‘কঠোর’ আইনে আপত্তি জানিয়ে সচিবালয় কর্মচারীদের বিক্ষোভ

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণোয়নের উদ্যোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সচিবালয়ের কর্মচারীদের বিক্ষোভ। ছবি: স্টার

সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ সংশোধন করে শাস্তির বিধান আরও কঠোর করতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগে আপত্তি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।

আজ রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো সচিবালয়ে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণোয়নের উদ্যোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

'নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন' আখ্যায়িত করে এই অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনের সামনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হতে থাকেন। ১০টার দিকে কয়েকশ কর্মকর্তা-কর্মচারী 'মৌন মিছিল' কর্মসূচি পালন করার কথা থাকলেও তারা স্লোগান দিয়েছেন। 'এক হও লড়াই কর; অবৈধ কালো আইন, মানি না মানব না'; 'আমাদের দাবি মানতে হবে'- এমন স্লোগান দেন তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামনে দিয়ে নতুন ভবন এবং ক্লিনিক ভবনের সামনে দিয়ে ১১ নম্বর ভবনের সামনে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

দুপুর দেড়টার দিকে তারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।

জানা যায়, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধনে অধ্যাদেশের খসড়া নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছেন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।  অধ্যাদেশের খসড়ায় শৃঙ্খলা বিঘ্ন, কর্তব্য সম্পাদনে বাধা, ছুটি ছাড়া কর্মে অনুপস্থিত, কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানির জন্য কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চাকরিচ্যুতির বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে  অনুমোদন দেওয়া হলেও খসড়াটি পর্যালোচনার জন্য চারজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান এবং গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোনো কর্মচারীর অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে অন্তত সাত থেকে আটটি ধাপ পার করতে হয়। ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার আগে বিভিন্ন তদবিরে শাস্তি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে।

এদিকে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। অধ্যাদেশ প্রত্যাহার করা না হলে আগামী দিনে সচিবালয় অচল করাসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার কথা চিন্তা করবেন তারা।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের কেউ নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, গত ২২ মে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিদ্যমান আইনে থাকা সরকারি কর্মচারীদের ২৫ বছর পর কারণ দর্শানো ছাড়াই বাধ্যতামূলক অবসরে দেওয়ার বিধান বাদ দিতে বলেছে। এটি বড় সংস্কার, এটি নিয়ে কর্মচারীরা কিছু বলছে না।

'সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে শৃঙ্খলা ফেরানোর উদ্যোগকে তারা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে, এটি গ্রহণযোগ্য নয়,' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Parties agree on chief justice appointment, limiting emergency powers

Manifesto provision allows top-two judge choice; cabinet to approve emergency declaration

1h ago