শুক্রবার সংসদের সামনে নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে 'নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা' শীর্ষক সমাবেশ।

আগামী ১৬ মে (শুক্রবার) বিকেল ৩টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে (সংসদ ভবনের সামনে) এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

মৈত্রীযাত্রার আয়োজকরা আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, ১৬ মে আমরা বাংলাদেশের নারীরা একত্রিত হওয়ার ডাক দিয়েছি। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে দেশে স্বৈরাচারের পতন ঘটলেও অনেক কিছুই রয়ে গেছে অপরিবর্তিত। অন্য অনেক অন্যায়-অনিয়ম, বিচারহীনতার পাশাপাশি নারীদের ওপর সহিংসতা ও প্রকাশ্যে হয়রানিও অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে এটিকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলে প্রত্যাখ্যানের সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা আমরা লক্ষ করেছি। ন্যায্যতা ও মর্যাদার আকাঙ্ক্ষাকেও 'অযৌক্তিক' বলে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আমরা এই অপচেষ্টাকে এবং অসততার রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করছি। এ ধরনের প্রচারণা বিভিন্ন ধর্ম, শ্রেণি ও পেশার নারী ও মেয়েদের প্রতি অসম্মান ও সহিংসতাকে উৎসাহিত করছে। বিভিন্ন ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের উপস্থাপিত দাবিগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা রাষ্ট্রের নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ করেছি। আমরা ক্রমাগত জবাবদিহিতা দাবি করলেও রাষ্ট্র কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য, সতর্কতা ও সোচ্চার অবস্থান। দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে বুঝতে হবে—এ লড়াই কেবল নারীর একার নয়, এ লড়াই বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও ভবিষ্যতের।

'মৈত্রীযাত্রার লক্ষ্য হচ্ছে নারী অধিকার সুরক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি, চরমপন্থা ও প্রতিক্রিয়াশীলতার বাইরে গিয়ে সংলাপের পরিসর তৈরি করা এবং নারী ও প্রান্তিকজনের অধিকারের প্রশ্নে সরকার ও রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। তার থেকেও বড় একটি লক্ষ্য হচ্ছে নারী এবং বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে জানানো যে আমরা কেউ একা নই। আমরা নিত্যদিন হয়তো পথে নামি না, কিন্তু আমরা আছি, আমাদের নিত্যদিনের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। আমরা আমাদের প্রাপ্য অধিকারের জন্য লড়ে যাব; কারণ, মানুষ হিসেবে সমান সুযোগ তথা সমঅধিকার আর সমমর্যাদা আমাদের সবার ন্যূনতম প্রাপ্য।'

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, 'নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা' উদ্যোগটি আমরা নিয়েছি সর্বস্তরের নারীদের সম্মিলিত শক্তি জড়ো করে। কোনোরকম রাজনৈতিক পরিচয়বিহীন নারী যেমন আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, তেমনই আছেন দীর্ঘ সময় ধরে নারী অধিকারের জন্য লড়ে যাওয়া নারী সংগঠন, রয়েছেন মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ। আছেন বিভিন্ন পরিচয়ের মানুষ—নারী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী, বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী, শ্রমজীবী মানুষ, দলিত নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা, গার্মেন্টস শ্রমিক, চা-শ্রমিক, গৃহকর্মী, গৃহিণী, অবাঙালি, যৌনকর্মী, হিজড়া ও লিঙ্গবৈচিত্র্যময় সম্প্রদায়, এবং আরও অনেকে। ক্রমবর্ধমান আক্রমণ, বৈষম্য ও অন্যায়ের পরিপ্রেক্ষিতে মৈত্রীযাত্রার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সমমনা নারীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্যোগে ও গণ-অর্থায়নের মাধ্যমে আমরা 'নারীর ডাকে মৈত্রীযাত্রা' আয়োজনের জন্য যৌথভাবে কাজ করছি। যারা আমাদের সংহতি জানাচ্ছেন, আমরা তাদের স্বাগত জানাই এবং আশা করি ১৬ মে (শুক্রবার) তারা আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন।

'আমরা বিশ্বাস করি, একটি গণতান্ত্রিক দেশে সংবিধানের মূল চেতনা হবে সাম্য ও মর্যাদা। এই মাটিতে দাঁড়িয়ে তাই আমরা ঘোষণা করি: সমাজে সমমর্যাদার সঙ্গে বসবাসের অধিকার সবার। পরিচয়ের ভিত্তিতে বৈষম্য নয়, সম্মানজনক সহাবস্থানই হোক আমাদের ভবিষ্যৎ। আমরা আছি, থাকব—বারে বারে আসব।'

Comments

The Daily Star  | English
eid-ul-azha emergency cases at pongu hospital

An Eid evening at Pongu Hospital: overflowing emergency, lingering waits

The hospital, formally known as NITOR, is a 1,000-bed tertiary medical facility that receives referral patients from all over the country

2h ago