নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পরামর্শ কয়েকজন উপদেষ্টার

উপদেষ্টা পরিষদের একটি সভা। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সৌজন্যে

অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা সরকার প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

সর্বশেষ দুটি উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব পরামর্শের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের কোনো মত জানাননি প্রধান উপদেষ্টা।

গত বৃহস্পতিবার সকালে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের আনুষ্ঠানিক বৈঠক এবং গতকাল শনিবার উপদেষ্টা পরিষদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল পরিকল্পনা কমিশনে হওয়া উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানান, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এক উপদেষ্টা—যিনি একটি বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন—নিজের মত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিল যেকোনো মাসে হতে পারে—এমন ঘোষণা দিলে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও সংহত হতে পারে।

তার মতে, এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার যে বার্তা, তা আরেকটু স্পষ্ট হবে। এ সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলো ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারে। একইসঙ্গে জুলাই হত্যার বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন ওই উপদেষ্টা।

অপর একটি সূত্র জানায়, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নিয়ে সম্প্রতি সময়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও আরও একটি পক্ষের বক্তব্য মিলে যাওয়ায় সরকার মনে করছে, এসব বিষয়ে তাদের মধ্যে হয়তো অন্তরালের কোনো আলোচনা হয়েছে। যা সরকারকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে। এ অবস্থা কাটাতে ড. ইউনূস যদি নিজের ঘোষিত ডিসেম্বরের পরে এবং ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে যেকোনো নির্দিষ্ট মাসে নির্বাচনের ইঙ্গিত দেন, তাহলে উভয় কূলই রক্ষা পাবে।

তার মতে, এমন করা হলে রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক চাপে সরকার নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে, তা নিয়ে সমালোচনার সুযোগ থাকবে না। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশাও পূরণ হবে।

সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন, নির্বাচনী রোডম্যাপ তিনি ঘোষণা করেই রেখেছেন। রাজনৈতিক দলগুলো তারপরও ধৈর্য দেখাতে পারছে না। এ কারণে অভিমান থেকে ড. ইউনূস বিরক্ত হয়ে পদ ছাড়ার কথা বলেছিলেন।

তবে শনিবারের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তার সতীর্থদের বলেছেন, রাগ-অভিমান নিয়ে যা বলেছিলাম তা ভুলে যান। দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে দায়িত্ব নিয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষ করতে হবে।

সরকার উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ড. ইউনূস পদত্যাগের বিষয়ে কথা তুললে উপস্থিত প্রায় সব উপদেষ্টা তাকে এমন সিদ্ধান্তের দিকে না যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সরকার প্রধানের এমন মন্তব্যের পরও বৈঠকে উপস্থিত অন্তত তিন উপদেষ্টা চুপ ছিলেন।

এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে উপস্থিত একজন জানান, সচিবালয়ের ৫ ও ৬ নম্বর ভবনে অফিস করেন এমন তিনজন উপদেষ্টা নীরব ছিলেন। তবে তাদের নাম উল্লেখ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

শনিবারের বৈঠকে সরকার প্রধানকে কেমন দেখলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে এক উপদেষ্টা বলেন, 'গত দুই দিনের তুলনায় অনেকটাই নির্ভার লেগেছে। তবে এই কয়েকদিনের প্রচণ্ড চাপের কিছুটা ছাপ তার চেহারায় ছিল।'

Comments

The Daily Star  | English

FY26 Budget: Subsidy spending to hold steady

The budget for fiscal 2025-26 is likely to be smaller than the current year’s outlay, but subsidy spending is expected to remain almost unchanged at Tk 1,15,741 crore.

9h ago