‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার খুঁটিনাটি জানালেন মার্কিন জেনারেল

যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ারম্যান অব জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ জেনারেল ড্যান কেইন। ছবি: এপি

'অপারেশন মিডনাইট হ্যামার' নামে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় গতরাতের হামলার বিস্তারিত বিবরণ জানিয়েছে পেন্টাগন।

যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ারম্যান অব জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ জেনারেল ড্যান কেইন আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন সামরিক অভিযানের খুঁটিনাটি প্রকাশ করেছেন।

অভিযানের সূচনা

জেনারেল কেইন জানান, স্থানীয় সময়  শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মূলভূখণ্ড থেকে বিটু স্টিলথ বোমারু বিমানগুলো যাত্রা শুরু করে, কিছু বিমান প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে চলে যায় বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য, যা ছিল একটি কৌশল।

মূল আঘাতকারী বিমানগুলো পূর্ব দিকে এগিয়ে যায় এবং ১৮ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রা করে ইরান পৌঁছায়।

সাবমেরিন থেকে হামলা

শনিবার সন্ধ্যার দিকে একটি মার্কিন সাবমেরিন ইরানের ইসফাহান পরমাণু স্থাপনায় আঘাত হানার জন্য ২৪টির বেশি টমাহক ক্রুজ মিসাইল ছোড়ে। এটি ছিল হামলার প্রথম ধাপ।

আঘাতের আগে কৌশল ও প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা

জেনারেল কেইন বলেন, ইরানের আকাশসীমায় প্রবেশের আগে চতুর্থ ও পঞ্চম প্রজন্মের মার্কিন ফাইটার বিমানগুলো সামনে এগিয়ে গিয়ে শত্রু বিমানের আক্রমণ এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ছিল হামলার মূল বোমারু বিমানগুলোকে নিরাপদে প্রবেশ করানোর কৌশল।

সেইসঙ্গে, উচ্চ গতির প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে ফোরদো ও নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় পৌঁছার পথকে নিরাপদ করা হয়।

ফোরদোতে প্রথম আঘাত

জেনারেল কেইন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে ফোরদো পরমাণু স্থাপনায় প্রথম বিটু বোমারু বিমান দুটি বিশাল 'বাংকার বাস্টার' বোমা ফেলে। এরপর অন্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়।

এই হামলাগুলো সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিট থেকে ৭টা ৫ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন হয়। ইরানের স্থানীয় সময় অনুযায়ী, এই সময় ছিল রোববার ভোররাত ২টা ১০ মিনিট।

মোট বোমা ও আকাশযানের সংখ্যা

এই অভিযানে মোট ১৬টি জিবিইউ-৫৭ 'ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর' বোমা ফেলা হয়। প্রতিটি বোমার ওজন ছিল ৩০ হাজার পাউন্ড।

জেনারেল কেইন জানান, বিশাল এই অভিযানে অংশ নিয়েছে ১২৫টির বেশি বিমান—যার মধ্যে ছিল বিটু স্টিলথ বোমারু, রিফুয়েলিং ট্যাঙ্কার, গোয়েন্দা বিমান ও ফাইটার জেট।

একযোগে হামলা

বোমারু বিমানগুলো একই সঙ্গে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনা—ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে আঘাত হানে। সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে হামলা শুরুর পর ৭টার আগেই সেগুলো ইরানের আকাশসীমা ত্যাগ করে।

এই অভিযানে অংশ নেওয়া সাতটি বিটু বোমারু বিমান মিসৌরি থেকে যাত্রা শুরু করে। প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার দূরে গিয়ে এ হামলা বিটু মিশনের ইতিহাসে দ্বিতীয় দীর্ঘতম হামলা বলে উল্লেখ করেন জেনারেল কেইন।

ফিরতি যাত্রা

কেইনের ভাষ্য অনুযায়ী, 'হামলা শেষে ফেরার পথে ইরান থেকে মার্কিন বিমান লক্ষ্য করে কোনো আঘাত হয়নি।'

জেনারেল কেইন বলেন, 'হামলার বিস্তারিত অল্প কয়েকজন পরিকল্পনাকারী এবং ওয়াশিংটন ও ট্যাম্পার কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার মধ্যে গোপন রাখা হয়েছিল।'

তিনি আরও বলেন, '৭টি বিটু স্পিরিট বোমারু বিমানের প্রতিটিতে ছিলেন দুজন করে ক্রু। তারা পূর্ব দিকে নীরবে এগিয়ে যায় এবং ন্যূনতম যোগাযোগ চালিয়ে যায়।'

 

Comments

The Daily Star  | English
students to block Shahbagh tonight in protest

Chhatra Dal blocks Shahbagh protesting mobs, academic disruption

JCD leaders and activists began gathering at Nayapaltan area earlier in the afternoon

26m ago