শেষ হচ্ছে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা, ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ আহরণে প্রস্তুত জেলেরা

ছবি: স্টার

সাগরে মাছ ধরার ওপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ বুধবার রাত ১২টার দিকে। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার প্রস্তুতি ইতোমধ্যে প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছেন পটুয়াখালীর ও বরিশালের জেলেরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মধ্যরাতে আবারও সাগরে মাছ শিকারের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত পটুয়াখালীর কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী উপজেলার জেলেরা। ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ বেচাকেনার বৃহৎ পাইকারি বাজার কলাপাড়ার মহিপুর-আলীপুরে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। আড়তগুলোতে জেলেসহ এ পেশা সংশ্লিষ্ট মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। বরফ কলগুলোও ফিরেছে উৎপাদনে। ট্রলারমালিকরাও আবার ট্রলারের জাল-জ্বালানি-খাবারসহ বাজার-সওদা, বরফ বোঝাই করে জেলেদের সাগরমুখী যাত্রার অপেক্ষায় রয়েছেন।

আজ বিকেল থেকেই কলাপাড়া আলীপুর ও মহিপুরে অন্তত ২০০ ট্রলার আর প্রায় ২০ হাজার জেলে সাগর যাত্রায় নামা শুরু করেছেন। ইলিশসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ পাওয়ার আশায় বুক বেঁধে সবাই সাগর অভিমুখে যাত্রায় করছেন।

আফজাল হোসেন নামে এক জেলে বলেন, ১৫ বছর ধরে সাগরে যাই। এবারে সবাই মিলে আন্তরিকভাবে নিষেধাজ্ঞা পালন করেছেন। এখন সাগরে নামছেন ইলিশের আশায়।

মহিপুর মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজু আহম্মেদ রাজা মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, জেটি মেরামত, ধোয়ামোছা সব শেষ করেছে জেলেরা। এখন সবাই বরফ নেওয়ার কাজ করছেন। ছোট-বড়-মাঝারি মিলিয়ে প্রায় ২০০ ফিশিং বোট এই ঘাট থেকে আজ মধ্য রাতে সাগরে নামবে। একেকটি মাঝারি ট্রলারে তেল, বরফ, বাজার-সওদা মিলে কমপক্ষে আড়াই লাখ টাকা খরচ হচ্ছে এবারে সাগরযাত্রায়। বড় ট্রলারে কমপক্ষে আট লাখ টাকা লাগছে।

তিনি আরও বলেন, বরফ কলগুলো আরও ৪৮ ঘণ্টা আগে চালু করার অনুমতি দিলে ভালো হতো। কারণ বরফ প্রস্তুতে কমপক্ষে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগে। এতে লোকসান কম হতো। তারপরও জেলেরা ছুটবেন সাগরযাত্রায় ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের আশায়। কলাপাড়ার গোটা উপকূলে জেলে সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। শুধু মহিপুর-আলীপুর নয়, এখানকার ঢোশ, আশাখালী, লালুয়ার ব্যুরো জালিয়া, চান্দুপাড়া সর্বত্রই জেলেদের ব্যস্ত সময় কাটছে। তবে কেউ কেউ প্রচণ্ড গরমের কারণে সাগর উত্তাল থাকার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ছবি: মনির উদ্দিন অনিক

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ছিল ইলিশের উৎপাদন ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা। তা আমরা সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছি। জেলেরা সরাসরি এর সুফল পাবেন।

অন্যদিকে বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অফিস জানায়, এই বিভাগে চার লাখ ২১ হাজার ৯৩ জন জেলের মধ্যে এক লাখ ৪৬ হাজার ২৯ জন সমুদ্রগামী। তারা সাত হাজার ৪০৫টি বোট নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়।

বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অফিসের পরিচালক মো. আলফাজ উদ্দিন শেখ জানান, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় বাজারে মাছের আমদানি বাড়বে। ইলিশসহ সব মাছের সরবরাহ বাড়ার ফলে দাম কমে আসবে।

গত ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে মোট ৫৮ দিনের জন্য যেকোনো প্রজাতির মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার।

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

6h ago