‘২৫ বছর ধরে এ কথাটিই বলতে চেয়েছি’
‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর ব্যানারে শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছিলেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।
সেখানে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, ২৫ বছর ধরে এক রক্তক্ষরণ নিয়ে, স্বজন হারিয়ে, সন্তানের মাকে হারিয়ে আমি ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন শুরু করেছিলাম। যেন আমার সন্তানের মতো কাউকে মা-হারা হয়ে বেঁচে থাকতে না হয়। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এই বাংলাদেশে যেনো কাউকে সড়কে প্রাণ দিতে না হয়, নিষ্পেষিত হতে না হয়। এই উদ্দেশ্য নিয়েই আন্দোলন শুরু করেছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘ ২৫ বছরের এই আন্দোলনে আমাকে অনেক বাধা-বিপত্তি, মানসিক কষ্টের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু, তারপরেও আমি দমে যায়নি।”
শিশুদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “আমাদের কোমলমতি শিশুরা উপলব্ধি করেছে, বুঝতে পেরেছে প্রতিদিন রাস্তায় প্রিয়জনকে হারানোর চেয়ে একসঙ্গে একদিন প্রতিবাদ করে সড়ককে নিরাপদ রাখার সিদ্ধান্তই সুন্দর।”
“আমি ২৫ বছর ধরে এ কথাটিই বলতে চেয়েছি। মানুষের সাময়িক অসুবিধা হলেও এই আন্দোলনটিকে ইতিবাচকভাবে দেখতে হবে। সড়ক নিরাপদ রাখার দাবি চালিয়ে যেতে হবে। আমি শুরু থেকেই তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে এসেছি, এখনও শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করছি,” যোগ করেন চিত্রনায়ক কাঞ্চন।
‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের দাবি প্রধানমন্ত্রীকে মেনে নেওয়ার অনুরোধ করেন ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, নিরাপদ সড়ক গড়তে আজীবন রাস্তায় থাকতে রাজি রয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর ইলিয়াস কাঞ্চনের শুটিং দেখতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তার স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন। স্ত্রীর এমন মৃত্যু মানতে পারেননি তিনি। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন। আর কাউকে যেন স্বজন হারাতে না হয় তার জন্য নিজেই গড়ে তুলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামের সংগঠনটি। দীর্ঘ ২৫ বছর এই সংগ্রাম চালিয়ে যান তিনি। প্রিয় মানুষ হারানোর বেদনা আজও তাড়া করে ফেরে এই মানুষটিকে।
Comments