আমাদের মূল্য কোথায়, কেন দীর্ঘশ্বাস ফেলছি: সোহেল রানা

সোহেল রানা। ছবি: সংগৃহীত

নায়ক, পরিচালক, প্রযোজক সোহেল রানা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা 'ওরা ১১ জন'-এর প্রযোজক তিনি। সম্প্রতি পাঁচ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এই নায়ক। কয়েকবছর ধরে তিনি নানা অসুখে ভুগছেন।

হাসপাতাল থেকে ফেরার পর আজ সোমবার সকালে সোহেল রানা টেলিফোনে কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে। অনেকটা দুঃখের সঙ্গেই তিনি বললেন, 'জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মুক্তিযোদ্ধা সনদ কী কাজে লাগছে? মুক্তিযোদ্ধা আইডেন্টিটি কার্ড কী কাজে লাগছে? মুক্তিযোদ্ধাদের এই সনদ কেন দিয়েছিল? কী কাজের জন্য দিয়েছিলেন?'

তিনি বলেন, সম্মানটুকু দরকার। এই বয়সে এসে সম্মান ছাড়া আর কী দরকার? তা কি পাচ্ছি? আমি শুধু আমার কথা বলছি না, মুক্তিযোদ্ধাদের সবার হয়ে বলছি। আমাদের সম্মানটুকু দরকার।

হাসপাতাল থেকে ঘুরে এসে নানা অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন এই বয়সে হাসপাতালে যাই, সেখানে কী আরও যত্নবান হওয়া দরকার ছিল না? আরও সম্মান দেওয়া যেত না? আমি তো মনে করি মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়টাই এখন কমদামী পরিচয়। তা কেন হবে?

হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আগামী ২০ বছর পর কি দেশে কোনো মুক্তিযোদ্ধা খুঁজে পাওয়া যাবে? আমাদের তো বয়স হয়েছে। ২০ বছর পর তো কেউ থাকব না। প্রকৃতির নিয়মেই আমাদের চলে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমার দুঃখ নাই, অভাব নাই, কিন্তু দীর্ঘশ্বাস ফেলছি। মানসিকভাবে কষ্ট পাচ্ছি। আমাদের মূল্য কোথায়? কেন দীর্ঘশ্বাস ফেলছি?

নায়ক সোহেল রানা বলেন, আমার তো বিভিন্ন ক্লাবের কার্ড আছে। উত্তরা ক্লাবের কার্ড আছে, ঢাকা ক্লাবের কার্ড আছে। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে কেন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে সব কাজ করতে হবে? তারা কেন মর্যাদা পাবেন না?

'মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাদের সনদ দেওয়া হয়েছে। এটা হওয়া উচিত ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে দামী কার্ড। কিন্তু, এটা হয়ে গেছে দুনিয়ার কমদামী কার্ড। আমরা যারা বেঁচে আছি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে, আমাদের অপমান করার মানে কী?'

উল্লেখ্য, নায়ক সোহেল রানা 'মাসুদ রানা' সিনেমা দিয়ে রূপালি পর্দায় নাম লেখান। প্রথম সিনেমা দিয়ে বাজিমাত করেন তিনি। তারপর অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন। পেয়েছেন খ্যাতি ও ভালোবাসা। সিনেমায় অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্রে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

A floating mosaic of guavas, baskets and people

During the monsoon, Jhalakathi transforms into a floating paradise. Bhimruli guava market comes alive with boats carrying farmers, buyers, and tourists.

11h ago