অ্যান্ডারসনের বিদায়ী ম্যাচে অ্যাটকিনসনের তোপে ইংল্যান্ডের ইনিংস জয়
দ্বিতীয় দিনের শেষেই মিলেছিল জোরালো আভাস। সেটাকে পূর্ণতা দিতে তৃতীয় দিন সকালে এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময় লাগল ইংল্যান্ডের। বাকি ৪ উইকেট শিকার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নিল তারা। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট হওয়ায় সব আলো ছিল দলটির ডানহাতি পেসার জেমস অ্যান্ডারসনের ওপর। তার বিদায়ী ম্যাচের দুই ইনিংসেই ৫ উইকেট নিয়ে সাদা পোশাকে অভিষেক স্মরণীয় করে রাখলেন গাস অ্যাটকিনসনও।
শনিবার লর্ডসে সফরকারী ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ইনিংস ও ১১৪ রানে জিতেছে ইংল্যান্ড। আগের দিনের ৬ উইকেটে ৭৯ রান নিয়ে খেলতে নামা উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১৩৬ রানে। প্রথম ইনিংসে তাদের ১২১ রানের জবাবে স্বাগতিকরা তাদের একমাত্র ইনিংসে তোলে ৩৭১ রান।
এদিনের প্রথম উইকেট যায় ৪১ বছর বয়সী অ্যান্ডারসনের ঝুলিতে। যে ধরনের ডেলিভারির জন্য তার খ্যাতি দুনিয়াজোড়া, সেরকমই একটি বলে জশুয়া ডা সিলভাকে ফেরান তিনি। একেবারে বোকা বনে যান ক্যারিবিয়ান উইকেটরক্ষক। সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া ফুলার ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। ১৮৮ টেস্টে ২৬.৪৫ গড়ে ৭০৪ উইকেট নিয়ে অবসরে যাওয়া অ্যান্ডারসনের শেষ শিকার হয়ে থাকল এটি। এই ইনিংসে ৩২ রানে তিনি নেন মোট ৩ উইকেট। আগের ইনিংসে ১ উইকেট পেতে খরচ করেন ২৬ রান।
লর্ডসের লং রুম পেরিয়ে শেষবারের মতো যখন মাঠে ঢুকছিলেন অ্যান্ডারসন, গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকরা তখন দাঁড়িয়ে ছিলেন। নিজ দলের ও প্রতিপক্ষের ক্রিকেটাররা এই কিংবদন্তিকে দেন গার্ড অব অনার। ২০ বছরের বেশি সময়ের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসেও বল হাতে নজর কেড়ে মাঠ ছাড়ার সময় 'ও জিমি, ও জিমি' সুরে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা স্টেডিয়াম। টেস্ট ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট অ্যান্ডারসনের দখলে। তার ওপরে আছেন কেবল দুই স্পিনার— শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন ও অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন। ক্রিকেটের কুলীন সংস্করণে এত উইকেট নেই তিনি ছাড়া আর কোনো পেসারের।
দিনের পরের উইকেটগুলো নেন আরেক ডানহাতি পেসার অ্যাটকিনসন। তার শর্ট ডেলিভারি পুল করতে গিয়ে বিদায় নেন আলজারি জোসেফ ও জেইডেন সিলস। মাঝে ইয়র্কারে স্টাম্প উড়ে যায় শামার জোসেফের। সব মিলিয়ে অ্যাটকিনসন ১০৬ রানে পান ১২ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৪৫ রানে ৭ উইকেট দখলের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬১ রান খরচায় ৫ উইকেট যায় তার ঝুলিতে। ইংলিশদের হয়ে টেস্ট অভিষেকে তৃতীয় সেরা বোলিং ফিগার এখন অ্যাটকিনসনের। সব দল মিলিয়ে পেসারদের মধ্যে তৃতীয় সেরা বোলিং ফিগারের মালিকও হলেন তিনি।
সিলসকে ফিরিয়ে খেলার ইতি টানেন ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা অ্যাটকিনসন। এর আগে অ্যান্ডারসনই সুযোগ পেয়েছিলেন ম্যাচ শেষ করার। ২০০৩ সালের মে মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই লর্ডসেই শুরু করা দেদীপ্যমান ক্যারিয়ারের শেষ বলেও পেতে পারতেন উইকেট। কিন্তু বেঁচে গিয়ে অপরাজিত থেকে যাওয়া গুডাকেশ মোটির তোলা সহজ ফিরতি ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি।
পেসারদের নৈপুণ্যে অনায়াস জয়ে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। ট্রেন্টব্রিজে দ্বিতীয় টেস্ট মাঠে গড়াবে আগামী বৃহস্পতিবার। ওই ম্যাচ দিয়ে কিংবদন্তি অ্যান্ডারসনকে ছাড়াই নতুন করে পথ চলতে হবে ইংলিশদের।
Comments