ট্রাম্পবিরোধী প্রতিবাদের প্রতীক বাংলাদেশের মুনিরা
বাংলাদেশি-আমেরিকান মুনিরা আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা দিয়ে বানানো হিজাব পরে ২০০৭ সালে একটি ছবি তুলেছিলেন। এই ছবি থেকে বানানো পোস্টার এখন বিশ্বব্যাপী ট্রাম্পবিরোধী নারী আন্দোলনের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর নানা দেশসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সবখানেই এখন পোস্টারটি চোখে পড়ছে।
২০০৭ সালে মুসলিম-আমেরিকান ম্যাগাজিন ইলুম-এর প্রচ্ছদের জন্য ফটোগ্রাফার রিদওয়ান আধামি মুনিরার ছবিটি তুলেছিলেন। প্রখ্যাত স্ট্রিট আর্টিস্ট শেপার্ড ফেইরি ওই ছবি দিয়ে পোস্টার তৈরি করেছেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট, ইউএসএ টুডেসহ দেশটির প্রধান প্রধান সংবাদপত্রগুলোতেও এই পোস্টারটি ছাপা হয়েছে। বারাক ওবামা নির্বাচিত হওয়ার পর ‘হোপ’ পোস্টার বানিয়ে বিখ্যাত হয়েছিলেন ফেইরি।
নিউ ইয়র্কে বসবাসকারী ৩২ বছর বয়সী মুনিরা ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজ করতেন। গত সোমবার টেলিফোনে ম্যাশেবলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ফেইরির পোস্টারে আসতে পারাকে ‘পরাবাস্তব’ অভিজ্ঞতার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
নারীদের বিক্ষোভে অংশ নিতে গত সপ্তাহে মুনিরা ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন সবখানেই তার ছবি দিয়ে বানানো পোস্টার। তিনি বলেন, “ওখানে যাওয়া দরকার ছিলো আমার। ওটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।”
I won't lie, I got a bit emotional taking this photo. #womansmarchlosangeles #WeThePeople pic.twitter.com/j0BgUR4CgP — David Su @ ALA (@DavidTheStrange) January 22, 2017 মুনিরা শুনেছেন, বারাক ওবামা টেলিফোন করে ফেইরির কাজের প্রশংসা করেছেন। মুনিরা নিজেও ফেইরির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
ফেইরি ও তার সমমনা শিল্পীরা জনগণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এসব ছবি জাতীয় দৈনিকগুলোতে ছাপিয়েছেন। মুনিরার ভাষায় ওয়াশিংটন পোস্টের মত পত্রিকায় নিজের ছবি দেখতে পাওয়া বিশেষ একটা অনুভূতি তৈরি করে। ট্রাম্পের শপথের দিন বেশ কয়েক জায়গায় খোঁজ করেও পত্রিকা কিনতে পারেননি তিনি। সবখানেই গিয়ে দেখেছেন আগেই সব পত্রিকা বিক্রি হয়ে গেছে।
পতাকা দিয়ে তৈরি হিজাব পরে ছবি তুললেও ব্যক্তিগতভাবে হিজাব পরেন না মুনিরা। তিনি জানান, এ কারণেই হয়ত বেশিরভাগ লোকই প্রথম দেখায় বুঝতে পারেন না তার ছবি দিয়েই পোস্টারটি বানানো।
মুনিরা বলেন, “যুদ্ধে যাওয়া সেনাদের কথা বাদ দিলে যেসব মুসলিম নারী আমেরিকায় হিজাব পরেন তারাই সবচেয়ে বেশি সাহসী।” তিনি মনে করেন এই পোস্টারের যে দিকটা সবচেয়ে বেশি নাড়া দেয় তা হলো এটা একই সঙ্গে তার আমেরিকান ও মুসলমান পরিচয় তুলে ধরে। তার ভাষায়, “আপনি একই সঙ্গে এই দুটোই হতে পারেন।”
Comments