বিসিবি সভাপতি থাকা, না থাকা

নাজমুল হাসান পাপনের ইচ্ছার উপরই নির্ভর করছে সব

Nazmul Hasan Papon
নাজমুল হাসান পাপন। ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী হওয়ার পরই এই আলোচনা শুরু। তিনি ক্রিকেট বোর্ডের বড় কর্তার পদে আর থাকবেন কি? কিংবা থাকতে পারবেন কি? আইনত তিনি মন্ত্রী হয়েও বিসিবি সভাপতি থাকতে পারবেন। সেখানে কোন বাধা নেই। কিন্তু তিনি নিজে এই পদে থাকবেন কিনা কিংবা তার থাকা শোভন হয় কিনা আলাপটা এখন তা নিয়ে।

আইসিসির আইনে কি আছে?

নির্বাচিত কোন বোর্ড সভাপতি সরকারের মন্ত্রী হলে তাতে কোন সমস্যা নেই আইসিসির। তবে কোন বোর্ড বা বোর্ড প্রধানকে সরকার চাইলেও সরাতে পারবে না। সরকার থেকে এমন কোন হস্তক্ষেপ হলে সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে নিষিদ্ধ করে দিতে পারে আইসিসি।

কিন্তু যোগাযোগ করা হলে আইসিসি দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেম কোন বোর্ড সভাপতি যদি নিজের ইচ্ছায় পদত্যাগ করেন তাহলে ওই বোর্ডের পরবর্তী কার্যক্রম চলবে তাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী।  অর্থাৎ নাজমুল হাসান পাপন যদি মনে করেন তিনি পদত্যাগ করবেন, তাতে আইসিসির কোন সমস্যা নেই। সেক্ষেত্রে বিসিবিকে চলতে হবে গঠনতন্ত্রে কি আছে তার ভিত্তিতে।

সভাপতি পদত্যাগ করলে কি হবে?

২০২২ সালের সংশোধিত বিসিবির গঠনতন্ত্রে ১৪.২ অনুচ্ছেদে পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও সহ-সভাপতির ক্ষমতা সম্পর্কে বলা আছে। ১৪.২ অনুচ্ছেদের ২ উপধারায় সহ-সভাপতি অংশে লেখা আছে, 'সভাপতির অনুপস্থিতিতে সভাপতি কর্তৃক মনোনীত যে কোনো একজন সহ-সভাপতি সভাপতির দায়িত্ব পালন করিবেন। তবে, সভাপতি পদে আকস্মিক শূন্যতা সৃষ্টি হইলে অথবা সভাপতি কোন কারণে স্বীয় পদে দায়িত্ব পালনে অক্ষম বা অপরাগ হইলে যথানিয়মে সভাপতি নিয়োগ না হওয়া অথবা সভাপতি পুনরায় দায়িত্ব পালন আরম্ভ না করা পর্যন্ত সভাপতি কর্তৃক মনোনীত একজন সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করিতে পারিবেন।'

বিসিবির বর্তমান পরিষদে সহ-সভাপতির পদ ফাঁকা আছে। কথা থাকলেও সভাপতি নির্বাচন করা হয়নি। এক্ষেত্রে অন্তর্বতীকালীন সভাপতি নেওয়ার উপায় নেই। তবে স্থায়ী সমাধান বেছে নেওয়ার পথ ঠিকই আছে।

বিসিবি সভাপতি যদি স্বেচ্ছায় পদ ছেড়ে দেন কিন্তু পরিচালক হিসেবে বহাল থাকেন তাহলে বাকি নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্য থেকে একজনকে সভাপতি নির্বাচন করতে হবে। যদি একাধিক প্রার্থী থাকেন তবে ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবেন। এক্ষেত্রে বাইরের কারো বোর্ডে আসার সুযোগ নেই।

বিসিবি প্রধান যদি সভাপতির পাশাপাশি পরিচালক পদ থেকেও সরে যান তাহলে আছে ভিন্ন প্রক্রিয়া। নাজমুল হাসান পাপন আবাহনী লিমিটেডের কাউন্সিলর প্রতিনিধি হিসেবে এসেছেন বিসিবিতে। তার পদ শূন্য হলে আবাহনীকে নতুন একজন কাউন্সিলর মনোনীত করতে হবে। ঢাকার ক্লাব কোটায় পরিচালক পদে সেক্ষেত্রে  হবে নির্বাচন। নির্বাচিত নতুন পরিচালক যুক্ত হবেন বোর্ডে। তারপর পরিচালকদের সিদ্ধান্তে বেছে নেওয়া হবে নতুন সভাপতি।

বাইরের কারো সুযোগ কি আছে?

বিসিবির পরিচালক না হলে কাউকে বিসিবি সভাপতি করার সুযোগ নেই। আর পরিচালক হতে হলে আগে হতে হবে কাউন্সিলর। অর্থাৎ যদি বাইরের কাউকে বোর্ড সভাপতি হতে হয় তবে তাকে তার আগে যেতে হবে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে।

ধরা যাক, নাজমুল হাসান পাপন সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের পাশাপাশি পরিচালক থেকেও সরে গেলেন। সেক্ষেত্রে একজন পরিচালকের পদ শূন্য হবে। নাজমুল যেহেতু ক্লাব কোটা থেকে নির্বাচিত, সেক্ষেত্রে ঢাকার ক্লাবগুলোর কান্সিলররা ক্ষমতা পাবেন নতুন পরিচালক নির্বাচিত করার। কোন ক্লাবের কাউন্সিলর হয়ে যদি কেউ পরিচালক পদেও নির্বাচিত হন তবে যেতে পারবেন বোর্ডে। এরপর তাকে সভাপতি হতে হলে বর্তমান বোর্ডের বাকি পরিচালকদের মধ্যে বেশিরভাগের সম্মতি পেতে হবে।

অর্থাৎ বর্তমান সভাপতি চাইলে নিজের পদ ছেড়ে দিয়ে অন্য কাউকে সভাপতি হওয়ার সুযোগ দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আইসিসি বা বিসিবির গঠনতন্ত্রে কোন বাধা নেই।

Comments

The Daily Star  | English

Consensus talks: Poor progress may delay July Charter

Political parties have failed to reach an agreement on any reform proposals for the fifth consecutive day of the consensus talks.

10h ago