২০১৬ সালের আলোচিত অপ্রত্যাশিত ঘটনা

বিদায়ী বছরটি বিশ্ববাসীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বিভিন্ন কারণে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার ঘটনা বিশ্ব রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে চলেছে। এছাড়াও, বাংলাদেশ-সহ বিভিন্ন দেশে ঘটেছে সন্ত্রাসী হামলা। এ বছরের উল্লেখযোগ্য কিছু আলোচিত অপ্রত্যাশিত ঘটনার খবর দেওয়া হলো দ্য ডেইলি স্টার অনলাইন পাঠকদের জন্য:

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ৮ নভেম্বর রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। জুলাইয়ে হিলারি ক্লিনটন ডেমোক্রেট এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর বিভিন্ন পরিসংখ্যানে হিলারি এগিয়ে থাকলেও শেষে বিজয়ের হাসি হাসেন ট্রাম্প।

ব্রেক্সিট

বিশ্ববাসীকে অবাক করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বের হয়ে যায় ব্রিটেন। ২৩ জুন এক গণভোটে ৫২ শতাংশ ভোটার ইউরোপীয় জোট থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেন। ১৯৭৫ সালে এক গণভোটে ৬৭ শতাংশ ব্রিটিশ ভোটার তৎকালীন ইউরোপিয়ান ইকোনোমিক কাউন্সিল (ইইসি) বা আজকের ইইউ-তে যোগ দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন।

ঢাকা ক্যাফে হামলা

১ জুলাই ঢাকার গুলশানে একটি ক্যাফেতে হামলা চালিয়ে বন্দুকধারীরা বিদেশিসহ ২২ জনকে হত্যা করে। এই হামলায় দুজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং পাঁচজন হামলাকারীও নিহত হন। হামলাকারীরা নিজেদের ‘আইএস’ সদস্য বলে দাবি করেছিল।

ইরাক, ফ্রান্স ও জার্মানিতে আইএস-এর হামলা

৩ জুলাই বাগদাদে আইএস-এর ট্রাক বোমা বিস্ফোরণে মারা যান ২৯২ জন। ২০০৭ সালের পর ইরাকে এটা ছিল সবচে বড় একক সন্ত্রাসী হামলা।

এর ১১ দিন পর ফ্রান্সের নিস শহরে বাস্তিল দিবসের এক জমায়তে আরেকটি ট্রাক হামলায় মারা যান ৮৪ জন।

এছাড়াও, জার্মানিতে দুজন আইএস-দ্বারা প্রভাবিত শরণার্থী কুড়াল ও বোমা হামলা চালিয়ে ২০জনকে আহত করে। এই ঘটনায় হামলাকারীরা নিহত হয়।

তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান

১৫ জুলাই তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। সর্বশেষ অভ্যুত্থান চেষ্টার ৩৫ বছর পূর্বে দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটেছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল যে এই অভ্যুত্থানের ফলে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটবে। তবে প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান তাঁর সমর্থকদের অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় এসে দাঁড়াতে বললে ধীরে ধীরে আত্মসমর্পণ করতে শুরু করে অভ্যুত্থানকারীরা।

এই অভ্যুত্থানে ৩০০ জনের বেশি মারা যান এবং ২,১০০ জন আহত হন। এছাড়াও, অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬,০০০ জনের বেশি গ্রেপ্তার এবং প্রায় ৩৬,০০০ জন চাকরিচ্যুত হয়।

জাপানে হত্যাকাণ্ড

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে সবচে বড় সন্ত্রাসী হামলা হয় ২৬ জুলাই। সাতোশি ইউয়েমাতসু নামের এক ব্যক্তি একটি কেয়ার হোমে হামলা চালিয়ে ১৯জনকে হত্যা করে। ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে বলে তিনি পুলিশকে জানান।

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ হত্যা

এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে চোরাগোপ্তা হামলায় ২৬ জন পুলিশ মারা যান। গত বছরের তুলনায় নিহতের হার ৪৪ শতাংশ বেশি। ৭ জুলাই ডালাসে এক স্নাইপারের গুলিতে মারা যান চার জন পুলিশ এবং এক জন ডালাস ট্রানজিট কর্মকর্তা।

চীনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়

দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর চীনের একক আধিপত্যের বিষয়টিকে নিন্দা জানায় নেদারল্যান্ডের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালত ১২ জুলাই দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি এবং অন্যান্য আধিপত্যবাদী কর্মকাণ্ডকে ‘অবৈধ’ বলে রায় দেন। উল্লেখ্য, এবারই প্রথম চীন সরকারকে আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হলো। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে চীন সরকার দক্ষিণ চীন সাগরে যে পরিবেশগত ক্ষতি করেছে সেটাকে ‘অপূরণীয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন আদালত।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

Hasnat warns media against airing Hasina’s speech

He further warned that there would be no rehabilitation of Hasina or fascism in Bangladesh

22m ago