ঘরের মাঠে ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা উইন্ডিজের

ছবি: সংগৃহীত

মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে চার মারলেন শামার জোসেফ। পূর্ণ হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাড়ে চারশ রান। সঙ্গে সঙ্গে এলো ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্ত। টেস্টে ঘরের মাঠে ১০ বছরের মধ্যে এটিই তাদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। সেখানে বড় অবদান ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকা জাস্টিন গ্রিভসের।

শনিবার অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় সেশন চলাকালীন ৯ উইকেটে ৪৫০ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে ক্যারিবিয়ানরা। আগের দিনের ৫ উইকেটে ২৫০ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল তারা। এদিন বাংলাদেশকে হতাশ করে ৪ উইকেটে আরও ২০০ রান যোগ করেছে দলটি।

ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলীন সংস্করণে গত এক দশকে নিজেদের মাটিতে এত বড় পুঁজি পায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগের নজিরটিও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সেপ্টেম্বরে কিংসটাউনে ৭ উইকেটে ৪৮৪ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল স্বাগতিকরা।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে গ্রিভস খেলেন ১১৫ রানের অপরাজিত ইনিংস। কোনো ঝুঁকি না নিয়ে ২০৬ বল মোকাবিলায় মাত্র চারটি চার মারেন তিনি। দ্বিতীয় সেশনে একবার অবশ্য তাসকিন আহমেদের বলে বাংলাদেশ কট বিহাইন্ডের আপিল না করায় জীবন পেয়েছিলেন। তখন ৭৭ রানে খেলছিলেন। ছয়ে নেমে নিচের দিকের ব্যাটারদের নিয়ে রান বাড়ানোর মূল কাজটা করেন তিনি।

আগের দিন মিকাইল লুই (২১৮ বলে ৯৭ রান) ও আলিক আথানেজ (১৩০ বলে ৯০ রান) নড়বড়ে নব্বইয়ে কাটা পড়েছিলেন। সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করেননি সাদা পোশাকে মাত্র তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামা গ্রিভস। টেস্টে ১০ মাস পর সুযোগ পেয়ে মাটি কামড়ে ১৮১ বলে তিন অঙ্কে পৌঁছে যান তিনি।

২৬১ রানে সপ্তম উইকেটের পতনের পর কেমার রোচের সঙ্গে গ্রিভস গড়েন ১৪০ রানের রেকর্ড জুটি। টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে অষ্টম উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি। নয়ে নামা রোচ আউট হওয়ার আগে ১৪৪ বলে করেন ক্যারিয়ারসেরা ৪৭ রান। তিনি শূন্য রানে থাকাকালীন হাসান মাহমুদের বলে বেঁচে গিয়েছিলেন আম্পায়ার্স কলে।

ক্যারিবিয়ানরা চা বিরতিতে গিয়েছিল ৮ উইকেটে ৪১৫ রান নিয়ে। ফিরে এসে ৫.১ ওভারে আরও ৩৫ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে তারা। হারায় কেবল জেডেন সিলসের উইকেট। বাংলাদেশের অধিনায়ক মিরাজকে ছক্কা মারার পরের বলে পুনরাবৃত্তির চেষ্টায় তিনি ধরা পড়েন হাসান মাহমুদের হাতে। একটি করে চার ও ছক্কায় তার সংগ্রহ ২৫ বলে ১৮ রান। শামার অপরাজিত থাকেন দুটি চারের সাহায্যে ৮ বলে ১১ রানে।

টাইগারদের হয়ে ৮৭ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন পেসার হাসান। সবকটি শিকারই তিনি ধরেন এদিন। দিনের শুরুতে জশুয়া ডা সিলভা (২৩ বলে দুটি চারে ১৪ রান) ও আলজারি জোসেফকে (৮ বলে একটি চারে ৪ রান) বিদায় করে বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত শুরু এনে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই স্বস্তি উবে যায় গ্রিভস ও রোচের বড় জুটিতে।

অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন ৭৬ রানে পান ২ উইকেট। অফ স্পিনার মিরাজ সমান সংখ্যক উইকেট নিতে খরচ করেন ৯৯ রান। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ১ উইকেট নিতে দেন ১১১ রান। আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম ৫৩ রানে কোনো উইকেট পাননি।

রেকর্ডের মালিক হন চলতি বছরেরই মার্চে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হওয়া হাসানও। টেস্টে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের কীর্তি গড়েন তিনি। ২০২৪ সালে ৮ টেস্টের ১৩ ইনিংসে নিয়েছেন ২৬ উইকেট। ১৬ বছরের কীর্তি ভেঙে দিয়েছেন তিনি। ২০০৮ সালে ৯ টেস্টের ১৪ ইনিংসে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh garment exports face US tariff hike

Can Bangladesh retain its foothold in US market?

As Bangladesh races against a July 9 deadline to secure a lower tariff regime with the United States, the stakes could not be higher.

16h ago