পাকিস্তানে তেতো অভিজ্ঞতা: কোচিং ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়েই সংশয়ে গিলেস্পি

খেলোয়াড়ি জীবনের ইতি টানার পর কোচিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিয়েছেন জেসন গিলেস্পি। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার গত দেড় দশক ধরে পূর্ণমেয়াদে কাজ করেছেন বিভিন্ন দলের সঙ্গে। কিন্তু পাকিস্তানে গিয়ে ভীষণ বাজে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। এতে কোচিংয়ের প্রতি তার 'ভালোবাসায় তিক্ততা' চলে এসেছে। এমনকি বর্তমানে নিজ দেশ থেকে লম্বা সময়ের জন্য প্রধান কোচ হওয়ার আমন্ত্রণ পেলেও তা প্রত্যাখ্যান করে দেবেন!
গত বছরের এপ্রিলে দুই বছরের জন্য গিলেস্পিকে টেস্ট দলের প্রধান কোচ করেছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। এরপর অক্টোবরে সীমিত ওভারের দুটি সংস্করণের দলেরও দায়িত্ব পান তিনি। কিন্তু মধুর সময় টেকেনি বেশিদিন। পরের মাসেই তাকে সরিয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের ভারপ্রাপ্ত কোচ করা হয় পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার আকিব জাভেদকে। এরপর ডিসেম্বরে টেস্ট দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন গিলেস্পি। গত দুই বছরে সব মিলিয়ে ১৬ জন কোচ ও ২৬ জন নির্বাচক পরিবর্তন করেছে পিসিবি।
৪৯ বছর বয়সী গিলেস্পির পাকিস্তান জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করার সময়টা সুখকর হয়নি। অস্থির পরিস্থিতিতে হতাশা জেঁকে ধরেছিল তাকে। সেটা থেকে এখনও বের হতে পারছেন না তিনি। ফলে লম্বা সময়ের জন্য কোনো দলের কোচ হওয়ার মানসিক অবস্থা নেই তার। উইজডেন ক্রিকেট উইকলি পডকাস্টে গিলেস্পি বলেছেন, 'এই মুহূর্তে, আমি পূর্ণকালীন কোচিংয়ে আগ্রহী কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত নই। (যদি অস্ট্রেলিয়া থেকেও কোচ হওয়ার ডাক আসে) না, আমি আগ্রহী নই।'
পাকিস্তানে মাত্র আট মাস থাকলেও সেখানকার অভিজ্ঞতা এতই করুণ যে, কোচিং ক্যারিয়ার নিয়ে উদ্যম হারিয়ে ফেলেছেন গিলস্পি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২০০৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন বোলার যোগ করেছেন, 'সত্যি বলতে, পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা কোচিংয়ের প্রতি আমার ভালোবাসায় তিক্ততা এনে দিয়েছে। আমি আগ্রহটা ফিরে পাব, আমি নিশ্চিত যে আবার ফিরে পাব, কিন্তু এটা সত্যিই একটা ধাক্কা ছিল। সবকিছু যেভাবে শেষ হয়েছে তা সত্যিই আমাকে হতাশ করেছে।'
আন্তর্জাতিক মঞ্চে ৭১ টেস্ট ও ৯৭ ওয়ানডে খেলা গিলেস্পি জানিয়েছেন, আপাতত কেবল স্বল্পমেয়াদে কোচিং করানোর পরিকল্পনা রয়েছে তার, 'আমি বিভিন্ন লিগে এবং স্বল্পমেয়াদে কিছু কোচিং করাতে বা পরামর্শক হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত আছি। তবে পূর্ণকালীন কোচের ভূমিকার কথা বলতে গেলে, এটি এখন আর আমার এজেন্ডায় নেই। আমি গত ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময়ে পূর্ণমেয়াদে কোচিং করিয়েছি। তবে এখন আমার মনে হচ্ছে, অন্য কিছু করার সময় এসেছে।'
দায়িত্বে থাকাকালীন দলের মধ্যে কোন্দল যেমন দেখেছেন গিলেস্পি, তেমনি পিসিবির সঙ্গে তার যোগাযোগেও ছিল অনেক ভুল বোঝাবুঝি। গোলমাল আরও বাড়িয়ে দেয় জাভেদের সঙ্গে তার পারস্পরিক দ্বন্দ্ব। আরও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো, গিলেস্পি পদত্যাগ করার পর জাভেদই সব সংস্করণের ক্রিকেটে পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচের ভূমিকা পালন করছেন।
Comments