পটিয়ার ওসির প্রত্যাহার দাবিতে বন্দরনগরীতে সড়ক অবরোধ

চট্টগ্রামের পটিয়ায় পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে এবং ওসির প্রত্যাহার চেয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী।
আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে পটিয়া থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। পরে দুপুর ১২টার দিকে তারা পটিয়া বাইপাসে সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়।
বিকেলে বন্দরনগরীর খুলশিতে ডিআইজি কার্যালয়ের সামনের সড়কও অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও আন্দোলনকারীরা জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের স্থানীয় এক নেতাকে ধরে পটিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় পুলিশ তাকে আটক করতে রাজি হয়নি।
পরে উভয়পক্ষের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়, যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের থানা থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয় বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর আজ সকালে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরের অপসারণ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
চট্টগ্রাম মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম-আহ্বায়ক রিদওয়ান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, 'গতরাতে খবর পেয়ে আমি থানায় যাই। সেখানে দিয়ে দেখি আমাদের কর্মীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। আমার অনেক ভাইকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে।'
বিক্ষোভরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, 'গত বছর জুলাই মাসে যেভাবে দমন-পীড়নের শিকার হয়েছিলাম, এবারও একইভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।'
বিকেল ৪টার দিকে খুলশি থানার সামনের সড়কও অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। সড়ক অবরোধের আগে এনসিপির চট্টগ্রামের নগর সমন্বয়ক ইরফানুল হক সাংবাদিকদের বলেন, 'পটিয়ায় ওসি ও অতিরিক্ত এসপির নেতৃত্বে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ হামলা করেছে। আমরা এখানে ডিআইজির সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলাম, কিন্তু আমাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি আমাদের কথা শুনতেই চাননি।'
বিকেল সাড়ে ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২০০ জনের বেশি আন্দোলনকারীকে সড়কে অবস্থান করতে দেখা যায়। তারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তারা এক ছাত্রলীগ নেতাকে থানায় নিয়ে এসে মারধর করে। তখন পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। পরে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে তারা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। পুলিশ তাদের থানা থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।'
Comments