‘বাজে দিন যে কারও হতে পারে’

শ্রীলঙ্কার কাছে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সাত উইকেটে হার মেনে নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এই হারের চেয়ে ক্ষত বেশি ছিল হারের ধরনে। তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতাই করতে পারেনি দলটি। অনায়াসে হেসে খেলেই জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। তবে টাইগার অধিনায়ক লিটন দাস বললেন, 'বাজে দিন যে কারও হতে পারে'।
পাল্লেকেলের ব্যাটিং স্বর্গে আগে ব্যাটিং করতে স্কোরবোর্ডে পর্যাপ্ত রান করতে পারেনি বাংলাদেশ। ১৫৪ রানের পুঁজি নিয়ে বোলাররাও পারেননি কিছু করতে। সাদামাটা বোলিংয়ে লঙ্কান দুই ওপেনারের দানবীয় ব্যাটিং। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক লিটন দাস দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, 'আমাদের মূল বোলার আজ ভালো করতে পারেনি, আর ব্যাটাররা পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী দায়িত্ব নিতে পারেনি।'
বৃহস্পতিবার পাল্লেকেলেতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। পাওয়ারপ্লেতে ৫৪-১ রান তোলার ভালো সূচনা হলেও মাঝের ওভারগুলোতে ব্যাটারদের মন্থর ব্যাটিংয়ের কারণে ইনিংস থমকে যায়। সাধারণত ওপেনিংয়ে নামা মোহাম্মদ নাইম চার নম্বরে নেমে ২৯ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন। মেহেদী হাসান মিরাজ (২৩ বলে ২৯) এবং তৌহিদ হৃদয় (১৩ বলে ১০), দুজনেই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে খেলতে ব্যর্থ হন।
অধিনায়ক লিটন দাস নিজেও ব্যর্থ হন ব্যাট হাতে। ১১ বল খেলে মাত্র ৬ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন। দলে একমাত্র আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন (২২ বলে ৩৮) ও শামীম হোসেন (৫ বলে ১৪ রান, দুটি ছক্কাসহ)।
ম্যাচ শেষে লিটন বলেন, 'আমরা খুব বেশি রান তুলতে পারিনি। কয়েকটি বল নিচু হয়ে এসেছে, ইনিংসের দ্বিতীয়ার্ধেও এমনটাই হয়েছে। শুধু আজ নয়, গত ৭-৮ ম্যাচ ধরেই যারা ক্রিজে সেট হয়ে যায়, তাদের দায়িত্ব নিতে হবে।'
ম্যাচের ভাগ্য আসলে শুরুতেই নির্ধারিত হয়ে যায় নিসাঙ্কা ও মেন্ডিসের বিধ্বংসী ওপেনিং জুটিতে। মাত্র ২৮ বলে ৭৮ রান তুলে ফেলে তারা। প্রথম ওভারেই ফিরে আসা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে টানা তিন চার মেরে ইনিংসের রণধ্বনি বাজান নিসাঙ্কা। তাসকিন দ্বিতীয় ও চতুর্থ ওভারে যথাক্রমে ১৬ ও ১৮ রান দেন। তানজিম সাকিব তৃতীয় ওভারে দেন ১৬ রান। শেষমেশ মিরাজের হাত ধরেই ভাঙে এই জুটি। ১৬ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪২ রান করা নিসাঙ্কা মিড-অনে ক্যাচ দেন।
তবে ততক্ষণে শ্রীলঙ্কা গড়ে তোলে তাদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ পাওয়ারপ্লে রান ৮৩/১। বাকি রান তাড়া করতেও খুব একটা কষ্ট হয়নি। ৬ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় তারা। মেন্ডিস খেলেন ৫১ বলে ৭৩ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস।
স্পিনার রিশাদ হোসেন ও মিরাজ দুজনেই ২৪ রান দিয়ে ১টি করে উইকেট নেন। তবে সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলার তাসকিন ছিলেন হতাশাজনক, তিন ওভারে দেন ৪৩ রান, উইকেট শূন্য।
লিটন বলেন, 'আমার মনে হয়েছিল ১৭০ রান হলে আমাদের বোলারদের জন্য যথেষ্ট হতো। কিন্তু ওরা ভালো করতে পারেনি। তাসকিন আমাদের মূল বোলার, তবে বাজে দিন যেকারও হতে পারে। রিশাদ ভালো বোলিং করেছে। এমন উইকেটে যদি সঠিক জায়গায় বল করা যায়, ব্যাটারদের খেলতে অসুবিধা হয়।'
সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে আগামী রোববার, ডাম্বুলায়।
Comments