অ্যান্ডারসনের চেয়ে বেশি সতীর্থ আছে কার?

যে কোচের অধীনে খেলে বিদায় নিলেন অ্যান্ডারসন, সেই ব্রেন্ডন ম্যাককালামের টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে তার পরে। আর শেষ হয়েছে ৪২ ছুঁই ছুঁই বয়সে অবসরে যাওয়া অ্যান্ডারসনের কত আগেই! ক্রিকেটের ময়দানে তার দীর্ঘায়ু বোঝাতে এমন অনেক উদাহরণই রয়েছে।
James Anderson

জেমস অ্যান্ডারসন আপনাকে অবাক করেন নানানভাবে। বল হাতে কারিশমায় তো বটেই। ৭০৪ টেস্ট উইকেট, ১৮৮ ম্যাচ, তার সঙ্গে জুড়ে থাকা এসব সংখ্যায়ও যে অবাক না হয়ে উপায় নেই। একজন পেস বোলার হয়েও কীভাবে ২১ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ার গড়তে পারলেন, বিস্ময়ের ঘোর কাটে না যেন, অবিশ্বাসই হাজির হয়ে যায়। ইংলিশ এই কিংবদন্তিকে নিয়ে আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে- তার সতীর্থ সংখ্যা ১০৯! হ্যাঁ, ১০৯ জন ইংলিশ ক্রিকেটারের সৌভাগ্য হয়েছে তার সঙ্গে টেস্টের মঞ্চে নামার।

এত বেশি সতীর্থ! অন্য কোন ক্রিকেটারের তা আছে কিনা, প্রশ্নটি আপনার মাথায় আসতে পারে। উত্তর খুঁজতে গিয়ে একজন ক্রিকেটার আপনার ভাবনায় আসতে পারেন। শচীন টেন্ডুলকারের ম্যাচ সংখ্যা জানা থাকলে তাকেই এগিয়ে রাখবেন। এমনটা করে থাকলে আপনি ভুল ভাবেননি। তবে দুইশটি টেস্ট খেলা শচীনের সতীর্থ সংখ্যা অ্যান্ডারসনের থেকে মাত্র এক বেশি। ভারতের কিংবদন্তির সঙ্গে সাদা পোশাকে ১১০ জন ভারতীয় মাঠে নামতে পেরেছেন।

এত সতীর্থ পেতে হলে দীর্ঘ ক্যারিয়ার থাকা চাই। টেস্ট ক্রিকেটে ১৪০টির বেশি ম্যাচ খেলেছেন যারা, তাদের সতীর্থের সংখ্যা তাহলে দেখা যাক।

টেস্টের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৬৮টি টেস্ট খেলেছেন রিকি পন্টিং। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক তার ক্যারিয়ারে ৮২ জন অজিকে নিয়ে নেমেছেন সাদা পোশাকের লড়াইয়ে। তার স্বদেশী স্টিভ ওয়াহ সমান ম্যাচই খেলেছেন। তবে অজিদের নেতৃত্ব দেওয়া ওয়াহ ৭০ জনের বেশি সতীর্থ পাননি টেস্টের ময়দানে। তাদের পূর্বের নেতা অ্যালান বোর্ডারে ১৫৬ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৮৫ জন অজির সঙ্গ পেয়েছেন লাল বলের ক্রিকেটে।

স্যার অ্যালিস্টার কুক ও স্টুয়ার্ট ব্রড- ইংল্যান্ডের এই দুই কিংবদন্তি খেলেছেন ১৬০টির বেশি ম্যাচ। তাদের দুজনের আগে শুরু করে পরে শেষ করেছেন অ্যান্ডারসন, সতীর্থ সংখ্যায় তাকে কি টেক্কা দিতে পারলেন তারা? ১৬৭ টেস্ট খেলা ব্রড পেয়েছেন ৮৩ জন সতীর্থ। কুকের বেলায় সংখ্যাটা মাত্র ৭৪।

শচীন ও অ্যান্ডারসন বাদে আর কারো একশজন সতীর্থ পাওয়ার ভাগ্য হয়নি ভাবছেন? আছেন একজন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ণ চন্দরপল ১৬৪ টেস্টের ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১০৫ জন ক্যারিবিয়ানের সঙ্গে। তার থেকে এক ম্যাচ বেশি খেলা জ্যাক ক্যালিসের সতীর্থের সংখ্যা আবার মাত্র ৬৫। ক্যালিসের সময়েই ক্যারিয়ার চলমান ছিলো মার্ক বাউচারের। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলা ১৪৬ টেস্টে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারও পাননি ৫৯ জনের বেশি সতীর্থ।

রাহুল দ্রাবিড় ১৬৪ টেস্ট খেলেই তবে থেমেছেন। তার লম্বা ক্যারিয়ারে ভারতের হয়ে খেলেছেন আরও ৮৪ জন। মাহেলা জয়াবর্ধনে, শেন ওয়ার্ন, জো রুট- প্রত্যেকের খেলা টেস্টের সংখ্যা ১৪০ থেকে ১৫০ এর মধ্যেই থেকেছে। জয়াবর্ধনে ৭৫ জন ক্রিকেটারের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করেছেন। কিন্তু ওয়ার্ন নিজের দলে পেয়েছেন মাত্র ৫৮ জন ভিন্ন অজিকে। এই তালিকার মধ্যে একমাত্র রুটই অবসর নেননি এখনো। তার ৭৭ জন সতীর্থের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা আছে তাই। তবে অ্যান্ডারসন ও শচীনের সঙ্গে তার ফারাক বিস্তর!

যে কোচের অধীনে খেলে বিদায় নিলেন অ্যান্ডারসন, সেই ব্রেন্ডন ম্যাককালামের টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে তার পরে। আর শেষ হয়েছে ৪২ ছুঁই ছুঁই বয়সে অবসরে যাওয়া অ্যান্ডারসনের কত আগেই! ক্রিকেটের ময়দানে তার দীর্ঘায়ু বোঝাতে এমন অনেক উদাহরণই রয়েছে। অন্য সবকিছুর সঙ্গে সতীর্থ সংখ্যাটাও চাইলে আপনি ব্যবহার করতে পারেন। 

১০৯ জন!

Comments