রবীন্দ্রনাথের গল্পগুলোকে ও নাটক আকারে লিখুক

আসাদুজ্জামান নূরের একটা উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে ও যে কাজই করে, খুব মনোযোগ দিয়ে কাজটার ভেতরে গিয়ে করার চেষ্টা করে। যখন অভিনয় করেছে, তখনো খুব সিরিয়াসলি করেছে। যখন রাজনীতি করে, তখনো তাই। আর ওর অনেক ধৈর্য। সবাই বলে আমার নাকি ভালোই ধৈর্য আছে; তবে ওর ধৈর্য আমার চেয়েও বেশি।


অভিনয় তার খুবই পছন্দ, একই সঙ্গে রাজনীতিও। রাজনীতিকে আমি খারাপ অর্থে দেখি না। মানুষের সঙ্গে মেলামেশা, তাদের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেয়া, মানুষকে সহায়তা করা, এজন্যই তো রাজনীতি করে, করা উচিত। এমন তো না যে, হঠাৎ করে রাজনীতি করছে; অভিনয় শুরু করার আগে থেকেই  রাজনীতি করত। অভিনয় নিয়ে আমার বলার কিছু নেই, সবাই বলবে কেমন করে। তবে অন্য যেটা করলে আমি খুশি হতাম সেটা হলো ও খুব ভালো আবৃত্তি করে আর ভালো লেখে। আমি মাঝে মাঝে বলি, অভিনয় করছ, সবকিছু করছ, সঙ্গে যদি লেখ তাহলে ওটা থেকে যাবে। অভিনয় মানুষ সবসময় মনে রাখতে পারে না। বাংলায় নাট্যরূপ দেয়ার কাজ যখনই ও করেছে, ভালো করেছে। আমার খুব ইচ্ছে, রবীন্দ্রনাথের গল্পগুলোকে নাটক আকারে লিখুক। কাজটা কঠিন, কিন্তু আমার মনে হয় ও ভালো করতে পারত। এটা আমার একটা শখ, যেটা ও করার সময় পায় না। আরেকটা শখের কথা শুনলে হয়তো অনেকে হাসবেÑ রবীন্দ্রনাথ যেখানে থাকতেন সেরকম একটা জায়গায় কবিতা আবৃত্তি করা বা তার একটা ভিডিও। সবগুলোই ও করতে চায়, বুঝে উঠতে পারে না কোনটা করবে। আবার রাজনীতিটাও ছাড়া যায় না, রাজনীতি করে যেহেতু মানুষের জন্য কিছু করা যায়, অভিনয়টা তো রক্তের মধ্যে আছেÑ ওটা তো ছাড়তে পারবেই না। সবগুলোই সে করবে। আমিও এভাবেই দেখে অভ্যস্ত।


এখন দিনকাল যেমন এসেছে, খুব হতাশ লাগে। নিরাপত্তা নিয়ে যখন সবাই বলে, চিন্তা হয়। ও তো খুব সহজে অনেক স্পষ্ট কথা বলে ফেলে। সবসময় একটা দুশ্চিন্তা কাজ করে। আবার মনে হয়, সবকিছু বন্ধ করে তো বসে থাকা যাবে না। এদেশের সব মানুষ যেভাবে চলছে, সেভাবেই চলতে হবে।


সব ভালো বললাম, খারাপ যদি বলতে হয়Ñ ওকে এতকিছু করতে হয়, ঘরে আমরা তাকে কম পাই। তবু বাবা হিসেবে ছেলে-মেয়ের প্রতি দায়িত্ব যেভাবে পালন করে, নিজের মানুষ বলে বলছি না, আমার মনে হয় এমন কাউকে করতে দেখিনি। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছেÑ ছেলে-মেয়েদের তো সবাই ভালোবাসে। সেও বাসে। কিন্তু ওদের কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করে না। আমাকেও  এটা শেখায়, যদিও আমি ব্যাপারটা থেকে পুরোপুরি বের হতে পারি না। পরিবারের অন্য সবার জন্য ও অনেক করেছে। (হেসে) শুধু মনে হয়, আমার জন্যই বোধহয় সময়টা একটু কম হয়ে যায়। আরেকটু সময় পেলে ভালো লাগত। কিন্তু আমিও চাই সে কাজের মধ্যেই থাকুক। যদি সারাদিন ঘরে বসে থাকত, তাহলেও হয়তো আমার ভালো লাগত না। আমিও আসলে কখনো এমন মানুষ পছন্দ করি না, যে কেবল বইপত্র নিয়ে পড়ালেখা করে বা নিজের স্বার্থ নিয়ে থাকে, আশপাশের মানুষের বিপদে দৌড়ে যায় না। সবসময়েই ওর ব্যস্ততা বেশি ছিলÑ রাজনীতি করার আগে বা পরে। ওর কাজ শেষÑ এমন কখনো দেখিনি; নিজেই কাজ খুঁজে নেয়। কিছু না করে ঘরে বসে থাকবে এটা আমি ভাবতেই পারি না। কোনোদিন তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরলেই বরং মনে হয়, শরীর খারাপ-টারাপ করল না তো!
আমাদের দুজনের পছন্দগুলো মোটামুটি একই ধরনের। কিছু অমিল তো থাকবেই। তবে আমার কাজে  কখনো বাধা দেয়নি, ও আশা করে আমি কাজ করব। আমিও ওর থেকে তেমনই আশা করি। শুধু চাই একটু সাবধানে থাকুক।

Comments

The Daily Star  | English

People didn’t sacrifice lives just for election: Asif Mahmud

The adviser stresses the need for reforms for which people came out and ousted 'fascist' Awami League government

20m ago