সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও শাসক দানবে পরিণত হতে পারে: বদিউল আলম মজুমদার

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, 'আবু সাঈদসহ ছাত্ররা প্রাণ দিয়েছিলেন দেশের মৌলিক সংস্কারের জন্য। কিন্তু সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে দেশ আবার স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার শঙ্কা থেকেই যায়।'
'এমনকি সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও, সংস্কার না হলে শাসক দানবে পরিণত হতে পারে,' বলেন তিনি।
শনিবার দুপুরে রংপুরের আরডিআরএস হলরুমে সুজন আয়োজিত 'জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বদিউল আলম প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, আবু সাঈদের শহীদ দিবসে সংবিধানসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চুক্তি হবে।
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'কিছু পদক্ষেপ সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিতে পারলেও, বড় ধরনের পরিবর্তনের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন। জাতীয় সনদে এমন বেশ কিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা নিয়ে সবাইকে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে।'
দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের পক্ষে মত দিয়ে তিনি বলেন, 'উচ্চকক্ষে অর্ধেক দলীয় ও অর্ধেক নির্দলীয় প্রতিনিধি থাকলে সমাজের সব স্তরের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। এছাড়া, নিম্নকক্ষে গৃহীত জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তগুলোর ওপর উচ্চকক্ষ নজরদারি করতে পারবে।'
ছাত্র রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ছাত্ররা রাজনীতি করবে, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেবে—এটাই স্বাভাবিক। তবে তারা যেন লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত না হয়। আমরা ছাত্র রাজনীতি বন্ধ চাই না, চাই লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র-শিক্ষক ও পেশাজীবী রাজনীতির অবসান।'
বদিউল আলম আরও বলেন, 'সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও নিজস্ব কাঠামোয় সংস্কার সাধন করতে হবে। নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়নে যোগ্যতা ও সততার মাপকাঠি চালু করা জরুরি। জনকল্যাণে নিবেদিত, সৎ ও দক্ষ প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেওয়া উচিৎ।'
তিনি রাজনৈতিক দলের আর্থিক স্বচ্ছতার ওপর জোর দিয়ে বলেন, 'দলগুলোর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা নিশ্চিত না হলে গণতন্ত্র দুর্বল থেকে যাবে।'
সভায় শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা নারীর ক্ষমতায়ন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত শিক্ষা-স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও গণতন্ত্র চর্চা জোরদারে নানা সুপারিশ তুলে ধরেন।
Comments