স্কোয়াশ আর হকি খেলে ব্যাটিংয়ে উন্নতি করেছেন বার্ল
জিম্বাবুয়ের বর্তমান সময়ের ক্রিকেটের অন্যতম নাম রায়ান বার্ল। নিচের দিকে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং আর কার্যকর লেগ স্পিনে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত তিনি। এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার সিলেট স্টাইকার্সের হয়ে বিপিএল খেলতে এসেও রাখছেন ছাপ। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে তিনি তুলে ধরেছেন নানা দিক।
জিম্বাবুয়ের বর্তমান প্রজন্ম সম্পর্কে
জিম্বাবুয়ের কিংবদন্তিদের নিয়ে ভাবতে গেলে আপনি নব্বুই ও দুই হাজার সালের শুরুর দিকে যাবেন। আপনার মাথায় আসবে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, হিথ স্ট্রিক, হেনরি ওলঙ্গা বা টাটেন্ডা টাইবুর কথা। কিন্তু এরপরে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের এখানকার সময়েও কিংবদন্তি আছেন। যেমন সিকান্দার রাজা, ব্র্যান্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস, এমনকি দারুণ সম্ভাবনাময় ব্লেসিং মুজারাবানি। আমি বিশ্বাস করি এখন থেকে কয়েক বছর পর মানুষ আমাদেরও জিম্বাবুয়ের কিংবদন্তি বলে চিনবে।
ক্রিকেটীয় দিক থেকে জিম্বাবুয়ের চলমান আবহ
দারুণ। সবাই ক্রিকেটের খোঁজ রাখে, ক্রিকেট আলোচনার বিষয় থাকে। সবাই স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে চায়। মাঠ ভর্তি থাকে।
আঠা দিয়ে জুতো লাগানোর সেই ভাইরাল ছবির ঘটনা নিয়ে
এটা এমন একটা জিনিস যেটা দিয়ে আপনি কখনই ভাইরাল হতে চাইবেন না। আমার পাশে ছুটে আসার জন্য পুমার প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তারা শুধু আমাকে নয়, আমাদের দলের অন্যদেরও সাহায্য করেছে। এটা স্পন্সরদেরও চোখ খুলে দিয়েছে আমাদের ব্যাপারে। আমরা হয়ত বিশ্বের সেরা পাঁচে নেই কিন্তু সেটা স্পন্সর না পাওয়ার কারণ আর হতে পারে না। আমি বাড়িতে এমনি মেরমতি কাজের জন্য ওস্তাদ। যদিও তা আমার বাবা, ভাইয়ের মত নয়। ক্রিকেট আসলে খুব ব্যয়বহুল খেলা। এসবের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
হকি ও স্কোয়াশ যেভাবে ক্রিকেটের কাজে লাগল
আমার মনে হয় এই খেলাগুলো আমাকে আজকের জায়গায় এনেছে। দেখেন কব্জির ব্যবহার আমি স্কোয়াশ থেকে পেয়েছি। আমার সুইপ, রিভার্স সুইপে সাহায্য এসেছে হকি খেলার অভ্যাস থেকে। আমি সব খেলাই খেলেছি, কিন্তু ক্রিকেট বেছে নিয়েছি।
জিম্বাবুয়ের কোচ ডেভ হটনের সঙ্গে কাজ
আমরা সবাই মিলে বসি এবং আলাপ করি যে কোন ব্র্যান্ডের ক্রিকেট আমরা খেলব। আমরা চাই দর্শকরা তাতিয়ে দিক, দর্শকদের জন্য আমরা ইতিবাচক ক্রিকেট খেলি। এটা সব সময় কাজে দেয় না কিন্তু মাঝে মাঝে দেয়। এমন হয় ১৮০ করতে গিয়ে আপনি স্রেফ ১০০ রানে আটকে গেলেন।। কিন্তু রক্ষণাত্মক হয়ে ১৪০ করার মানে আপনি আগেই হেরে বসেছেন। এটাই আমরা দল হয়ে ঠিক করি।
মাশরাফির সঙ্গে অভিজ্ঞতা
তিনি বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি। তার উপস্থিতি একটা স্থিরতা নিয়ে আসে। তিনি এমন একজন যিনি আপনার উপর শতভাগ আস্থা রাখবেন ও সমর্থন দিবেন। আমি সাধারণত পাঁচ-ছয়ে ব্যাট করতে নামি। কখনো তিনি আমাকে বলেন, ' আমি চাই তুমি চারে যাও এবং নিজেকে মেলে ধর। আত্মবিশ্বাস নিয়ে সময়টা উপভোগ কর।' তিনি কাজটা সহজ করে দেন।
যেভাবে লেগ স্পিনার
বাগানে হয়ত আপনি ছোট জায়গা পান যেখানে স্পিন বলই করতে হয়। আমি শুরুতে জিম্বাবুয়েতে স্যাম কারানের সঙ্গে বোলিং ওপেন করতাম, সিম বল করতাম। একদিন কোচকে বললাম সিম বল করব না। শেন ওয়ার্ন, স্টুয়ার্ট ম্যাগগিল, অনিল কুম্বলদের দেখে ফ্লিপার, স্লাইডার এসব মারা শুরু করলাম।
বর্তমান ক্রিকেটে লেগ স্পিনারদের অবস্থা
বাংলাদেশে কোন লেগ স্পিনার না দেখে উদ্ভট লাগল। কিন্তু আপনি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে যদি দেখেন একটা সময় সেরা সাত বোলারের মধ্যে ছয়জনই ছিল লেগ স্পিনার। এখনো এরকমটাই। আদিল রশিদ, রশিদ খান, ইশ সোধি। এটাতে ঝুঁকি বেশি আবার সাফল্যের হারও বেশি।
আমি রশিদের সঙ্গে গ্রিপ নিয়ে আলাপ করেছি। লেগ স্পিনারদের কমিউনিটি আছে। আমরা একে অন্যের সঙ্গে বিভিন্ন কিছু নিয়ে আলাপ করি। ব্যাটসম্যানরা সব সময় আমাদের সামলানোর পথ বের করে আমরাও চেষ্টা করি কীভাবে এগিয়ে থাকা যায়।
Comments