কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সরাতে ১৫ দিনের আলটিমেটাম
কলকাতার বেকার হোস্টেল থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’।
আজ শনিবার দুপুরে কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সম্পাদক মুহম্মদ কামরুজ্জামান সময়সীমা বেধে দিয়ে বলেন, “আমরা জানি কী করে মূর্তি সরাতে হয়। ১৫ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে। এর পর আমরা এই মূর্তি সরানোর জন্য যত বড় আন্দোলন করার প্রয়োজন হয় করবো।”
মুহম্মদ কামরুজ্জামান কলকাতা থেকে তসলিমা নাসরিনকে তাড়ানোর উদাহরণও টানেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “রবিবার তালতলা থানায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার জকি আহাদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার জন্য মামলার অভিযোগ করা হবে।”
তবে কামরুজ্জামন বলেন, বেকার হোস্টেলে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি স্তম্ভ থাকলে তারা আপত্তি তুলবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে ৮ নম্বর স্মিথ রোডের বেকার হোস্টেলের মসজিদের ইমাম নিয়ামত হোসেন হাবিবি ছাড়াও সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ইমাম নিয়ামত হুমকি দিয়ে বলেন, “ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। কোনও ভাবেই বেকার হোস্টেলের বঙ্গবন্ধুর মূর্তি রাখা চলবে না।”
তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন, “যদি এতোই প্রয়োজন হয় তবে এই মূর্তি কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের মাথায় নিয়ে লাগানো হোক। কলকাতার বহু জায়গা ফাঁকা আছে সেখানে বসানো হোক। সংখ্যালঘু ছাত্রাবাসে কেন বসবে মূর্তি? যদিও ১৫ দিনের মধ্যে মূর্তি সরানো না হয় তবে প্রয়োজনে আমরাই বঙ্গবন্ধুর মূর্তি সরিয়ে ফেলবো।”
গত বধুবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সরানোর দাবির কথা শুনে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, এই আন্দোলন কোনওভাবেই বরদাস্ত করবেন না তিনি এবং প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নিবে তার সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির এই কঠোর হওয়ার বিষয়ে কী ভাবছেন, এই প্রশ্নের উত্তরে কামরুজ্জামান বলেন, আসলে মুসলিমদের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক খেলা করা হচ্ছে। এটা কোনও দিনই আমরা মেনে নেবো না। কলকাতা থেকে এর আগে ইসলাম ধর্ম অবমাননাকারী তসলিমা নাসরিনকেও তাড়ানো হয়েছিল। ইতিহাস ঘাটলে আমাদের আন্দোলন সম্পর্কে আপনারা সবাই জানবেন। আমরা ১৫ দিনের সময় দিয়েছি এবার বাকিটা আমরা ১৫ দিন পরেই বলবো।
এর আগে তিনি বলেন, কলকাতার তালতলা থানায় কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার জকি আহাদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার জন্য মামলা করবে সারা বাংলা যুব সংখ্যালঘু ফেডারেশন।
প্রসঙ্গত, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বেকার হোস্টেলের ২৩ ও ২৪ নম্বর কক্ষে (বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কক্ষ) বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। এর পরদিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য সরানোর দাবি করে সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন।
সেই দাবির পর এবার আলটিমেটাম দিয়ে নিজেরাই ভাস্কর্য সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলো সংগঠনটি।
Comments