'এ তো শুরু মাত্র' — আরও সাফল্য চাই বাভুমার

২৭ বছরের আক্ষেপ ঘোচানো গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) শিরোপা এখন দক্ষিণ আফ্রিকার। তবে এই সাফল্যেই থেমে থাকতে চান না অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। এই সাফল্য যেন দেশের ক্রিকেটের বহু ট্রফি জয়ের সূচনা হয়, তাই প্রত্যাশা করছেন তিনি।

এর আগে একদিনের বিশ্বকাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১৮টি প্রচেষ্টার মধ্যে কেবল একবারই ফাইনালে উঠেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০২৪ সালে বার্বাডোজে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যেখানে তারা ভারতের কাছে হেরে যায়। সেই ম্যাচে শেষ ৩০ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩০ রান, হাতে ছিল ৬টি উইকেট। তবু জয়ের মুখ দেখা হয়নি।

কিন্তু লর্ডসে এবার আর তেমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য ঘটেনি। শনিবার, ফাইনালের চতুর্থ দিনের সকালে, আইডেন মার্করামের ১৩৬ ও বাভুমার ৬৬ রানের ওপর ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে।

প্রোটিয়াদের হয়ে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট খেলতে যাওয়া বাভুমা বলেন, দলটি অনুপ্রেরণা পেয়েছে দেশের রাগবি দল 'স্প্রিংবকস'-এর সাফল্য দেখে, যারা চারবার রাগবি বিশ্বকাপ জিতেছে — সর্বশেষ দুই আসরসহ।

সাংবাদিকদের বাভুমা বলেন, 'এই জয় দলের জন্য, আমার নিজের জন্য এবং দেশের জন্য এক বিশেষ মুহূর্ত। আমি রাগবির ছেলেদের দেখেছি, আর ওদের মধ্যে সবচেয়ে প্রশংসনীয় যেটা, তা হলো — তারা সফল হয়েও কীভাবে "দক্ষিণ আফ্রিকীয়" পরিচয়কে নিজেদের মধ্যে ধারণ করেছে।'

'আমরা দক্ষিণ আফ্রিকানরা অনেক দিক থেকে অনন্য। আমাদের অতীত যেভাবে আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গড়েছে, সেটা তারা যেভাবে তুলে ধরেছে, তা আমাদের সবার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আমরাও এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম, যা হবে বিশেষ, স্মরণীয়,' যোগ করেন অধিনায়ক।

৩৫ বছর বয়সী বাভুমা স্পষ্ট জানিয়ে দেন — তার লক্ষ্য এখানেই থেমে নেই। সামনে আরও শিরোপা জয়ের প্রত্যয় প্রকাশ করে বলেন, 'আমরা চাই, এটাই হোক শুরু। আমরা চাই এটা হোক আরও অনেক ট্রফি জয়ের সূচনা।'

বাভুমা আশা প্রকাশ করেন, এই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের ফলে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট ক্রিকেটের গুরুত্ব বাড়বে। কারণ আসন্ন ২০২৫-২৬ ঘরোয়া মৌসুমে কোনো টেস্ট ম্যাচই সূচিতে নেই। বাভুমা বলেন, 'আমরা আরও টেস্ট খেলতে চাই। আমরা চাই বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলতে। এই জয়ের ফলে হয়তো আমরা আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবো। শুধু বড় দলগুলোর কাছেই নয়, বরং ছোট দলগুলোর কাছেও।'

তুলনামূলক অনভিজ্ঞ এই দলটি যথেষ্ট সাহসিকতা দেখিয়েছে, কিন্তু এখনো উন্নতির জায়গা আছে জানিয়ে বলেন, 'গত তিন-চার দিনেও আমরা নিখুঁত ক্রিকেট খেলিনি। তবু কোনো না কোনোভাবে আমরা কাজটা শেষ করে ফেলতে পেরেছি — এটাই দলের মানসিকতা।'

আগের সফল দক্ষিণ আফ্রিকান টেস্ট দলের মতো ধারাবাহিক সাফল্য পেতে চান বাভুমা। বিশেষ করে গ্রায়েম স্মিথের নেতৃত্বাধীন সেই দল, যারা ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত টানা তিন বছর টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ছিল।

'আমরা দল হিসেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নিজেদের বিচার করবো তিন-চার বছর পর। আমরা চাই গ্রায়েম স্মিথ ও তার দলের মতো কিছু করে দেখাতে,' বলেন বাভুমা।

ডব্লিউটিসির নতুন চক্রে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম প্রতিপক্ষ হবে পাকিস্তান ও ভারত। সেখানেও জয়ের প্রত্যয় দেখিয়ে অধিনায়ক বলেন, 'আমরা এবার পাকিস্তান ও ভারতে গিয়ে জিততে চাই।'

Comments

The Daily Star  | English
enforced disappearance in Bangladesh

Enforced disappearance: Anti-terror law abused most to frame victims

The fallen Sheikh Hasina government abused the Anti-Terrorism Act, 2009 the most to prosecute victims of enforced disappearance, found the commission investigating enforced disappearances.

7h ago