ডলারের পিছু না ছুটতে তরুণদের পরামর্শ দিলেন অ্যান্ডারসন
ইংল্যান্ডের উঠতি ব্যাটারদের একজন উইল স্মিড। ২০২২ সালে তার একটা ঘোষণা চমকে দেয় দেশটির ক্রিকেটাঙ্গনকে। মাত্র ২১ বছর বয়সে লাল বলের ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানান এই ডানহাতি ব্যাটার। ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী আরেক ব্যাটার অ্যালেক্স হেলস পরে তার সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেছিলেন, আবার ২১ বছর বয়সে যেতে পারলে তিনিও একই কাজ করতেন।
অথচ টেস্ট ক্রিকেটকে বলা হয় একজন ক্রিকেটার গড়ে তোলার মঞ্চ। কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের লোভনীয় প্রস্তাবের কাছে লাল বলের ক্রিকেট আবেদন হারিয়েছে, সেটি ক্রিকেটের নতুন বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে বহুদিন হলো। স্মিডের মতো অনেক তরুণের অগ্রাধিকার তালিকায় টেস্ট ক্রিকেট পেছনের দিকেই থাকে আজকাল। জেমস অ্যান্ডারসন বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে ভিন্ন চিত্র দেখার আশাই শুনিয়ে গেলেন।
আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের টেস্টটি অ্যান্ডারসনের শেষ। লর্ডসে নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে নামার আগে সোমবার তিনি বলেন, 'আমি জানি চার ওভার বোলিং করে আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারেন। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমার ক্ষেত্রে- আমি ব্যাটারের সামনে কঠিন একটা ওভার করার চেষ্টা করে এবং তাকে আউটের উপায় খুঁজে বের করে যে আনন্দ অথবা পরিপূর্ণতা পাব, সেটি কখনোই বাউন্ডারিতে ক্যাচের মাধ্যমে উইকেট পেয়ে পাব না। আমি শুধু আশা করি যথেষ্ট বাচ্চা এবং তরুণ পেশাদার ক্রিকেটাররা রয়েছেন যাদের এখনো এরকম ভাবনা আছে, ডলারের পেছনে না ছুটে (এটি করতে চায়)।'
জীবনে নিজেকে টেস্টের ময়দানেই সঁপে দিয়েছেন অ্যান্ডারসন। ধ্যানের মতন করে টেস্ট ক্রিকেটের এই ঋষি খেলেছেন ১৮৭টি লাল বলের ম্যাচ। তার থেকে বেশি টেস্ট খেলেছেন শুধু শচীন টেন্ডুলকার (২০০ ম্যাচ)। সাদা পোশাকে ৭০০ উইকেটের মালিক নিঃসন্দেহে উঠতি ক্রিকেটারদের জন্য উদাহরণ। পাঁচদিনের লড়াইয়ের মতো তৃপ্তি ক্রিকেটে আর কিছুতেই আসে না বলে মনে করেন ৪১ বছর বয়সী এই পেসার, 'আমি যেমন ব্যক্তি, সেটির পেছনে আক্ষরিক অর্থেই টেস্ট ক্রিকেট কারণ। বছরের পর বছর ধরে এটা আমাকে অনেক শিক্ষা দিয়েছে। দিনের ক্রিকেটে কঠোর পরিশ্রমের পর আপনি যে পরিপূর্ণতা পান, সেটি খেলার মধ্যে অন্য যা কিছুই আপনি করতে পারেন, তার থেকে আলাদা।'
লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ২০০৩ সালে অভিষিক্ত অ্যান্ডারসন কাল একই মাঠে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন। ম্যাচটিতে ৯ উইকেট নিতে পারলে তিনি ছাড়িয়ে যাবেন টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক শেন ওয়ার্নকে। ৭০৮ উইকেট নেওয়া অস্ট্রেলিয়ার এই কিংবদন্তির উপরে রয়েছেন কেবল মুত্তিয়া মুরালিধরন (৮০০ উইকেট)।
Comments