১৩৭ বছরের পুরনো কীর্তির পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে ভারত?

সরফরাজ খান। ছবি: এএফপি

তৃতীয় দিনের ৩ উইকেটে ২৩১ রান নিয়ে খেলতে নামল ভারত। ক্রিজে আগে থেকে সাবলীল থাকা সরফরাজ খানের সঙ্গে জমে গেল রিশব পান্তের জুটি। দুজনকে আলাদা করার কোনো উপায় যেন মিলছিল না নিউজিল্যান্ডের। এমন পরিস্থিতিতে আশীর্বাদ হিসেবে এলো নতুন বল। মাত্র ৫৪ রানে বাকি ৭ উইকেট তুলে ভারতীয়দের অলআউট করে দিলেন কিউই পেসাররা। তুমুল বৃষ্টি ও আলোক স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হওয়ার আগে টম ল্যাথামের দল পেল ছোট লক্ষ্য।

শনিবার বেঙ্গালুরু টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে জয়ের সুবাস মিলছে নিউজিল্যান্ডের। তারা পেয়েছে ১০৭ রানের লক্ষ্য। হাতে আছে ১০ উইকেটের সবকটি। ব্যাটিংয়ে নেমে সফরকারীরা মাত্র ৪ বল মোকাবিলার পর পর্যাপ্ত আলোর অভাবে আম্পায়াররা খেলার ইতি টানেন। এরপর নামে বৃষ্টি। ওই ৪ বলে কোনো রান তুলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। তাই তাদের লক্ষ্য রয়ে গেছে অপরিবর্তিত।

চালকের আসনে থাকা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে হলে ভারতকে গড়তে হবে ইতিহাস। সেটা অসম্ভব না হলেও ঘটে গেলে হবে রীতিমতো অবিশ্বাস্য ব্যাপার। টেস্ট ক্রিকেটে ৫০ রানের নিচে অলআউট হয়েও কোনো দলের জয়ের ঘটনা আছে স্রেফ একটিই। ১৮৮৭ সালে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজে সিডনি টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৪৫ রানে অলআউট হয়েও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৩ রানে জিতেছিল ইংল্যান্ড। চলমান বেঙ্গালুরু টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া ভারতের সামনে আছে ১৩৭ বছরের পুরনো সেই কীর্তির পুনরাবৃত্তি ঘটানোর হাতছানি।

ছবি: এএফপি

ওভারপ্রতি ৪.৬৪ গড়ে রান তুলে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ৪৬২ রানে। অথচ এক পর্যায়ে ৩ উইকেটেই ৪০৮ রান পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল রোহিত শর্মার দল। চালিয়ে খেলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে সরফরাজ ও পান্ত যোগ করেন ২১১ বলে ১৭৭ রান। কিন্তু তাদের জুটি ভাঙার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিং লাইনআপ। সরফরাজকে কভারে ক্যাচ বানিয়ে নিউজিল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানোর সূচনা করেন টিম সাউদি। এরপর পান্ত, লোকেশ রাহুল ও রবীন্দ্র জাদেজাকে বিদায় করেন উইলিয়াম ও'রোর্কে। আর শেষটা করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন ম্যাট হেনরি। তার শিকার হন রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজ।

ইনিংসের ৮০তম ওভারে ল্যাথাম যখন দ্বিতীয় নতুন বল নেন, তখন ভারতের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ঠিক ৪০০ রান। দুই স্পিনার গ্লেন ফিলিপস ও রবীন্দ্র জাদেজাকে সরিয়ে আক্রমণে আনা হয় সাউদি ও হেনরিকে। ৮৫তম ওভারের প্রথম বলেই দেখা যায় নতুন বলের কারিশমা। অপ্রত্যাশিতভাবে লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিতে ঠিকঠাক সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ হয়ে বিপদ ডেকে আনেন সরফরাজ। ৮৯তম ওভারে আক্রমণে ফিরেই ও'রোর্কে থামান বিপজ্জনক পান্তকে। তখনও দেখা মেলে নতুন বলের বিচিত্র আচরণ। কিছুটা লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারি স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন পান্ত। এরপর ভারতের আর কেউ থিতু হতে পারেননি ক্রিজে।

প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে ফেরা সরফরাজ ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে করেন ১৫০ রান। ১৯৫ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ১৮ চার ও ৩ ছক্কা। পান্তকে পুড়তে হয় চরম আক্ষেপে। ১০৫ বলে ৯ চার ও ৫ ছক্কায় ৯৯ রানে আউট হন তিনি। টেস্টে এই নিয়ে সপ্তমবার নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার হলেন তিনি। এর আগে ৯১, ৯২ (দুবার), ৯৩, ৯৬ ও ৯৭ রানে ফিরলেও ৯৯ রানে থামার তেতো অভিজ্ঞতা তার হলো প্রথমবার।

এদিন ভারতের পড়া ৭ উইকেটের সবগুলো যায় কিউই পেসারদের ঝুলিতে। অভিজ্ঞ সাউদি ১ উইকেট পান ৫৩ রান খরচায়। ৩ উইকেট শিকার করতে হেনরির খরচা ১০২ রান। প্রথম ইনিংসে তিনি নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। তরুণ ও'রোর্কে ৩ উইকেট নেন ৯২ রানের বিনময়ে।

Comments

The Daily Star  | English

DU JCD leader stabbed to death on campus

Shahriar Alam Shammo, 25, was the literature and publication secretary of the Sir AF Rahman Hall unit of Jatiyatabadi Chhatra Dal

1h ago