ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিদায়ে স্বাগতিক দেশের যে ‘দুর্দশা’ টিকে রইল

ছবি: এএফপি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গত আসরে প্রথম পর্বই পাড়ি দিতেই পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ঘরের মাঠে ২০২৪ সালের চলমান আসরে তারা সে তুলনায় ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ঠিকই। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারে সুপার এইটেই শেষ হয়ে গেছে ক্যারিবিয়ানদের যাত্রা। আর এতে কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপে স্বাগতিক দেশগুলোর 'দুর্দশা'র একটি অনাকাঙ্ক্ষিত কীর্তি টিকে রইল। সেটা হলো— এই সংস্করণে তারা বিশ্বকাপ জেতে না!

শুধু কি বিশ্বকাপ জেতে না? ফাইনালেও তো কোনো স্বাগতিক দেশ গিয়েছিল মাত্র একবার!

২০০৭ সালের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফিরে যান। স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ফাইনালে দেখেছিল ভারত ও পাকিস্তানের লড়াই। ভারতের জেতা বিশ্বকাপের পরের আসরেও একই চিত্র। সেবার আয়োজক দেশ ছিল ইংল্যান্ড। ২০০৯ সালের ওই আসরে ফাইনালের মঞ্চে জায়গা করে নেয় পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। লর্ডসে ইউনুস খানের পাকিস্তানের হাতে ওঠে বিশ্বকাপ ট্রফি। পরের বছর ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে যে আসর বসে, সেখানে শিরোপার লড়াইয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংলিশরা। 

২০১২ সালে এশিয়ার মাটিতে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় শ্রীলঙ্কায়। লঙ্কানরা তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনালে খেলেছিল। কিন্তু বিশ্বকাপ জেতা হয়নি তাদের। তবু এই সংস্করণের বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশদের মধ্যে শ্রীলঙ্কাই যা ফাইনালে পা রাখতে পেরেছিল! আর কোনো দল তা পারেনি। ২০১৪ সালে পরের আসরে বাংলাদেশের মাটিতে যদিও লঙ্কানদের শিরোপার স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। ফাইনালে তারা হারিয়েছিল ভারতকে।

ভারত যখন পরের বিশ্বকাপে স্বাগতিক হলো, সেমিফাইনালেই তাদের দৌড় থেমে গেল। ২০১৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতকে বিদায় করে দিয়ে ফাইনালে খেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর 'রিম্বেবার দ্য নেম' কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের সেই টানা চার ছক্কায় দ্বিতীয়বারের মত শিরোপা যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরে! ফলাফল— ইংল্যান্ডের হতাশায় ডুবে যাওয়া আর বেন স্টোকসের খলনায়কে পরিণত হওয়া।

টি-টোয়েন্টি সংস্করণের পরবর্তী বিশ্বকাপ মাঠে গড়ায় একেবারে ২০২১ সালে। আদতে ভারতই সে আসরের আয়োজক ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বৈশ্বিক আসরটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে। এই দুটি দেশ কিংবা ভারত, কোনো স্বাগতিক দেশেরই ফল ভালো হয়নি। প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নেওয়া ভারত দেখেছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ফাইনাল। 

২০২১ বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়া আবার নিজেদের ঘরের মাঠে পরবর্তী আসরে ছিটকে গিয়েছিল প্রথম পর্ব থেকেই। ২০২২ বিশ্বকাপে অবশ্য ঘটে স্টোকসের শাপমোচন। পাকিস্তানকে হারিয়ে ইংল্যান্ডের শিরোপা পুনরুদ্ধারের পথে সেবার তিনি বনে যান ফাইনালের নায়ক।

২০২৪ বিশ্বকাপের দুই স্বাগতিক দেশের শেষ ঠিকানা হয়ে গেল একই। সাড়া জাগিয়ে সুপার এইটে জায়গা করে নেওয়া যুক্তরাষ্ট্র আটকে গেছে সেখানেই। আর জিতলেই সেমি, হারলেই বিদায়— এমন সমীকরণের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ উইকেটে হেরে ছিটকে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজও।

স্বাগতিক দেশ বিশ্বকাপ জেতে না— কথাটাকে ভুল প্রমাণের সুযোগ আগামীবার পাবে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্বাগতিক থাকবে এশিয়ার এই দুটি দেশ।

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

8h ago