট দেয়াল হিসেবে আবির্ভূত হন অ্যালিসন। ৫৪তম মিনিটে ফেদে ভালভার্দের খুব কাছ থেকে নেওয়া শট ঠেকান তিনি। নয় মিনিট পর আবার হতাশ হয় চ্যম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা। এবার ডি-বক্সের ভেতর থেকে ভালভার্দের হেড চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে।
৬৯তম মিনিটে বেনজেমা হাতছাড়া করেন সুবর্ণ এক সুযোগ। ভিনিসিয়ুসের ক্রসে বল পাওয়ার পর কেবল অ্যালিসনকে পরাস্ত করতে হতো তার। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে বল উড়িয়ে মারেন তিনি।
অবশেষে ৭৮তম মিনিটে প্রত্যাশিত গোলের দেখা পায় আনচেলত্তির দল। মাঝমাঠ থেকে কামাভিঙ্গার বাড়ানো উঁচু পাস নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি বেনজেমা। লিভারপুলের ভার্জিল ফন ডাইকের পায়ে লেগে বল যায় ভিনিসিয়ুসের কাছে। ডি-বক্সের ভেতরে তিনি ঠিকমতো শট নিতে ব্যর্থ হন। তবে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গেলেও কোনোক্রমে খুঁজে নেন বেনজেমাকে। বাকিটা ঘটে অনুমিতভাবে।
পিছিয়ে পড়ে ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যদের ক্ষীণ আশাও শেষ হয়ে যায়। বাকিটা সময় লিড ধরে রেখে শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ীর হাসি হাসে রিয়াল। তাদের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আট নিশ্চিত করেছে বায়ার্ন মিউনিখ, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, বেনফিকা, এসি মিলান, ইন্টার মিলান ও নাপোলি।
Comments