ক্রিকেট-রাজনীতি লড়াইয়ে ঝুলছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভাগ্য 

Champions Trophy

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভবিষ্যৎ এখনো ঝুলন্ত। ভারত পাকিস্তানে দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার পর আইসিসির কাছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড  (পিসিবি) পুরো বিষয়টা স্পষ্ট করার আহবান জানিয়েছে।

পিসিবির গণমাধ্যম বিভাগের প্রধান সামি-উল-হাসান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, 'চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পাকিস্তান সফর না করার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পিসিবি আইসিসি কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে।'

পারমানবিক শক্তি সম্পন্ন চির বৈরী দুই দেশের রাজনীতির ক্রিকেটে নাক গলানোর এটা আরেক উদাহরণ। প্রায় এক দশক ধরে দুই দেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ বন্ধ। কেবল মাত্র বৈশ্বিক আসরেই দেখা হয় তাদের।

ভারতীয় ক্রিকেট দল ২০০৮ সালে এশিয়া কাপ খেলতে সর্বশেষ পাকিস্তানে গিয়েছিল। ২০০৯ সালে পাকিস্তানে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের উপর হামলা হলে দেশটিতে সব দেশেরই খেলা বেশ কিছু বছর বন্ধ থাকে। একই বছর মুম্বাইতে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের দ্বি-পাক্ষিক সিরিজেও ভাটা পড়ে। ২০১৩ সালে সাদা বলের সিরিজ খেলতে ভারতে গিয়েছিলো পাকিস্তান। এরপর থেকে দুই দলের আর কোন দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ হয়নি।

১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ ভেঙে এই দুই দেশের জন্ম হলেও শান্তি ফেরেনি। তিনবার তারা জড়ায় যুদ্ধে, যার প্রভাব পড়ে ক্রিকেটেও। রাজনৈতিক এই বৈরিতার কারণেই ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচে ছড়ায় বাহ্যিক উত্তাপ। এই দলের ম্যাচই ক্রিকেট বর্ষসূচিতে সবচেয়ে দর্শকপ্রিয় খেলা।

মঙ্গলবার পাকিস্তানের গণমাধ্যম জানায়, ভারতের নিরাপত্তার কারণ গ্রহণ করতে রাজী নয় পিসিবি। গত দুই বছরে নিউজিল্যান্ড দল তিনবার পাকিস্তান সফর করেছে, ইংল্যান্ড সফরে গেছে দুইবার, অস্ট্রেলিয়া গেছে একবার।

পাকিস্তান গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিলো ভারতে, পিসিবি আশা করেছিলো ভারতও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে ভারতে এসে সম্মান দেবে।

গত বছর এশিয়া কাপেরও আয়োজক ছিলো পাকিস্তান। ভারতের না যাওয়া নিয়ে তখনো তৈরি হয় টানাপড়েন, শেষ পর্যন্ত ভারতের সিদ্ধান্ত মেনে এশিয়া কাপ হয় হাইব্রিড মডেলে। ভারতের খেলাগুলো হয়েছিলো শ্রীলঙ্কা, ভারত ফাইনালে যাওয়ায় ফাইনালও হয় লঙ্কাতে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য এবার তিনটা ভেন্যু ঠিক করেছে পাকিস্তান, খেলা হবে লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি ও করাচিতে। আসছে বছর টুর্নামেন্ট শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি, ফাইনাল হবে ৯ মার্চ।

এই সপ্তাহেই চূড়ান্ত সূচি প্রকাশিত হওয়ার কথা। তবে ভারতের সিদ্ধান্তের পর সব কিছু ঝুলে গেছে। এই নিয়ে চরম হতাশ পিসিবি সভাপতি মহসিন নাকভি, যিনি আবার দেশটির একজন মন্ত্রীও, 'প্রায় সব দেশই চায় টুর্নামেন্টটা পাকিস্তানে আয়োজিত হোক। তারা যদি না আসে এটা চরম হতাশার।' 

'আমার মনে হয় না এটা রাজনৈতিকভাবে দেখা উচিত। আমরা প্রত্যেক দলকে যতটা সম্ভব সুবিধা দেব।'

এর আগে ভারতের প্রস্তাব করা হাইব্রিড মডেল প্রত্যাখ্যান করেন নাকভি। এশিয়া কাপের মতন করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনে রাজী নন তিনি।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) আইসিসিতে বেশ শক্তিশালী অবস্থান রাখে। যেকোনো আসরে ভারতের খেলা মানেও সম্প্রচার স্বত্বতে মোটা অঙ্কের আয়। আইসিসি ভারতকে ছাড়া টুর্নামেন্ট আয়োজনের ক্ষতি দিকে যাওয়া কঠিন। তবে চলমান পরিস্থিতিতে দুই দেশকে নিয়ে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসতে হবে তাদেরকেই।

এই অবস্থায় ভারত যদি পাকিস্তানে আসতে রাজী না হয় তবে পাকিস্তানও আগামীতে কোন আসর খেলতে ভারতে যাবে না বলে জানিয়েছেন নাকভি। তিনি বলেন, 'পাকিস্তান এর আগে অনেক সম্মান দেখিয়েছে, আওরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই ভারত বারবার বন্ধুত্বপূর্ণ এমন উষ্ণতা নাও পেতে পারে।'

আগামী বছর মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের আয়োজক ভারত। ২০২৬ সালে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরও আয়োজক ভারত।

Comments

The Daily Star  | English

Leading univs withdrawing from cluster system

Undergraduate admission tests under the cluster system faces uncertainty for the 2024-25 academic year, as several prominent universities have decided to withdraw and conduct their own admission tests independently. 

9h ago