‘কীভাবে এত টাকা ঋণ শোধ করব, আমাদের সব শেষ’
রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে বেলায়েত হোসেনদের ৫টি দোকান। তারা ৫ ভাই মিলে দোকানগুলো চালাতেন।
ঘটনাস্থল থেকে দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক শাহীন মোল্লা জানান, ফজলুল হক মুসলিম হলের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন বেলায়েত হোসেন।
এসময় তিনি বারবার বলছিলেন, 'কীভাবে এত টাকা ঋণ শোধ করব। আমাদের এখন কী হবে। আমাদের সব শেষ।'
বেলায়েত হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বঙ্গ কমপ্লেক্সের গুলিস্তান মার্কেটে আমাদের ৫টি দোকান ছিল। আমরা ৫ ভাই দোকানগুলো চালাতাম। চোখের সামনে আমাদের দোকানগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।'
বেলায়েত হোসেনদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায়। ১৯৯৯ সালে গুলিস্তান মার্কেটের নীচ তলায় ২টি দোকান নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তারা ২ ভাই। দোকান দুটির নাম ছিল নীল গার্মেন্টস ও বৃষ্টি গার্মেন্টস। তখন তাদের মূলধন ছিল ১০ লাখ টাকা। তারপর তার অন্যান্য ভাইয়েরা আসেন এবং ব্যবসার পরিসর বৃদ্ধি করেন। বর্তমানে গুলিস্তান মার্কেটে তাদের ৫ ভাইয়ের ৫টি দোকান ছিল।
বেলায়েত হোসেন বলেন, 'প্রতি বছর ঈদের আগে আমরা ব্যাংক, এনজিও, আত্মীয়দের কাছে থেকে অনেকগুলো টাকা ঋণ নিয়ে থাকি। ঈদের পরে আবার এই ঋণ পরিশোধ করি। আমাদের যেহেতু পাইকারির দোকান তাই ঈদের আগে বেশি বিক্রি হয়। ঈদের সময় আমাদের সারা বছরের লোকসান পুষিয়ে কিছু টাকা লাভ থাকে। কারণ এসময় আমাদের বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। এবারও ঈদের আগে আমরা ৫ ভাই মিলে ৫৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। আমাদের সবগুলো দোকান মিলে প্রায় ২ কোটি টাকার মালামাল ছিল।'
'ভোরে এখানকার সিকিউরিটি আমাকে ফোন করলে আমরা ছুটে আসি। এসে দেখি আদর্শ মার্কেটে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আদর্শ মার্কেটের পাশে গুলিস্তান মার্কেটে আমাদের দোকান। তখন ফায়ার সার্ভিসের দুএকটি ইউনিট কাজ করছিল। আমরা তখন ছুটে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে যাই এবং ইউনিট বাড়ানোর অনুরোধ করি। পরে আদর্শ মার্কেট থেকে আগুন বঙ্গ মার্কেটে এবং তারপর গুলিস্তান মার্কেটে ছড়িয়ে পড়ে,' বলেন তিনি।
এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, 'আমি কিছু মালামাল বের করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, পারিনি। আমাদের সামনেই সব পুড়ে ছাই হয়ে গেল।'
Comments