মহামারির মধ্যে গড়ে প্রতিদিন ১ জন করে নতুন বিলিয়নিয়ার: অক্সফাম গবেষণা

ছবি: সংগৃহীত

২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে প্রায় ৫৭৩ জন নতুন বিলিয়নিয়ার হয়েছেন। অর্থাৎ মহামারি চলাকালে গড়ে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন নতুন করে বিলিয়ন মার্কিন ডলার সম্পদের মালিক হয়েছেন। বর্তমানে বিশ্বে মোট বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ২ হাজার ৬৮৮ জন।

আন্তর্জাতিক দাতাসংস্থা অক্সফামের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সোমবার সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।

অক্সফাম জানায়, করোনা মহামারি চলাকালে বিশ্বব্যাপী ভোক্তারা জ্বালানি ও খাদ্যের মূল্য পরিশোধ করতে গিয়ে হিমশিম খেলেও, এই ২ খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সেগুলোর মালিকরা দাম বৃদ্ধির ফলে লাভবান হয়েছেন।

খাদ্য ও কৃষি খাতে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করার পর গত দুই বছরে এই ২ খাতের বিলিয়নিয়ারদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৫ শতাংশ বা ৩৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে।

২০২০ সালের পর থেকে খাদ্যপণ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন করে প্রায় ৬২ জন বিলিয়নিয়ার হয়েছেন।

তেল, গ্যাস ও কয়লা খাতের ব্যবসায়ীদের মোট সম্পদ ২০২০ সাল থেকে ২৪ শতাংশ বা ৫৩ বিলিয়ন বেড়েছে।

মহামারি চলাকালে ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে ৪০ জন নতুন করে বিলিয়নিয়ার হয়েছেন।

মহামারি মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে যখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মেটাতে বাড়তি খরচের পাশাপাশি ওষুধের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়েছ, তখন এসব খাতের ব্যবসায়ীরা ধনী হয়েছেন।

বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০ ধনীর মধ্যে ৭ জনই প্রযুক্তি খাতের। তাদের মধ্যে টেসলার ইলন মাস্ক, অ্যামাজনের জেফ বেজোস এবং মাইক্রোসফটের বিল গেটসের মোট সম্পদ গত ২ বছরে ৪৩৬ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৯৩৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

মহামারি চলাকালে প্রযুক্তি খাতেও বেশ কয়েকজন নতুন বিলিয়নিয়ার হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এ প্রতিবেদনে গত ২ বছরের ধনী-গরীব বৈষম্যে বৃদ্ধির বিষয়টিও প্রকাশ পেয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মহামারি চলাকালে বিলিয়নিয়ারদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৩ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৪২ শতাংশ বেড়ে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে। পুঁজিবাজারে বড় অংকের লাভ করে এই সম্পদ তারা অর্জন করেছেন।

অক্সফামের ইনইক্যুয়ালিটি পলিসি প্রধান ম্যাক্স লসন বলেন, 'মহামারির প্রথম বছরে ধনীদের সম্পদ অনেক বেড়ে যায়। চূড়ায় ওঠার পর অনেক সময় এটি আর নামেনি। পরের দিকে এটি কিছুটা কমে গেছে।'

এদিকে কয়েক দশকের অগ্রগতির বিপরীতে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এ বছর ২৬৩ মিলিয়ন মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে অক্সফামের গত মাসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল।

লসন বলেন, 'একই সময়ে এত দারিদ্র্য বৃদ্ধি এবং সম্পদের বৃদ্ধি আগে কখনো দেখিনি। একটি বিশাল সংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'

ক্রমাগত বৈষম্য প্রশমন করতে এবং মূল্যবৃদ্ধির চাপে জর্জরিত নিম্ন-মধ্যবিত্তদের সহায়তা করতে অক্সফাম বিশ্বের দেশগুলোর সরকারকে ধনী ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ওপর আরও বেশি কর আরোপের পরামর্শ দিয়েছে।

অতিরিক্ত করপোরেট মুনাফার উপর অস্থায়ী ৯০ শতাংশ ট্যাক্স, সেইসঙ্গে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদের ওপর এককালীন ট্যাক্সের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

13h ago