ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে কাছের বন্ধু
আমার অভিনয় জীবনে নূর ভাইয়ের সঙ্গে টেলিভিশন নাটকে প্রথম অভিনয়ের সূচনা হয়। নাটকটির নাম ছিল ‘বরফ গলা নদী’। এই নাটকে অভিনয়ের সময় মজার ঘটনা রয়েছে। প্রযোজক আমার বিপরীতে অভিনয় করার জন্য নূর ভাইকে দাড়ি কাটতে বলেন। কারণ তখন আমাকে দেখতে অনেক ছোট্ট দেখাত। এক দিন পরে শ্যুটিং শুরুর আগে মিতা চৌধুরীকে বলি, নূর ভাই কোথায়? দাড়ি ছাড়া নূর ভাই আমার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন অথচ চিনতে পারিনি। পরে এটা নিয়ে অনেক হাসাহাসি করেছি। নূর ভাইও অনেক হেসেছিল বিষয়টা নিয়ে। আমার বিশ্বাস নূর ভাইও বিষয়টি কখনো ভুলতে পারবে না।
আমার বাবা গোলাম মুস্তাফাকে নূর ভাই ডাকতেন ‘মুস্তাফা ভাই’ বলে। সে ক্ষেত্রে নূর ভাই আমার চাচা। যদিও আমি নূর ভাই বলেই এখনো ডাকি তাকে। আমার বাবাকে অনেক বড় করে দেখত। এখনো অনেক বড় করে দেখে।
সময়মতো শ্যুটিংয়ের সেটে আসতে পারত না নূর ভাই। একদিন বাজি ধরেছিলাম। সেদিনও সময়মতো আসতে পারেনি সে। ফলে বাজিতে জিতেছিলাম। নূর ভাইয়ের সঙ্গে অভিনয় করতে আমি ভীষণ রকম স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। বাাংলাদেশের টেলিভিশন নাটকের ইতিহাসে জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কোথাও কেউ নেই’তে আমরা একসঙ্গে অভিনয় করেছি। আমাদের একসঙ্গে শেষ প্রচারিত কাজ ‘গহীনে’।
মানুষ হিসেবে নূর ভাই অসাধারণ। যার কোনো তুলনা হয় না। আমার বাবাকে গুরুর মতো জানে। তারা একসঙ্গে ‘রক্তকরবী’ নাটকে রাজা ও কিশোরের চরিত্রে অভিনয় করেছে। ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ নূর ভাইয়ের প্রতি। চিরদিন থাকব। আমার বাবার মৃত্যুর পর নূর ভাই সবকিছু সামলেছে। ফেরেশতার মতো আমাদের পাশে ছিল প্রতিটি মুহূর্ত। আমার বাবা যখন মারা যান সেটা ছিল বিএনপির সময়। সাদেক হোসেন খোকা এবং আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এসে বলেছিলেন, আমরা কী করতে পারি? নূর ভাই সেই সময় সবকিছু নিজে সামলেছিল। সেই মুহূর্তটা বিশেষভাবে আমার চিরদিন মনে গেঁথে থাকবে।
প্রতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ আমার বাবাকে নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। নূর ভাই সেখানে থাকে। তার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার জায়গাটা বিশাল।
আমার জীবনের অন্যতম বন্ধুদের একজন নূর ভাই। পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে তার মতো মানুষ খুব কম রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিতে সে-ই আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু।
Comments