টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দৌড়ে পাঁচ দল
ভারতকে প্রথমবারের মতন ভারতের মাঠে টেস্ট সিরিজে হারিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জমিয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের সম্ভাবনায় যদি, কিন্তুর সমীকরণ বেশ জমে উঠেছে। সেরা দুই স্থানের লড়াইয়ে আছে পাঁচ দল।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের চক্রের আর ২০ টেস্ট বাকি। এরমধ্যে ভারত, অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে থাকলেও হিসেব উলটপালট হতে পারে অনেক। দেখে নেওয়া যাক কার কেমন অবস্থা।
ভারত
(পয়েন্ট শতাংশ: ৬২.৮২, ম্যাচ বাকি- (নিউজিল্যান্ডেরর বিপক্ষে ঘরের মাঠে এক, অস্ট্রেলিয়া সফরে পাঁচ)
নিউজিল্যান্ডের কাছে টানা দুই হারের পর উড়তে থাকা ভারত খেয়েছে বড় ধাক্কা। ফাইনাল নিশ্চিত করতে মুম্বাইতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টে জিততেই হবে ভারতকে। এরপর অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে সিরিজ জিততে হবে অন্তত ৩-২ ব্যবধানে। তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ৬৪.০৪%। (স্লো ওভাররেটে কোন পয়েন্ট কাটা না পড়লে)
অস্ট্রেলিয়া যদি ভারতের কাছ ৩-২ ব্যবধানে হেরে শ্রীলঙ্কা সফরে ২-০ ব্যবধানে জেতে তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ৬০.৫৩%। নিউজিল্যান্ড যদি ইংল্যান্ডকে ঘরের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে হারায় তখন তারা শেষ করবে ৫৭.১৪% পয়েন্টে। তখন দক্ষিণ আফ্রিকা একমাত্র দল যারা ভারতকে টপকে যেতে পারে যদি অস্ট্রেলিয়া-ভারত সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র হয়।
ভারত যদি নিউজিল্যান্ডের কাছে মুম্বাইতে হারে, নিউজিল্যান্ড ৬৪.২৯% পয়েন্টে শেষ করার সুযোগ পাবে, যদি তারা ইংল্যান্ডকেও ৩-০ ব্যবধানে হারায়। তখন ভারতকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের কোন ম্যাচ হারা যাবে না। পাঁচ ম্যাচে অন্তত ৪ জয়, আর এক ড্র করতে হবে।
অন্য দলগুলো খারাপ করলে অবশ্য কম জয় নিয়েও সেরা দুইয়ে থাকতে পারবে ভারত। ধরা যাক নিউজিল্যান্ড মুম্বাইতে হেরে ইংল্যান্ডের কাছেও ২-০ ব্যবধানে হারল। তখন তাদের পয়েন্ট হবে ৫২.৩৮%। দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের বাকি পাঁচ টেস্টের মধ্যেও অন্তত একটা হারলে তারা অর্জন করবে ৬১.১১%। অস্ট্রেলিয়া ভারতকে ৩-২ টেস্টে হারিয়েও শ্রীলঙ্কাই গিয়ে যদি ১-১ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করে তবে তারা শেষ করবে ৬০.৫৩% পয়েন্টে।
নিউজিল্যান্ড
পয়েন্ট শতাংশ- ৫০% (ম্যাচ বাকি ভারতের বিপক্ষে এক ম্যাচ, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন টেস্ট)
ভারত সফর শুরুর আগে ফাইনালের সম্ভাবনায় ছিলো না নিউজিল্যান্ড। অনেক পিছিয়ে সেই তারাই এখন ফাইনালে চলে যেতে পারে। তাদের হাতে থাকা বাকি ৪ টেস্টের সবগুলো জিতলে পয়েন্ট হবে ৬৪.২৯%। এটা ফাইনাল নিশ্চিত না করলেও তাদের অনেকটাই নিশ্চিত করে দেবে। কিন্তু একটা টেস্ট হারলেই তারা নেমে আসবে ৫৭.১৪% পয়েন্টে। তখন আর কোন সুযোগ থাকবে না।
দক্ষিণ আফ্রিকা
পয়েন্ট শতাংশ- ৪৭.৬২% (ম্যাচ বাকি- বাংলাদেশের মাঠে একটি, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুটি করে চার টেস্ট)
বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট জিতে নিজেদের ভালোভাবে লড়াইয়ে নিয়ে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়ারা যদি তাদের হাতে থাকা বাকি পাঁচ টেস্টের সবগুলোই জিতে যায় তাহলে ৬৯.৪৪% পয়েন্ট নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলবে। চার জয় ও এক ড্র করলে তাদের পয়েন্ট হবে ৬৩.৮৯%, চার জয় ও এক হারে পয়েন্ট হবে ৬১.১১% পয়েন্ট। তখনো থাকবে ফাইনালের সুযোগ, সেক্ষেত্রে অন্যদের ফলের হিসেব আসবে। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য তুলনামূলক সহায়ক সম্ভাবনা। বাংলাদেশকে যদি তারা চট্টগ্রাম টেস্টে হারায় তাহলে বাকি চারটা টেস্টেই তারা খেলবে ঘরের মাঠে। নিজেদের কন্ডিশনের সুবিধাও পাবে তারা।
শ্রীলঙ্কা
পয়েন্ট শতাংশ- ৫৫.৫৬% (দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে দুই ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুই টেস্ট বাকি)
ফাইনালে যাওয়ার ভালোই সম্ভাবনা আছে শ্রীলঙ্কারও। বাকি চার টেস্ট জিতলে ৬৯.২৩% পয়েন্ট নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করতে পারবে তারা। যদি এরমধ্যে এক ম্যাচ হারে তাহলে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৬১.৫৪%। তখনো তাদের সম্ভাবনা থাকবে, নির্ভর করবে অন্য ম্যাচগুলোর ফলের উপর।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে থাকা বাকি চার দল ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাইনালে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। নিজেদের বাকি থাকা ম্যাচগুলো জিতলেও পর্যাপ্ত পয়েন্ট হবে না তাদের।
Comments