‘একটি নতুন পতাকা পাব, যেখানে লেখা থাকবে আমাদের স্বপ্নের কথা’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে ঢাকায় হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। ছবি: সংগৃহীত

দিন যত যাচ্ছে আমরা জানতে পারছি দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এই যুদ্ধ কী ও কেন, যুদ্ধের ফলাফল কী হতে পারে, এই বিষয়ে নূন্যতম ধারণাও ছিল না। তবে বুঝতে পারছিলাম এমন একটা ঝড় এসেছে, যা আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে। চোখের সামনে প্রিয় পাড়াটা খালি হয়ে গেল, বন্ধুরা সবাই কোথায় যেন চলে গেল রাতের অন্ধকারে, আর দেখা হয়নি।
 
আমরা তখন ঢাকার ভূতের গলিতে থাকতাম। পুরো পাড়ায় অন্তত ১২-১৪ জন শিশু-কিশোর একসঙ্গে বেড়াতাম, খেলতাম, স্কুলে যেতাম। সেসময় আমাদের সারাদিন পাড়ায় ঘোরাঘুরি করা আর খেলা ছাড়া কোনো কাজ ছিল না। স্কুলও অনিয়মিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ কী যে হয়ে গেল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে, পরিচিত সবকিছু পাল্টে গেল। পাড়ায় যে ভাল্লুকওয়ালা খেলা দেখাতে আসতেন, তিনি আর এলেন না। বানরের ভেলকিবাজি খেলা দেখানোর মানুষটিও উধাও হয়ে গেলেন। দুপুরে টিংটিং বাজনা বাজিয়ে বেবি আইসক্রিমওয়ালাও আসা বন্ধ করে দিলেন। কোথায় গেল আমার বন্ধুরা, কোথায় গেল ভাল্লুকওয়ালা, বানরওয়ালা ও বেবি আইসক্রিমের টুংটাং শব্দ?

অবশ্য বেশ কিছুদিন ধরেই লক্ষ্য করছিলাম সন্ধ্যা নামার পরপরই কেমন যেন একটা সুনসান নীরবতা নেমে আসে চারিদিকে। আব্বাসহ আমার চাচা ও পাড়ার কিছু মুরব্বি এক জায়গায় মিলিত হয়ে ফিসফিস করে কথা বলতেন। সেসময় আব্বা সাংবাদিক ছিলেন বলে সবাই তার কাছে এসে খবরাখবর জানতে চাইতেন। মাঝে মাঝে তারা সবাই মিলে শরীফ চাচা ও জাহানারা চাচির (জাহানারা ইমামের) বাসায় যেতেন আরও বিস্তারিত আলোচনার জন্য। সকাল-সন্ধ্যায় শুধু বিবিসি শুনতেন সবাই।
 
২৫ মার্চের কালরাত ঠিক সেরকমই একটি রাত, যা কখনোই মন থেকে মুছে যাবে না। এটি এমন এক রাত, যে রাতে আমরা সবাই বড় হয়ে গেলাম। পরে জেনেছি ১৯৭১ সালের সেই রাতটা ছিল বিশ্বাসঘাতকতার রাত। বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খান, জুলফিকার আলি ভুট্টো এবং পাকিস্তানের কসাই টিক্কা খান। শুধু 'মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধের ভিত্তিতে' এবং 'দ্বিজাতিতত্ত্বের ধারণা' থেকে যে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল, জন্মের সেই ধারণার সঙ্গেই পশ্চিম পাকিস্তান বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। সেই রাতেই বাঙালিরা বুঝতে পেরেছিল এইসব 'মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধের' ধারণা সব ভুল ও মিথ্যা। 

২৫ মার্চ রাতের খাবার খাওয়ার পর হঠাৎ চারিদিক থেকে গুলি, মেশিনগানসহ আরও অনেক শব্দ ভেসে আসতে থাকল। আব্বা, আম্মা ও আমি লাইট নিভিয়ে খাটের নিচে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আমাদের কাছে ছিল কিছু শুকনো বিস্কুট আর একটা ছোট্ট হারিকেন। পুতুল হারিয়ে যেতে পারে, এই ভয়ে আমি আমার ছোট দুটি পুতুল নিয়ে খাটের নিচে ঢুকেছিলাম। সেদিন ভাবিনি ওই হায়েনারা আমার পুতুলটা নিতে আসেনি, এসেছিল আমার দেশকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য। সেই রাতে পাকিস্তানিরা বর্বর হামলা চালিয়ে আমার পুতুল নয় বরং লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে নির্বিচারে।
 
আমি সেই রাতেই প্রচণ্ড ভয় পেয়ে আব্বাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কী হচ্ছে চারিদিকে? কেন এত গুলির শব্দ, এত আগুনের আলো কেন দেখা যাচ্ছে? ওরা কি আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে? ভয়ংকর ট্রমা হয়েছিল সেদিন, সেটা আমি কখনোই ভুলব না।
 
আমাদের দৈনন্দিন সাদামাটা কিন্তু আনন্দময় জীবনে ভয়াবহ একটা ঝড় এসেছিল। আব্বা বলেছিলেন, পশ্চিম পাকিস্তান নামে শয়তান একটা দেশ আছে, যারা আমাদের দেশকে কেড়ে নিতে চায়। তাই সবাইকে যুদ্ধ করতে হবে। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু সবাইকে যুদ্ধের জন্য তৈরি হতে বলেছেন। সেই কালরাতে আম্মা আমাকে বুকে চেপে ধরে শুধু দোয়া পড়ে যাচ্ছিলেন। চারিদিকে এত গোলাগুলির শব্দ শুনে মনে হচ্ছিল হয়তো আমাদের পাড়াতেই কেউ বোমা মেরেছে।
 
আব্বা আম্মাকে বলেছিলেন, ভয় পেও না, ভরসা রাখ। তুমি তো জানোই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জনগণকে আত্মপ্রতিজ্ঞ করেছিলেন এবং ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে স্বাধীনতার কথাও শুনিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যার যা কিছু হাতিয়ার আছে, তাই নিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে এবং আত্মত্যাগ করতে। তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে আমরা স্বাধীনতা পাবই, একটি স্বদেশ পাব এবং এর নাম হবে আমাদের নিজেদের ভাষায়, অর্থাৎ বাংলায়। সেই সঙ্গে একটি নতুন পতাকা পাব, যেখানে লেখা থাকবে আমাদের স্বপ্নের কথা।
 
২৫ মার্চ রাতে কমলারঙা আগুনের ঝলকানি দেখে মনে হয়েছিল, এক্ষুনি হয়ত একটা আগুনের গোলা এসে পড়বে এই অন্ধকার ঘরে। রাতে শুধু বোমা আর গুলির শব্দ শুনে আমি ভয়ে কাঁদতে শুরু করায়, আব্বা আমার মুখ চেপে ধরে আস্তে আস্তে কাঁদতে বলেছিলেন। মনে হয়েছিল ওরা বোধহয় মানুষ না, ঠাকুরমার ঝুলির গল্পে পড়া সেই দানবের দল, যাদের মুখ থেকে আগুন বের হয়। বড় হয়ে বুঝেছি, ওরা আসলে সেই দানবই ছিল। এরপর যে কখন আম্মার কোলে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম জানি না।
 
সকালে আব্বা কাজে বেরিয়ে গেলেন। ২৬ মার্চ শুনলাম বাঙালিরা স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে, তখন বুঝিনি ব্যাপারটা কী। পাকিস্তানিরা মাইকে ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে দেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। কেউ বাসা থেকে বের হবেন না। আমরা আব্বার ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলাম। 
শহরে কারফিউ ছিল। কারফিউ যে কী, সেটাও প্রথম জেনেছিলাম সেদিন। পরেরদিন অর্থাৎ ২৭ মার্চ আব্বা বলেছিলেন, শহরের অবস্থা খুব খারাপ। কারফিউ ভাঙলে কিছু চাল, ডাল, আলু, তেল, লবণ, মোমবাতি আর ম্যাচ কিনে রাখতে হবে পাড়ার দোকান থেকে। কারফিউ সামান্য সময়ের জন্য ভেঙেছিল। আব্বা তখন কাজ করতেন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অব পাকিস্তানে (এপিপি), যা এখন বাসস।
 
তখন পুরো পাড়ায় একটাই ফোন ছিল, সাংবাদিক হাবিবুল্লাহ চাচার বাসায়। সেখানে গিয়ে দুপুরে আব্বাকে ফোন করে জানা গেল শহরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নেমেছে। ওরাই রাতে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। শহরের অনেক মানুষকে হত্যা করেছে। পুলিশ, শিক্ষক, সাংবাদিক ও ছাত্র-ছাত্রী কেউ বাদ যায়নি। পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে ধরে নিয়ে গেছে। আম্মা ফোন রেখে কাঁদতে শুরু করলেন। আমার হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে বিধ্বস্ত অবস্থায় বাসায় ফিরে এলেন।
 
আমার চেয়ে ৫-৬ বছরের বড় আমার এক ভাই ২৫ মার্চ রাতে তাদের যা অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেই গল্প আমাদের শুনিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ২৫ মার্চ রাতে যখন তারা খাবার খেতে ৯টার দিকে ডাইনিং টেবিলে বসেন, তখনই ভয়াবহ একটা খবর পেলেন। তারা ইন্দিরা রোডে বড় রাস্তার পাশে থাকতেন। কেউ একজন এসে জানিয়েছিল, আশপাশের সব কিশোর-তরুণরা ফার্মগেটে জড়ো হয়েছে রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়ার জন্য। কারণ তারা আশঙ্কা করছে যে, পাকিস্তানি সেনারা আজ রাতেই ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেড়িয়ে পড়বে সারা শহরে তাদের উন্মত্ত ক্রোধ নিয়ে তাণ্ডব চালানোর জন্য। যদিও এতগুলো বছর পর আজও আমরা কেউই বুঝতে পারিনি, এই ছেলেগুলো সেদিন কীভাবে সেই তথ্য জানতে পেরেছিল।
 
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাদের এই ধারণা সত্যে পরিণত হলো। আমার ভাই দৌড়ে গেলেন কী হচ্ছে দেখার জন্য। সেদিন যা দেখেছিলেন, তা দেখে তারা স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। ফার্মগেটে তখন অনেক বড় বড় গাছ ছিল। প্রায় শতবর্ষী কর্পূর, দারুচিনি, দেবদারু ও তাল গাছ। স্থানীয় ছেলেরা সেই গাছগুলো কেটে ফার্মগেট ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড দিয়ে দিল।

সেখানে তারা ঠেলাগাড়ি উল্টে রাখল, তেলের ড্রাম, আলকাতরার ড্রাম দিয়ে সেনাদের চলার পথে ব্যারিকেড দিয়ে রাখল। সেই রাতেই অসংখ্য মানুষ এসে ভিড় করেছে। ভাই বলেছেন, এই মুখগুলোকে তিনি যেন চেনেন মনে হয়েছে, এরাই সব যুদ্ধের সামনে থাকে। তাদের সবারই চোখে-মুখে অসম্ভব দৃঢ়তা ছিল, তাদের শক্ত চোয়াল, ঘর্মাক্ত চকচকে চেহারা সেই মৃদু আলোতেও দেখা যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল তারা বলছে 'আমরা প্রস্তুত'। যদিও যাদের সঙ্গে বাংলার দামাল ছেলেদের লড়াই হবে, সেই সামরিক বাহিনীর শক্তি ও ব্যাপকতা সম্পর্কে এদের তেমন কোনো ধারণাই ছিল না। কিন্তু শিরায় শিরায় ছিল তীব্র উত্তেজনা।
 
আব্বা পরে বলেছিলেন, শুরুতেই পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে ধরে আমাদের নেতৃত্বহীন করতে চেয়েছিল। ২৫ মার্চ রাতের সেই নৃশংস পরিকল্পনা 'অপারেশন সার্চলাইট' ছিল রাও ফরমান আলী এবং খাদিম হোসেন রাজার। তারা আলোচনায় আমাদের ব্যস্ত রেখে পাকিস্তান এয়ারলাইন্সে করে লাখ লাখ আর্মি আর অস্ত্র এনে হাজির করেছিল ঢাকায়।
  
২৬ মার্চ রাতে বাসায় ফিরে আব্বা পাকিস্তানি চাঁদ-তারা পতাকায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, এই পতাকা আর আমাদের নয়, আমাদের নতুন পতাকা হবে, নতুন দেশ হবে। ভয় পেও না। দেখে নিও আমরা এই যুদ্ধে জয়ী হবই।
 
২৭ মার্চ কারফিউ ভাঙামাত্র আমাদের বাড়িওয়ালা খালাম্মা এসে আম্মাকে বললেন, চুলায় ভাত বসিয়েছি কিন্তু নামানোর সময় নেই। তুমি নামিয়ে নিও। আমরা গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় পালিয়ে যাচ্ছি। শুনেছি শহরে পাকিস্তানি আর্মি নেমেছে। তারা লোকজনকে মেরে ফেলছে। ঘরের চাবিটা রাখ, বেঁচে থাকলে দেখা হবে।
 
সেদিনই আব্বা বাসায় এসে বলেছিলেন, মা আজ থেকে আমরা স্বাধীন দেশ। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। আমাদের নতুন দেশের নাম হবে বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পর পাড়াটা এতো খালি হয়ে গেল যে, আমরা বাড়ি বদলাতে বাধ্য হয়েছিলাম। মাত্র ৩টি পরিবার থেকে গিয়েছিলাম। আমাদের হাসিখুশি পাড়াটায় যেন কবরের নীরবতা নেমে এসেছিল। কাজেই পাশেই আরেকটা পাড়া সার্কুলার রোডে চলে গেলাম আমরা।
 
সেখানেই একদিন দেখলাম রাতের বেলায় কালো চাদরে মাথা মুড়ি দিয়ে একটি ছেলে এসে বাসায় একটা সুটকেস রেখে গেল। এরপরও ২ দিন দেখেছি। বুঝতে পারছিলাম না কে এই ছেলেটি? কেন রাতে আব্বার কাছে আসে? একবার ছেলেটি এসে থেকেই গেল। তখন দেখলাম সে আমার ফুপাত ভাই, মুক্তিযোদ্ধা। আর সেই সুটকেসে ছিল অস্ত্র। আব্বা খুব গোপনে এই মিশনে সহায়তা করতেন। বার বার করে আমাকে সাবধান করা হয়েছিল যে, আমি যেন কাউকে এই কথা না বলি। কিন্তু আমি সেই অস্ত্র দেখে ফেলে উত্তেজনাবশত পাড়ার বন্ধুদের কাছে বলে দিয়েছিলাম। 

পরদিন প্রায় ৪-৫ জন অভিভাবক এসে আব্বার কাছে সেই যুবক আর অস্ত্রের আদ্যোপান্ত জানতে চেয়েছিলেন। খুবই বিব্রতকর অবস্থা হয়েছিল আমার এই গল্পের কারণে। সেদিনই কোনো একসময় আব্বা ও আম্মা চুপ করে ভাইকে পার করে দিয়েছিলেন। বড় হয়ে বুঝেছিলাম কী ভয়ংকর একটা তথ্য আমি চাওর করে দিয়েছিলাম পাড়ায়। তখন ঢাকার পাড়াগুলোতে কেউ কেউ যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন, আবার কেউ কেউ পাকিস্তানিদের সহায়তাও করতেন। এরপরও এ দেশের মানুষ যে যেভাবে পেরেছেন যুদ্ধ করেছেন পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে এবং স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছেন।

শাহানা হুদা রঞ্জনা: সিনিয়র কোঅর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

[email protected]

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

Comments

The Daily Star  | English

Uncovering the silent deaths of migrant women

In the shadows of booming remittance flows and the quiet resilience of Bangladesh’s labour diaspora, a disturbing reality persists: numerous Bangladeshi female migrant workers, particularly those employed as domestic help in Gulf countries, are returning home in coffins.

17h ago