শেষ ওভারের রোমাঞ্চে হেরে আইরিশদের কাছে হোয়াইটওয়াশড বাংলাদেশ
ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে আয়ারল্যান্ডের দরকার ছিলো ১৫ রান। মন্থর উইকেটে সমীকরণ মোটেও সহজ না। তবে সেই কাজটা দারুণ ব্যাটিংয়ে করে নিলেন লাউরা ডেলানি। স্বর্ণা আক্তারকে তিন চারে হতাশ করে তার দলকে পাইয়ে দিলেন স্মরণীয় জয়। আগেই সিরিজ হারা বাংলাদেশ শেষ ম্যাচেও পেল না সান্ত্বনা।
সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়ে আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের করা ১২৩ রান তারা টপকে গেছে ১ বল আগে।
ম্যাচ জেতানো ইনিংসে ৩১ বলে ৩৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ডেলানি। এতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করল আয়ারল্যান্ড।
স্বর্ণার ওভারের প্রথম বলেই ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন আরলিনা কেলি। পরের বলে লং অফে ক্যাচ দিয়েছিলেন ডেলানি, সেই ক্যাচ জান্নাতুল সুমনার হাত ফসকে গেলে আসে আরও ২ রান। এরপরের দুই বলে স্ট্রেট ড্রাইভ, কাভার ড্রাইভে আসে দুই চার। ২ বলে ৪ রানের চাহিদায় লং অফের ফিল্ডার উপরে দেখে উড়িয়ে মারেন ডেলানি, সেটার নাগাল পাননি জান্নাতুল। টানা তিন চারে ম্যাচ জিতে উল্লাসে মাতেন ডেলানি। হতাশায় কাবু হয়ে যায় বাংলাদেশ দল।
১২৪ রানের লক্ষ্য নেমে দারুণ শুরু পায় আয়ারল্যান্ড। এমি হান্টার-গ্যাবি লুইস মিলে অনায়াসে বাড়াতে থাকেন রান। তাদের ব্যাটিংয়ে এক সময় মনে হচ্ছিলো শরীরী ভাষা নেতিয়ে পড়েছে স্বাগতিক দলের। তবে ওপেনিং জুটি ভাঙার পর ম্যাচে খুব ভালোভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশ।
৮ম ওভারে ২৪ বলে ২৮ করা হান্টারকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা। ৫৫ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ৬৩ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট। রাবেয়া খানের বলে ফিরে যান ২৪ বলে ২১ করা আইরিশ অধিনায়ক। খানিক পর রান আউটে কাটা পড়েন ছন্দে থাকা লিয়া পল। আরও ৬ রান পর অরলা পেন্ডারগাস্টকে রাবেয়া আউট করে ফেললে ম্যাচ তখন স্বাগতিকদের মুঠোয় চলে এসেছিলো।
এরপরই ছবি বদলাতে থাকেন ডেলানি। রেবেকা স্টকেলকে নিয়ে যোগ করেন ৩৩ রান। রেবাকার বিদায়ের পর দলকে একা টেনে ম্যাচ জিতিয়ে ফেরেন আয়ারল্যান্ডে ক্রিকেট পরিবারের মেয়ে ডেলানি।
আগের দুই ম্যাচ আগে ব্যাট করে জেতা আয়ারল্যান্ড রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ নিয়েও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে।
আগের দুই ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া আয়ারল্যান্ড সকালের আবহাওয়ায় এবার নেয় ফিল্ডিং। ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা বেশ ভালো। সেটা আসে সোবহানা মুশতারির হাত ধরে। দিলারা আক্তারের বদলে মুরশিদা খাতুন বেশিক্ষণ টেকেননি। চতুর্থ পভারে দলের ৩৩ রানে ১২ রান করা মুরশিদা ফিরে যান।
এরপর শারমিন আক্তার সুপ্তার সঙ্গে দারুণ জুটি গড়েন সোবহানা। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৮ বলে তারা যোগ করেন ৭১ রান। তাদের জুটিতে বেশ ভালো অবস্থায় যাওয়ার আভাস তৈরি হয়েছিলো। তবে ৩৩ বলে ৩৪ করে সুপ্তার বিদায়ের পর উল্টো স্রোতে হাঁটা শুরু। খানিক পর ৪৩ বলে ৪৫ করে ফেরেন সোবহানাও। এরপর নিগার সুলতানা জ্যোতি, স্বর্ণা আক্তার, রিতু মনিরা একে একে দ্রুত ফিরে গেলে বড় পুঁজির আশা মিলিয়ে যায় বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের ইনিংসে বড় হন্তারক আবারও আইরিশ পেসার অরলা প্রেন্ডারগাস্ট। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে তিনি নেন ৪ উইকেট।
উইকেটে মন্থরতা থাকায় এই পুঁজি নিয়েও অবশ্য জেতা সম্ভব ছিলো, সেই পরিস্থিতিও এসেছিলো। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ওয়ানডে সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলেও টি-টোয়েন্টিতে নিজেরা হোয়াইটওয়াশ হয়ে সিরিজ শেষ করল নিগার সুলতানা জ্যোতি।
Comments