‘ক্যাপ্টেন খান’-এর দাপটে ম্লান বাকিরা

ঈদুল আজহায় মুক্তির তালিকায় ছিল মোট পাঁচটি ছবি। তবে, মুক্তির আলোয় এসেছে চারটি-‘ক্যাপ্টেন খান’, ‘মনে রেখো’, ‘জান্নাত’ ও ‘বেপরোয়া’। ছবিগুলোর মধ্যে ২০০ এর বেশি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান ও বুবলী অভিনীত ‘ক্যাপ্টেন খান’।
Captain Khan
‘‘ক্যাপ্টেন খান’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল আজহায় মুক্তির তালিকায় ছিল মোট পাঁচটি ছবি। তবে, মুক্তির আলোয় এসেছে চারটি-‘ক্যাপ্টেন খান’, ‘মনে রেখো’, ‘জান্নাত’ ও ‘বেপরোয়া’। ছবিগুলোর মধ্যে ২০০ এর বেশি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে শাকিব খান ও বুবলী অভিনীত ‘ক্যাপ্টেন খান’।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মাহিয়া মাহি এবং কলকাতার বনি সেনগুপ্ত অভিনীত ‘মনে রেখো’। এই ছবিটি ৭০টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে। এছাড়াও, মাহিয়া মাহি-সাইমন সাদিক অভিনীত ‘জান্নাত’ মুক্তি পেয়েছে মাত্র ২৩টি সিনেমা হলে।

ছবিগুলোর সঙ্গে শুধু নামেমাত্র মুক্তি দেওয়ার জন্য নীলফামারীর জনতা ডিজিটাল সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে ববি-রোশান অভিনীত ‘বেপরোয়া’।

ঈদের ছবি দেখতে দর্শকরা সেভাবে হলমুখি হননি এবার। মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলো নিয়ে দর্শকদের মধ্যে ছিলো না তেমন কোন আলোচনা। কিন্তু গত ঈদুল ফিতরে এই চিত্র ছিল একেবারে ভিন্ন। দর্শকরা মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা দেখতে হলে ভিড় জমিয়েছিলেন। এমনকি, ঈদুল আজহার কিছুদিন আগে সাফটা চুক্তির আওতায় মুক্তি পাওয়া শাকিব খান অভিনীত ‘ভাইজান এলো রে’ নিয়ে দর্শকদের মাঝে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু, ঈদুল আজহায় মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার ক্ষেত্রে তেমনটি দেখা যায়নি।

mone rekho
‘মনে রেখো’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

তবে ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোর মধ্যে ব্যবসার দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে শাকিব খান ও বুবলীর ‘ক্যাপ্টেন খান’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ওয়াজেদ আলী সুমন। সারাদেশে ঈদের দিন থেকে পরের কয়েকদিন বেশ ভালো ব্যবসা করেছে এটি। তাই টিকিট বিক্রি অনুযায়ী এগিয়ে রয়েছে ছবিটি। এর প্রধান কারণ শাকিব খানের নিজস্ব দর্শক রয়েছে। তার ছবি মুক্তি পেলেই দর্শকরা হলে গিয়ে তা দেখেন। বর্তমানে বাংলাদেশের আর কোন নায়কের বেলায় এমনটি নেই বললেই চলে। কিন্তু ছবির গল্প, পোশাক, সাজসজ্জা, টেকনিক্যাল বিষয়ে আরও মনোযোগী হতে হবে শাকিব খান অভিনীত ছবির পরিচালকদের। তা না হলে একসময় মুখ ফিরিয়ে নেবেন দর্শকরা। বিষয়গুলো নিয়ে এখুনি ভাবতে হবে শাকিব খানকেও।

ঢাকায় ‘ক্যাপ্টেন খান’ মোটামুটি ভালো ব্যবসা করেছে। রাজধানীর পূরবী সিনেমা হলে চলছে এটি। হলের ম্যানেজার পরেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, “ঈদের দিন থেকে পরবর্তী কয়েকদিন হাউজফুল গেছে। এখনও দর্শক উপস্থিতি মোটামুটি। সামনে আরও ভালো হবে বলে আশা করি।”

শ্যামলী সিনেমা হলের ম্যানেজার আহসানুল্লাহ জানান, ‘ক্যাপ্টেন খান’ মূলত অ্যাকশনধর্মী ছবি। তারপরও তার দর্শকরা প্রিয় নায়ককে দেখতে হলে আসছেন। তিনি জানান, গড়পড়তা দর্শকদের উপস্থিতি ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ।

অভিসার সিনেমা হলের ম্যানেজার কবির বলেন, “মুক্তির পর থেকেই মোটামুটি চলেছে ছবিটি। সবাই ঢাকায় ফিরলে সামনের সপ্তাহে হয়তো আরও দর্শক ছবিটি দেখতে আসবেন। সেই অপেক্ষায় রয়েছি আমরা।”

ঢাকার বাইরের সিনেমা হলগুলোর মধ্যে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মুন সিনেমা হলের কর্মচারী সাইফুল ইসলাম বলেন, “ঈদের দিন থেকে পরবর্তী চার-পাঁচদিন ভালো ব্যবসা করেছে ছবিটি। এখনও মোটামুটি চলছে ছবিটি।”

কুমিল্লার রূপালী সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কানাই দত্ত বলেন, ‘ক্যাপ্টেন খান’ দেখে দর্শকরা অনেক আনন্দ পাচ্ছেন। একটু একটু করে আরও ভিড় বাড়বে সামনের দিনগুলোতে। “শাকিব খানের একটি নিজস্ব দর্শক শ্রেণি তৈরি হয়েছে- এটি তার ছবির জন্য মঙ্গল,” যোগ করেন তিনি।

খুলনার শঙ্খ সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে ‘ক্যাপ্টেন খান’। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ছবিটি সেখানে মোটমুটি চলছে। হাউজফুল না হলেও দর্শকদের বেশ আনাগোনা রয়েছে। এছাড়াও রাজশাহী, বগুড়া, সাতক্ষীরা, রংপুর, সিলেটের হলগুলোতে ‘ক্যাপ্টেন খান’ মোটামুটি চলছে।

Jannat
‘জান্নাত’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির মধ্যে পরের অবস্থানে রয়েছে হার্টবিট প্রযোজিত মাহিয়া মাহি ও কলকাতার বনি সেনগুপ্ত অভিনীত ‘মনে রেখো’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ওয়াজেদ আলী সুমন। ‘মনে রেখো’ ছবিটি মোটামুটি ব্যবসা করছে বলে জানিয়েছেন মুক্তি পাওয়া সিনেমা হলের র্কতৃপক্ষরা। ঢাকার মধ্যে মধুমিতা, বলাকা, সনির মতো বড় হলগুলোতে মুক্তি পেয়েছে ‘মনে রেখো’ ছবিটি। তবে ঈদ উপলক্ষে যতোটা চলার কথা ছিল ততেটা চলেনি এটি। ছবিটি ঢাকায় মোটামুটি চললেও ঢাকার বাইরের দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এ থেকে। খুলনার লিবার্টি, সংগীতা ও জনতা এবং ময়মনসিংহের সেনা অডিটোরিয়ামে খুব একটা ভালো চলেনি ‘মনে রেখো’ ছবিটি। তবে ঢাকার বাইরে একমাত্র রংপুরের শাপলা সিনেমা হলে মোটামুটি চলেছে এটি।

মাহিয়া মাহি এবং সাইমন সাদিক অভিনীত ও মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘জান্নাত’ ছবিটি একবারে মুখ থুবড়ে পড়েছে এবারের ঈদে। সিনেমা হল মালিকদের মধ্যেও তেমন আগ্রহ ছিলো না এটি নিয়ে। ছবিটি দর্শকদের মধ্যে কোনরকম আগ্রহ তৈরি করতে পারেনি এখন পর্যন্ত। সঠিক পরিকল্পনার অভাব ছিল প্রকট।

‘জান্নাত’ ছবিটি দেখতে ঈদের দিন থেকে পরের কিছুদিন প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জনের মতো দর্শক উপস্থিতি ছিলেন ময়মনসিংহের একটি সিনেমা হলে। অন্য সিনেমা হলগুলোতেও ‘জান্নাত’ দর্শকদের আকর্ষণ করতে পারেনি। সঠিক পরকল্পনার অভাবই ডুবালো ছবিটিকে। তা না হলে অন্যকিছু হতে পারতো ‘জান্নাত’। শুধু সিনেমা নির্মাণ করলেই হয় না, ছবিকে সঠিকভাবে দর্শকদের কাছে পৌঁচ্ছে দিতে নানা ধরনের পরিকল্পনা প্রয়োজন। সেখানে ‘জান্নাত’ ছবিটির সঙ্গে জড়িতরা ছিলেন একেবারে শূন্যে কোঠায়। আগামী সপ্তাহে এই খরা কতোটা কাটিয়ে উঠা যাবে সেটি দেখার বিষয়।

আর ববি-রোশান অভিনীত ‘বেপরোয়া’ ছবিটি যেহেতু শুধুমাত্র একটি হলে মুক্তি পেয়েছে তাই সেটি আলোচনার বাইরে থাকছে এবারের ঈদে।

Comments

The Daily Star  | English

At least 274 killed in Israeli strikes on Lebanon, health minister says

After some of the heaviest cross-border exchanges of fire since the hostilities flared, Israel warned people to evacuate areas where it said the armed movement was storing weapons

1h ago