শাহজাদপুরে কাছারিবাড়িতে রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে ৩ দিনের অনুষ্ঠান

শাহাজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি

আজ পঁচিশে বৈশাখ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মজয়ন্তী। এ উপলক্ষে কবিগুরুর স্মৃতিধন্য শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্রজয়ন্তী উৎসব।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈত্রিক জমিদারি সূত্রে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে একাধিকবার এসেছেন। ঐতিহাসিকদের মতে ১৯০১ সালে সর্বশেষ এখানে আসেন কবি।

তবে জমিদারির কাজে এলেও কবিগুরু শাহজাদপুরের মাটি ও মানুষের সঙ্গে গড়ে তোলেন আত্মিক সম্পর্ক। এখানকার মাটি ও মানুষের সাধারণ জীবন যাপন কবিকে আকর্ষণ করে। গবেষকদের মতে, রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যে শাহজাদপুরের গুরুত্ব অনেক।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক ও গবেষক ড. আব্দুল আলিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কবিগুরুর ছোট গল্প পোস্টমাস্টার-এর প্রধান চরিত্র রতনকে কবি খুঁজে পেয়েছেন এই শাহজাদপুরে।

ড. আলিম বলেন, সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালি, গল্পগুচ্ছ, ছিন্নপত্র, পঞ্চভূত এখান থেকেই রচনা করেছেন কবি। এছাড়া শাহজাদপুরে কবির ৩৮টি চিঠির সন্ধান পাওয়া যায়। রবীন্দ্র সাহিত্যে শাহজাদপুরের গুরুত্ব অপরিসীম বলে জানান তিনি।

রবীন্দ্রনাথের কাছে শাহজাদপুর কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তা তার চিঠির মধ্যে দিয়েও জানা যায়। কবিগুরু তার ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবীর কাছে এক চিঠিতে লিখেছেন 'আমি এখানে (শাহজাদপুরে) লেখার অনুপ্রেরণা অন্য যেকোনো স্থানের চেয়ে বেশি পাই।'

রবীন্দ্র গবেষক হাবিবুর রহমান স্বপন বলেন, ১৮৪০ সালে নাটোরের রানি ভবানীর কাছ থেকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ শাহজাদপুরের জমিদারি ক্রয় করেন। এরপর পারিবারিক জমিদারি দেখাশোনার দায়িত্ব গিয়ে পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর।

জমিদারি সূত্রে শাহজাদপুরে এসে কবি এখানকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে গড়ে তোলেন আত্মিক সম্পর্ক। এখানকার মানুষের কথা শোনেন, তাদের দুঃখ দুর্দশা নিজে উপলব্ধি করেন। এ অঞ্চলের কৃষক ও গবাদি পশুপালনকারীদের দুর্ভগের কথা চিন্তা করে কবি তার জমিদারি থেকে পতাজিয়ায় প্রায় হাজার একর গো-চারণভূমি দান করেন।

স্বপন বলেন, কবিগুরুর সেই অবদানে শাহজাদপুরে গড়ে উঠেছে দেশের অন্যতম দুগ্ধ শিল্প, বাঘাবাড়ী মিল্ক ভিটা।

শাহজাদপুর রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির কাস্টডিয়ান হাবিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও কাছারিবাড়িতে কবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আলোচনা সভা, সঙ্গীতানুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি, নাটক, নৃত্যানুষ্ঠান সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে। স্থানীয় শিল্পীদের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা শিল্পীরা এসব অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

A budget without illusions

No soaring GDP promises. No obsession with mega projects. No grand applause in parliament. This year, it’s just the finance adviser and his unemotional speech to be broadcast in the quiet hum of state television.

6h ago