শিরোপা জিতে অবশেষে ‘চুপ করিয়ে দিতে পারলেন’ কেইন

'আমার ক্যারিয়ারজুড়ে অনেক মানুষ ঘুরেফিরে শুধু একই কথাই বলছে যে, আমি এখনও কোনো শিরোপা জিতিনি। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে চুপ করিয়ে দিতে পারলে ভালো লাগবে।'
কিছুদিন আগে এমন মন্তব্য করেছিলেন জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ ও ইংল্যান্ড জাতীয় দলের স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন। তার চাওয়া পূরণ হয়েছে অবশেষে। সমালোচকদের চুপ করাতে পেরেছেন তিনি। গোলের পর গোল করে গেলেও দলীয় সাফল্যের ঝুলিতে যে শূন্যতা ছিল, সেটা দূর করে পেয়েছেন শিরোপা জয়ের স্বাদ।
গতকাল রোববার রাতে মাঠে না নেমেও বুন্ডেসলিগায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বায়ার্ন। ফ্রেইবুর্গের সঙ্গে বায়ার লেভারকুসেন ড্র করায় দুই ম্যাচ হাতে রেখেই প্রতিযোগিতার মুকুট পুনরুদ্ধার করেছে তারা। জার্মানির সর্বোচ্চ লিগে বাভারিয়ানদের এটি রেকর্ড ৩৪তম শিরোপা, কেইনের পেশাদার ক্যারিয়ারের প্রথম।
আগের দিনই অবশ্য শিরোপা নিশ্চিত করতে পারত বায়ার্ন। কিন্তু পয়েন্ট খুইয়ে সেই সুযোগ নষ্ট করে তারা। আরবি লাইপজিগের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে গোল হজম করে বসে দলটি। খেলা ড্র হয় ৩-৩ ব্যবধানে।
প্রায় দেড় দশক ধরে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকভাবে উজ্জ্বল ৩১ বছর বয়সী তারকা। তা ক্লাবের হয়ে হোক কিংবা জাতীয় দলের জার্সিতে। কিন্তু একটা আক্ষেপ এতদিন ধরে ক্রমাগত তাড়া করেছে তাকে— বারবার শিরোপা ছোঁয়ার খুব কাছে গিয়ে ব্যর্থ হওয়া। এখন তার জন্য সেসব স্রেফ অতীত!
ইংলিশ ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পারের হয়ে মোট তিনটি ফাইনাল হেরেছেন কেইন। দুটি ছিল লিগ কাপের আর বাকিটি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। ইংল্যান্ডের হয়ে দুবার হেরেছেন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। ২০২৩ সালে বায়ার্নে যোগ দেওয়ার পর হেরেছেন জার্মান সুপার কাপের শিরোপার লড়াইয়ে। সব মিলিয়ে ছয়টি ফাইনাল হারার পর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার তৃপ্তি মিলেছে তার।
লিগের হিসাব নিয়ে এলে কেইন কতটা তেতো অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছেন, তা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ২০১০ সালে যাদের হয়ে পেশাদার ফুটবলে তার যাত্রা শুরু হয়েছিল, সেই টটেনহ্যাম ২০১৬-১৭ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগে হয়েছিল রানার্সআপ। অথচ সেবার তিনি জিতেছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার।
স্পার্সে ১৩ বছর কাটিয়ে কেইন বায়ার্নে পাড়ি জমানোর পর মনে হচ্ছিল, এই বুঝি গেরো খুলল! কারণ জার্মানির ঘরোয়া ফুটবলে সাফল্যের বিচারে দলটির ধারেকাছে নেই আর কেউ। কিন্তু বিধি বাম! এর আগে টানা ১১ মৌসুম বুন্ডেসলিগায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া বায়ার্ন গতবার হয় তৃতীয়। চমক দেখিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় লেভারকুসেন।
শুধু তাই নয়, কোনো শিরোপা ছাড়াই গত মৌসুম শেষ করে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনার ক্লাবটি। যদিও আলো ছড়িয়ে কেইন বুন্ডেসলিগায় এককভাবে সর্বোচ্চ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন।
এক বছরের ব্যবধানে এবার ভিন্ন চিত্র। কেইনের হাহাকার ও প্রতীক্ষার পালার অবসান ঘটেছে। তিনি সতীর্থদের সঙ্গে মেতেছেন উল্লাসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদযাপনের বিভিন্ন ভিডিও আর ছবিও পোস্ট করেছেন।
Comments