যেভাবে অনুষ্ঠিত হয় অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল নির্বাচন

ছবি: সংগৃহীত

আগামী ৩ মে অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল নির্বাচন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে সংসদ ভেঙে দিয়েছেন।

৩ মে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র খোলা থাকবে। সাধারণত স্থানীয় স্কুল, গির্জা হল বা কমিউনিটি সেন্টারে ভোটগ্রহণ করা হয়। 

১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী সব অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের জন্য ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক। কেউ ভোট না দিলে অর্থ জরিমানা করা হয়।

প্রতি তিন বছর পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী একটি ফেডারেল নির্বাচন আহ্বান করেন। সাধারণত প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক সময়ে একটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন।

নির্বাচন শনিবার অনুষ্ঠিত হয় এবং ভোটের কমপক্ষে ৩৩ দিন আগে প্রার্থীদের নোটিশ দিতে হয়। প্রধানমন্ত্রী যখন নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন তখন তাকে কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে হয়।

প্রথমত, প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিটিশ রাজার প্রতিনিধি অস্ট্রেলিয়ার গভর্নর-জেনারেলকে বলতে হবে যে তারা একটি নির্বাচন করতে চান।

গভর্নর-জেনারেল তখন বর্তমান সংসদের অবসান ঘটান এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ভেঙে দেন।

এরপর গভর্নর-জেনারেল স্বাধীন নির্বাচনী সংস্থা, অস্ট্রেলিয়ান ইলেক্টোরাল কমিশনকে একটি নির্বাচন পরিচালনা করার নির্দেশ দেন। যার মধ্যে রয়েছে মনোনয়নের তারিখ নির্ধারণ, ভোটার তালিকা এবং অবশ্যই নির্বাচনের দিন।

এরপর জারি করা হয় নির্বাচনের প্রজ্ঞাপন।

সাধারণত বেশিরভাগ অস্ট্রেলিয়ান তাদের ভোট দেওয়ার জন্য নির্বাচনের দিন একটি স্থানীয় ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হন।

কেউ যদি নির্বাচনের দিন ভোট দিতে অক্ষম হন, নির্বাচনের আগে বা ডাক ভোটের মাধ্যমে দুই সপ্তাহের মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

২০২২ সালের শেষ ফেডারেল নির্বাচনে ভোটারদের অর্ধেক এইভাবে তাদের ব্যালট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট প্রাথমিক ভোটকেন্দ্রে এবং ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ ডাকযোগে ভোট দিয়েছিলেন।

নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে থেকে অগ্রিম ভোট দেওয়ার জন্য সারাদেশে প্রায় ৫৫০ প্রাথমিক ভোটকেন্দ্র খোলা হয়েছে। পোস্টাল ভোটিংয়ের সুযোগ রয়েছে তাদের জন্য, যারা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন না।

পোস্টাল ভোটের জন্য ইমেইলের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান ইলেক্টোরাল কমিশনের কাছে আবেদন করলে তারা ব্যালট পেপার মেইলে পাঠিয়ে দেয়।

যেসব অস্ট্রেলিয়ান নির্বাচনের সময় বিদেশে অবস্থান করেন তারা সাধারণত অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাস, হাইকমিশন এবং কনস্যুলেটে গিয়ে ভোট দিতে পারেন।

যারা ভোটদানের জায়গায় ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হতে পারেন না, তাদের জন্য অস্ট্রেলিয়ান ইলেক্টোরাল কমিশন কিছু এলাকায় মোবাইল ভোটিংয়ের সুবিধা রেখেছে।। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে আবাসিক বয়স্ক পরিচর্যা, হাসপাতাল, মানসিক স্বাস্থ্য সুবিধা, কারাগার, গৃহহীনতা পরিষেবা এবং ফার্স্ট নেশনস সম্প্রদায়। ২০২৫ সালের ফেডারেল নির্বাচনের জন্য মোবাইল ভোটের সময়সূচি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

ফেডারেল নির্বাচনে দুটো ব্যালট থাকে, একটি প্রতিনিধি পরিষদের জন্য এবং অন্যটি সিনেটের জন্য।

স্থানীয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে দলীয় কর্মীদের তাদের নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে প্রচার করতে দেখা যায়।

'কীভাবে ভোট দিতে হবে' সেটা যেমন তারা দেখিয়ে দেন, সেভাবেই তাদের প্রার্থীকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন।

ফেডারেল পার্লামেন্ট দুটি চেম্বার নিয়ে গঠিত। হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং সিনেট।

এবারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ৪৮তম সংসদ নির্বাচন। যার মধ্যে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের ১৫০ সদস্যের পাশাপাশি সিনেটের ৭৪ জনের মধ্যে ৪০ সদস্য রয়েছেন।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
 

Comments

The Daily Star  | English

Chinmoy Das granted HC bail

The bench of Justice Md Atoar Rahman and Justice Md Ali Reza passed the order

11m ago