৫ আগস্টের পর সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ

আইএসপিআর
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী।

বৃহস্পতিবার রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের পর কিছু কুচক্রী মহলের তৎপরতায় সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। ফলশ্রুতিতে, সরকারি দপ্তর, থানাগুলোতে হামলা, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর আক্রমণ, ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, মব জাস্টিস, চুরি, ডাকাতিসহ বিবিধ বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। এ ধরনের সংবেদনশীল ও নাজুক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের মনে নিরাপত্তাহীনতার জন্ম নেয়।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এমতাবস্থায়, ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব সেনানিবাসে প্রাণ রক্ষার্থে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। উদ্ভূত আকস্মিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থীদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করার চেয়ে তাদের জীবন রক্ষা করা প্রাধান্য পেয়েছিল।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, পাঁচজন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাসহ বিবিধ ১২ জন ও ৫১ জন পরিবারসহ (স্ত্রী ও শিশু) সর্বমোট ৬২৬ জনকে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল, বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

আইএসপিআর জানায়, সে সময়ে শুধুমাত্র মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন রক্ষা করাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। পরিস্থিতির উন্নয়ন সাপেক্ষে, আশ্রয় গ্রহণকারীদের বেশিরভাগই এক-দুই দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন এবং এর মধ্যে পাঁচজনকে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ/মামলার ভিত্তিতে, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সেনানিবাসে অবস্থানকারী ও আশ্রয় প্রার্থীদের ব্যাপারে গত ১৮ আগস্ট আইএসপিআরের আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং একই দিনে ১৯৩ জন ব্যক্তির একটি তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও একজন এনএসআই সদস্য ছাড়া) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়—যা ছিল একটি মীমাংসিত বিষয়। সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থী এসব ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষার্থে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাময়িক আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য যে, তৎকালীন বিরাজমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়িয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসের অভ্যন্তরে প্রাণ রক্ষার্থে আশ্রয় গ্রহণকারী ৬২৬ জন ব্যক্তির একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও একজন এনএসআই সদস্যসহ) দেওয়া হলো।

তালিকা দেখতে ক্লিক করুন

এমতাবস্থায়, সবাইকে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও আস্থার সঙ্গে জাতির পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh energy import from Nepal

Nepal set to export 40mw power to Bangladesh via India today

Bangladesh has agreed to import electricity from Nepal for the next five years

4h ago